ইনসাইড বাংলাদেশ

মার্কিন ভিসানীতি: প্রশাসনে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে


প্রকাশ: 30/05/2023


Thumbnail

মার্কিন ভিসানীতির প্রভাব প্রশাসনের পড়তে শুরু করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নতুন ভিসানীতিতে বলেছে, যে সমস্ত ব্যক্তি নির্বাচনে বাধা দেবে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে এবং সুষ্ঠু ভোটগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইবে তাদেরকে মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যাক্টের ২১২ ধারা অনুযায়ী ভিসা দেয়া হবে না। শুধু তাই নয়, তাদের স্ত্রী এবং পুত্রদেরও ভিসা প্রদানের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই এই ভিসানীতি ঘোষণা করেছে। গত ২৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়। যদিও এ ভিসানীতি গৃহীত হয়েছে ৩ মে। ওই সময়ই তারা সরকারকে এটা জানিয়েছে বলেও নতুন ভিসানীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। মার্কিন এই ভিসা নীতির প্রভাব কী হবে তা নিয়ে বিভিন্ন মহল আলোচনা করছে। তবে সকলেই একটি ব্যাপারে একমত। প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা এই ভিসানীতির ফলে প্রভাবিত হতে পারেন এবং তারা একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে চলে যেতে পারেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা সরকারকে জেতানো বা নির্বাচনকে পক্ষপাত করার মতো কোনো কার্যক্রম করবেন না বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। এটি নতুন ভিসানীতির একটি অন্যতম লক্ষ্য। এর ফলে নির্বাচনের আগে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ অবস্থানে নিয়ে আসার একটি চেষ্টা করা হয়েছে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। আর ইতিমধ্যেই এর প্রভাবে প্রশাসনের উপর পরতে শুরু করেছে।

প্রশাসনে কিছুদিন আগেও যারা অতি আওয়ামী লীগার ছিলেন, আওয়ামী লীগকে কিভাবে নির্বাচনে জয়ী করা যায়, কিভাবে আওয়ামী লীগ সহজেই চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে যারা নানারকম পরামর্শ দিতেন এবং মতামত দিতেন, তারা এখন অনেকটাই চুপচাপ হয়ে গেছেন। প্রশাসনের মধ্যে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত তাদের মধ্যে এক ধরনের নিরপেক্ষতার আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে সর্বোচ্চ প্রশাসনে যারা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রভাবশালী হয়ে উঠেছেন, তারা এখন খোল পাল্টাতে শুরু করছেন। তারা বরং নিজেদের নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে বর্তমানে যারা সচিব রয়েছে তাদের অর্ধেকেরই পুত্র বা নিকটাত্মীয়রা বিদেশে লেখাপড়া করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডায় এদের নানারকম সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। আর এই কারনেই নতুন ভিসানীতি তাদেরকে আতঙ্কিত করেছে। আগে যারা নিজেদেরকে আওয়ামী লীগ হিসেবে প্রমাণের জন্য ব্যস্ত থাকতেন, তারা এখন নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে চাইছেন। সরকারের অনেক স্পর্শকাতর বিষয় তারা এড়িয়ে যাচ্ছেন এমন খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

তবে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে নতুন ভিসানীতির প্রভাব দেখা যায়নি। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও অনেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তবে তাদের ভূমিকায় এখন পর্যন্ত নতুন ভিসারনীতির প্রভাব পড়েনি। তবে নির্বাচনের সময় এই ভিসানীতির ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ কেউ যে নিরপেক্ষ হয়ে যাবেন তা সহজেই ধারণা করা যায়। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে উদ্দেশ্যে এই ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছিল সেই উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও সফল হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭