লিট ইনসাইড

জন্মজয়ন্তীর শ্রদ্ধাঞ্জলি: মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী লড়াইয়ে নজরুল যুগিয়ে যাবে নিরন্তর প্রেরণা


প্রকাশ: 26/05/2023


Thumbnail

ভারত বিভাগের নামে বাংলা নামের ভূখণ্ডটি খণ্ডিত হয়েছে সেই ১৯৪৭ সালে। এর একাংশ পশ্চিম বঙ্গ পড়েছে ভারতে। পূর্ববঙ্গ পরিণত হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানে। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পূর্ববঙ্গ বাঙালি জাতির স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, হয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৪৭ সালে বাংলা ভাগের ঘটনা ছিল বেদনাদায়ক। যদিও খোলা চোখে এটিকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অনিবার্য ফল হিসেবেই মনে হয়, তবে এর সাথে জড়িয়ে ছিল অর্থনীতিও। বিবেকবান চিন্তাশীল কোনো বাঙালি এ বিভাজনকে মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেনি। অন্নদাশঙ্কর রায় লিখেছিলেন:

‘তেলে রশি ভাঙল বলে,

খুকুর ’পরে রাগ করো,

তোমরা যেসব ধেড়ে খোকা

বাঙলা ভেঙে ভাগ করো!’

নজরুল কে নিয়ে লেখা, কথাবার্তা, বিচার বিশ্লেষণ তথা নজরুল সৃষ্টির ভেতরে যাওয়ার প্রয়াস সাহিত্য নজরুলের আবির্ভাবের পরথেকেই শুরু হয়েছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। এর কারণ এক কথায় নজরুল-সৃষ্টি যেমন কালোত্তীর্ণ, তেমন কালের চাহিদাকে পুরো মাত্রায় ধরতে পেরেছিল। গোপাল হালদার যথার্থই বলেছেন, নজরুল ‘এ লিভিং লিঙ্ক’। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকলেও বেশিরভাগ বাঙালির বাস দুটি আলাদা রাষ্ট্রে-স্বাধীন বাংলাদেশে আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। এই বাঙালিদের মধ্যে যোগাযোগের অনিবার্য ও মজবুত সেতু নজরুল। একই সাথে দুই বাংলার সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে বাঙালির সবচেয়ে বড় হাতিয়ারও তিনি। কাজী নজরুল ইসলামের ভাবনা ছিল সব বাঙালিকে নিয়েই এবং সামগ্রিক। সাম্প্রদায়িকতার দিনে, যুদ্ধের দিনে, দ্বিজাতিতত্ত্বের দিনে নজরুল যেভাবে বাংলার জয়গান করে গেছেন বাংলা সাহিত্যে এর তুলনা বিরল। তাই খণ্ডিত নয়, সমগ্র নজরুলকে নিয়েই আমাদের সামনের দিকে যেতে হবে, আমাদের মঙ্গলের স্বার্থেই।

আবার এই বাঙালিদের মধ্যে অধিকাংশ হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের হলেও, আছে অন্যান্য নানা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষও। এদের সবার মধ্যে সম্প্রীতির যে অনবদ্য বন্ধন, সেটার অনেকটাই রচনা করেছেন নজরুল এবং চেতনার প্রহরী হিসেবে তা সবসময়ই রক্ষা করে যাবে নজরুলের সৃষ্টি সম্ভার।

নজরুল গবেষক বাঁধন সেন গুপ্ত যথার্থই বলেছেন,

‘নজরুলের সারা জীবনটাই অসাম্প্রদায়িক চেতনার উদাহরণ’।

অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদে প্রবলভাবে আস্থাশীল ছিলেন তিনি। আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেছেন,

‘সুন্দরে রধ্যান, তার স্তব গানই আমার উপাসনা, আমার ধর্ম। যেকূলে, যে সমাজে, যে ধর্মে, যে দেশেই জন্মগ্রহণ করি, সে আমার দৈব। আমি তাকে ছাড়িয়ে উঠতে পেরেছি বলেই কবি।’ (প্রতিভাষণ: নজরুল১৯২৯)

এটা বলা যায়, সুনির্দিষ্ট কোনো ধর্ম, দর্শন কিংবা জীবনচর্চাও চর্যায় তিনি স্থির থাকতে পারেন নি ঠিকই ; কিন্তু সকল ধর্মের সার্বজনীন মূল্যের প্রতি ছিল তাঁর প্রগাঢ় আস্থা। আর এই আস্থাই তাঁকে হিন্দু কিংবা মুসলমানের কবি না করে, করেছে বাংলা ও বাঙালির কবি তথা বিশ্বমানবতার কবি। তাই তো মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সংগ্রামে এবং পরমতসহিষ্ণুতা প্রতিষ্ঠাও ধর্মীয় সম্প্রীতি সাধনায় তাঁর কবিতা ও গান বাঙালিকে যুগিয়ে যাবে নিরন্তর প্রেরণা।

ধর্মীয় গণ্ডির সংকীর্ণ সীমানা পেরিয়ে মানুষের জয়গান কবীর, নানক, চণ্ডিদাস, লালনসাঁই, রবীন্দ্রনাথ, রশিদ উদ্দীন, জালাল খাঁ সহ অনেকেই করেছেন। সবার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা রেখে এমন প্রশ্ন তো করাই যায় যে, নজরুলের মতোজীবনে-চিন্তনে-মননে অমন গভীরভাবে কেউ কি আর নাড়া দিতে পেরেছেন? পেরেছেন কি কেউ নজরুলের মতো সাম্প্রদায়িকতার ভেদ বুদ্ধির বিরুদ্ধে এমন করে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করতে?-

‘জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত জালিয়াৎ করছে জুয়া

ছুঁলেই তোর জাত যাবে? জাত ছেলের হাতের নয় তো মোয়া...

জানিস নাকি ধর্ম সেযে বর্ম সম সহনশীল

তাই কি ভাই ভাঙতে পারেছোঁ ওয়া ছুঁয়ির ছোট্ট ঢিল?

যে জাত-ধর্ম ঠুনকো এত

আজনা হয় কাল ভাঙবে সেতো।

যাকনা সেজাত জাহান্নামেরই বেমানুষ নাই পরোয়া।’

কিংবা

‘মেনে শত বাধা টিকটিকি হাঁচি

টিকি দাড়ি নিয়ে আজও বেঁচে আছি

বাঁচিতে বাঁচিতে প্রায় মরিয়াছি  

এবার সব্য সাচী

যাহোক একটা তুলে দাও হাতে একবার মরে বাঁচি।’

নজরুল দ্রুত জনপ্রিয় হয়েছিলেন হিন্দু-মুসলিমে বিভাজিত সে সময়কার ভারতীয় সমাজে। নজরুল বিষয়ে সকল মহলে শুরু হয়েছিল ব্যাপক আলোচনা। তবে আলোচনা শুধু আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বিরুদ্ধাচারণ ও হয়েছে প্রচুর। মুসলিম হওয়ার কারণে হিন্দুদের একটা শ্রেণি নজরুলকে বিজাতি মনে করত। ঠিক একই ভাবে এক শ্রেণির মুসলমান নজরুলকে বিজাতি ঘোষণা করেছিল। নজরুলের ‘আমারকৈফিয়ৎ’ কবিতা পড়লে সহজেই বোঝা যায়, ওই সমাজের মুসলিমদের একটা শ্রেণি নজরুলকে ‘কাফের’ আখ্যা দিতে দ্বিধা করেনি।নজরুল ‘আমার কৈফিয়ৎ’এলি খেছিলেন-

‘মৌ-লোভীযতমৌলবীআর ‘মোল্লারাক’নহাতনেড়ে,

দেব-দেবী নাম মুখে আনে, সবেদাও পাজিটার জাত মেরে!’

বাংলা সাহিত্যে আর কোনো সাহিত্যিক কে নিয়ে এত সমালোচনা-বিরূপ আলোচনা হয়নি কখনও। বিশেষ করে কট্টরপন্থী মুসলমানদের মধ্যে নজরুল সম্পর্কে সবচেয়ে বড় অভিযোগের কারণ ছিল নজরুলের শ্যামাসঙ্গীত। একটা সময়ে পূর্ব বঙ্গের বেতারে ও নজরুলের শ্যামা সঙ্গীত সম্প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল।

এছাড়াও ভারত ভাগ হওয়ার পর পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী নজরুলকে বাংলার প্রথম সফল পাকিস্তানি কবি রূপে চিহ্নিত করার পরিকল্পনা তৈরি করে। পাকিস্তানের স্বপ্নদ্রষ্টা ইকবালের সঙ্গে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্যাপিত হয় ‘ইকবাল-নজরুল দিবস’।

এর পাশাপাশি শুরু হয় নজরুল সাহিত্যের ‘পাকিস্তানি করণের’ কাজ। নজরুল কাব্যের ‘পাকিস্তানি সংস্করণ’ প্রকাশের প্রস্তাবও করা হয়। বলা হয়, প্রয়োজনে বর্জন করতে হবে ‘নজরুল-কাব্যের অবাঞ্ছিত অংশ সমূহ’। ১৯৫০-এর আশ্বিন মাসে মওলানা আতাহার আলি ‘নওবাহার’ পত্রিকায় লিখলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তান সরকারকে অনুরোধ করি নজরুলের যেসব কবিতায়... কুফর কালাম আছে তাহা যেন বাজেয়াপ্ত করিয়া আমাদিগকে ধ্বংসের মুখ থেকে রক্ষা করেন।’ আর তার পরের মাসেই, এক সময়ে কবির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও প্রিয় গোলাম মোস্তাফা ‘নওবাহার’ পত্রিকায় লিখে ফেললেন ‘নজরুল-কাব্যের অবাঞ্ছিত অংশ’ নামে একলেখা। পথও বাতলে দিলেন, ‘নজরুল কাব্যের পাকিস্তান সংস্করণ প্রকাশ করিবার যে প্রস্তাব আমরা করিয়াছি’ সেখানে ‘এখন প্রয়োজন ছাঁটাই করার। কোন পুস্তকে কোন অংশ বর্জনীয়, তাহাই আমাদিগকে বিচার করিতে হইবে।’ স্পষ্টত জানালেন, ‘ইসলাম এবং পাকিস্তানের পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা এই ছাঁটাই করিতেছি-কাব্য বা সাহিত্যের দিক দিয়া নয়।’

এইসব হতে থাকলো সেই নজরুল কেনিয়ে, যিনি লিখেছেন,

গাহি সাম্যের গান-

যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সববাধা-ব্যবধান,

যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রীশ্চান।

গাহি সাম্যের গান!

কে তুমি? পার্সী? জৈন? ইহুদী? সাঁওতাল, ভীল, গারো?

কনফুসিয়াস? চার্বাক-চেলা? বলে’ যাও, বল আরো।...

মিথ্যা শুনিনি ভাই,

এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই।

(‘সাম্যবাদী’, সাম্যবাদী)

কিংবা

মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান।

মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ॥...

এক সে দেশের মাটিতে পাই

কেউ গোরে কেউ শ্মশানে ঠাঁই,

মোরা এক ভাষাতে মাকে ডাকি, এক সুরে গাই গান॥

(সুর-সাকী গ্রন্থের ১৮ সংখ্যক গানে)

উচ্চ কণ্ঠের বীন্দ্রনাথ যেমন ঘোষণা করেছেন মানব ধর্মের কথা, তেমনি অভিন্ন চেতনায় নজরুলের কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে ‘মানুষকে আমি শ্রদ্ধা করি, ভালবাসি।স্রষ্টাকে আমি দেখিনি, কিন্তু মানুষকে আমি দেখেছি। এই ধূলি মাখা, অসহায়, দুঃখী মানুষই একদিন বিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করবে।’ এই মানবতাবাদী চেতনাই কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার কেন্দ্রীয় সুর। সুস্পষ্ট মানববন্দনা সমকালেরসাহিত্য ধারায়ন জরুলকে স্বকীয় মাত্রায় প্রতিষ্ঠা দিয়েছে।

বাঁধনসেন গুপ্ত খুব চমৎকার করে বলেছেন,

‘বিশ্বমানবতার কবি নজরুল এদেশে জন্মেছেন বলে যেমন এপার বাংলার নন, তেমনি সেখানে যে-ভূমিতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি, শুধু সেখানকারও নন। তিনি সমগ্র মানবজাতির আত্মীয়, আপনজন। কোনো সংকীর্ণতার তিনি শিকার ছিলেন না। তাই তাঁর চর্চা ও অনুসন্ধান সর্বত্র ইহওয়া উচিত। ভালোবাসার তালিকায় কম-বেশিরহিসাব-নিকাশ নাইবা রইল! বরং চলুক নিরন্তর ভাব বিনিময় আর কবির বিষয়ে নিত্য নব পারস্পরিক সাফল্য ও জিজ্ঞাসার অন্তহীন ভাবনা বিনিময়। অভিমান বা অভিযোগ সেই ভালোবাসার কাননে নেহায়েতই অনুপ্রবেশকারী মাত্র।’ 

১৯২৯-এর ১৫ ডিসেম্বর মাত্র ৩০ বছর বয়সে নজরুলকে বাংলার সারস্বত সমাজ কলকাতার অ্যালবার্ট হলে এক সংবর্ধনা দেয়। এই বিরল সম্মান রবীন্দ্রনাথ ওই বয়সে তো নয়ই, পরেও পাননি। বিজ্ঞানী প্রফুল্লচন্দ্ররায়ের সভাপতিত্বে এই সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য রাখেন সুভাষ চন্দ্র বসু। অভিনন্দনপত্র পাঠ করেন এস ওয়াজেদ আলী। তাতে বলা হয়,

‘তোমার অসাধারণ প্রতিভার অপূর্ব অবদানে বা ঙালিকে চির ঋণী করিয়াছ তুমি। আজ তাহাদের কৃতজ্ঞতা সিক্ত সশ্রদ্ধ অভিনন্দন গ্রহণ কর।’

সেখানে আরও বলা হয়, ‘বাঙালির ক্ষীণ কণ্ঠে তুমি তেজ দিয়াছ’।

সংবর্ধনা সভায় সুভাষ চন্দ্র বসু বলেন,

‘আমরা যখন যুদ্ধ ক্ষেত্রে যাব তখন সেখানে নজরুলের যুদ্ধের গান গাওয়া হবে, আমরা যখন কারাগারে যাব তখন ও তার গান গাইব।’

তিনি আরও বলেন,

‘বিভিন্ন প্রাদেশিক ভাষায় জাতীয় সংগীত শোনার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। কিন্তু নজরুলের ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’র মতো প্রাণ-মাতানো গান কোথাও শুনেছি বলে মনে হয়না’।

সভাপতির ভাষণে প্রফুল্লচন্দ্র রায় ফরাসি বিপ্লবের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, সে-সময়ের প্রত্যেক মানুষ অতি মানুষে পরিণত হয়েছিল। তিনি মনে করেন,

‘আমার বিশ্বাস, নজরুল ইসলামের কবিতা পাঠে আমাদের ভাবী বংশ ধরেরা এক একটি অতি মানুষে পরিণত হইবে’।

এই সংবর্ধনার উত্তরেন জরুল বলেছিলেন,

‘আমায় অভিনন্দিত আপনারা সেদিনই করেছেন যেদিন আমার লেখা আপনাদের ভালো লেগেছে।’

সেই ভাষণে তিনি আরও বলেছিলেন, নিন্দা ও প্রশংসার পরস্পরবিরোধ ভারসাম্যে তিনি ‘ঠিক’ থেকে গেছেন এবং তাঁকে ‘এতটুকু টলতে হয়নি’। ‘বিংশ শতাব্দীর অসম্ভবের সম্ভাবনার যুগে জন্মগ্রহণ’ করে তিনি তাকে যে সার্থক করতে চেয়েছেন তা একবিংশ শতাব্দীর উত্তর প্রজন্মের জন্য ও অনুসরণযোগ্য। যে-কুল, যে-সমাজ, যে-ধর্মে তিনি জন্মগ্রহণ করে থাকুন, তাকে ছাড়িয়ে ওঠার মধ্যেই তাঁর কবি সত্তা ও পরিচয়ের সার্থকতা। শুধু সুন্দরকেই যে তিনি দেখেছেন তা নয়, ক্ষুধা দীর্ণ মূর্তিকে ও তিনি দেখেছেন। তাই আজও যেমন, ভাবী কালের দিনগুলোতেও নজরুল জীবন্ত সংযোগ হয়ে থেকে যাবে।

অন্নদাশঙ্কও রায় ১৯৪৯-এ লিখেছিলেন, ‘ভুল হয়েগেছে বিল কুল/ আর সবকিছু ভাগ হয়ে গেছে ভাগ হয়নিকো নজরুল’, অন্য অনুষঙ্গে গভীর বেদনায় সেই তিনি ইছিয়াত্তরসা লেলিখলেন, ‘কেউ জানল না ইতিহাসের ফের/ভুল হয়ে গেছে বিলকুল/এতকাল পরে ধর্মের নামে/ভাগ হয়ে গেল নজরুল।’ সেই ভাগা ভাগির প্রক্রিয়া থেকে এখনও মুক্ত নয় নজরুল। এর কারণ স্পষ্ট। নজরুল যদি তাঁর পুরো স্বরূপে সাধারণ্যে গ্রহণীয় হয়ে যান, তাহলে রাজনীতি, ধর্ম, সংস্কৃতি ইত্যাদি নিয়ে যারা ‘ব্যবসা’ জাঁকিয়ে বসেছেন এবং বেশ ‘করে’ই খাচ্ছেন, তারা এটি আর চালিয়ে যেতে পারবেন না। তাই নজরুলের সামগ্রিক সৃষ্টিকে সামনে নিয়ে আসতে হবে নজরুলকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থেই এবং অখণ্ড নজরুলকে সাধারণ্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আরও বেশি করে কাজ করার মধ্য দিয়েই বানচাল করে দিতে হবে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তিরবি-নজরুলিকরণের সমস্ত প্রক্রিয়া। 

লেখক: স্বপন পাল, প্রাবন্ধিক ও গবেষক



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭