ইনসাইড বাংলাদেশ

মার্কিন সিদ্ধান্তে আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয়ই সন্তুষ্ট


প্রকাশ: 25/05/2023


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা ছিল তাই হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সবগুলোই তাদের অনুগত থাকুক এবং তাদের কথায় সবকিছুর, রাজনীতির গতি-প্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত হোক- এটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা। গতকাল বাংলাদেশের ব্যাপারে নতুন ভিসানীতি প্রয়োগ করে সেটি অর্জন করতে পেরেছে। দুইটি প্রধান রাজনৈতিক দলই মার্কিন নুতন ভিসানীতিতে খুশি হয়েছে। এটি তাদের পক্ষে বলে তারা মনে করছে এবং দুই পক্ষই এই ভিসানীতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। 

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন এই ভিসানীতির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের যে নাশকতা করেছে- এই নতুন ভিসারনীতির ফলে সেটি ভেস্তে যাবে। এছাড়াও তিনি বলেছেন, আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্কীকার এবং অবস্থানকে যাতে কেউ জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত না করতে পারে তার জন্য মার্কিন সরকারের ভিসানীতি আমাদের প্রচেষ্টাকে সাহায্য করতে পারে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ ভেতরে যাই মনে করুকব না কেন, তারা এটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তাদের প্রতি সমর্থন হিসেবে মনে করছে এবং এই ভিসানীতির ফলে বিএনপির আন্দোলন ঝুঁকিতে পড়বে বলেও আওয়ামী লীগের বিশ্বাস।

অন্যদিকে দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি মনে করছে, এই ভিসানীতি ফলে সরকারের উপর আরেকটি চাপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী নির্বাচনের আগে সরকারকে বিভিন্ন ধরনের চাপ প্রয়োগ করবে। সেই চাপের একটি দৃশ্যমান রূপ হল এই নুতন ভিসানীতি। সরকারকে শেষ পর্যন্ত দাবি মানতেই হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা ছাড়া সরকারের সামনে আর কোন পথ নেই- এমনটিই মনে করছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে সবচেয়ে বাঁধা হলো সরকার এবং সরকারের একটি বিভাগ প্রশাসন। কাজেই আগামী নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয়, তাহলে এই সরকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আসবে এবং এই ভিসানীতির মাধ্যমে সরকারকে একটি সতর্কবার্তা দেওয়া হলো। তিনি এটিও বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার একমাত্র উপায় হল নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন। এই সরকার ছাড়া নির্বাচন হতে পারে না। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি গঠন না হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী, নির্বাচন কমিশনসহ সবার উপরে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসবে বলে তিনি দাবি করেছেন। অন্যদিকে বিএনপির একজন নেতা বলছেন, এর ফলে সরকারের উপর একটি বাড়তি চাপ তৈরি হবে এবং শেষ পর্যন্ত শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পথ সুগম হবে। একটা পর্যায়ে সরকার বাধ্য হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের। 

আর এই ভিসানীতি ঘোষণার পর প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া দেখেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত খুশি। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ভারত বলয়ে ছিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে অনেকটাই ভারত নির্ভর হয়েছিল। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে এসেছে।  আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে গত এক বছর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুস্পষ্টভাবে কথাবার্তা বলছে এবং এক ধরনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।  এই ভিসানীতির মাধ্যমে মার্কিন প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ছাতার নিচে আনলো এবং অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া অন্য কিছু হলে তারা যে কোন কিছুই মেনে নেবে না- এই বার্তাটা পরিষ্কার করল। অর্থাৎ এর ফলে ২০০৮ এর পর থেকে যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মার্কিন হস্তক্ষেপ কমতে শুরু করেছিল- সেটি আর থাকলো না। নতুন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর খবরদারি করার সুযোগ পেলো এই নতুন ভিসানীতির মাধ্যমে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭