ইনসাইড পলিটিক্স

জামায়াতের নতুন তৎপরতা: ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে সরকার


প্রকাশ: 31/05/2023


Thumbnail

জামায়াত নতুন করে তৎপর হয়েছে। সম্প্রতি তারা ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করার জন্য পুলিশের অনুমতি নিতে চেয়েছিল। সেখান থেকে কয়েকজন জামায়াত নেতাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, জামায়াত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নেই। কাজেই তাদের সমাবেশ করার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে। পুলিশের এই বক্তব্য হল সমাবেশের অনুমতি নিতে যারা এসেছিল তারা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। কাজেই পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। অন্যদিকে সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে জামায়াত চুপচাপ বসে নেই। আগামী চারটি সিটি করপোরেশনে জামায়াতের প্রায় ৪০ জন নেতা প্রার্থী হয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য পাওয়া গেছে।

নির্বাচনের আগে জামায়াত রাজনীতিতে আসছে এটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। তবে সরকার এটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে এবং কোনো ভাবে জামায়াতকে প্রশ্রয় না দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছে সরকার। একাধিক সূত্রগুলো বলছে, হঠাৎ করে রাজনীতির মাঠে জামায়াতের উপস্থিতি অন্য কোনো ইঙ্গিত বহন করছে। বিএনপি যখন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে, একদফা আন্দোলন করবে বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছে ঠিক সেইসময় জামায়াতের এই কর্মসূচি রহস্যজনক। প্রকাশ্যে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক না থাকলেও গোপনে গোপনে বিএনপি-জামায়াতের যোগসাজশ রয়েছে। ঢাকাকে অস্থিতিশীল করার জন্যই জামায়াত এখন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বলেই মনে করছে সরকারের একাধিক সংস্থা।

উল্লেখ্য যে, জামায়াতের একটি সুশৃংখল ক্যাডার বাহিনী রয়েছে এবং সশস্ত্র সংঘাতের ক্ষেত্রে বিএনপির চেয়েও জামায়াত এগিয়ে রয়েছে। তার প্রমাণ ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর। এই সময়ে জামায়াত ঢাকা শহরের তান্ডব করেছিল এবং আওয়ামী লীগ কার্যালয় আক্রমণ করে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই জামায়াতের সেই চেষ্ট শেষ পর্যন্ত ভণ্ডুল হয়ে যায় এবং জামায়াতকে প্রতিহত করেছিল আওয়ামী লীগ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর জামায়াতের অবস্থা একটু কোণঠাসা হয়ে পড়লেও এখন তারা নতুন করে সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করছে। 

২০১৮ নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট হয় এবং বিএনপি জামায়াতকে ২০টি আসন ছেড়ে দেয়। জামায়াতের নেতারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে। কিন্তু বিএনপির এই সিদ্ধান্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে তী্রব সমালোচিত হয়। বিশেষ করে এর মাধ্যমে বিএনপি এখনও মৌলবাদের শৃঙ্খলে বন্দি এমন অভিযোগ করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের সাথে বিএনপির প্রকাশ্য সখ্যতা সমালোচনা করে। এরকম পরিস্থিতিতে ওই নির্বাচনের পর বিএনপি আস্তে আস্তে প্রকাশ্য জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করতে থাকে। বিশেষ করে ২০ দলকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। এখন কার্যত ২০ দল নেই। তবে ২০ দলকে নিষ্ক্রিয় করলেও জামায়াতের সাথে বিএনপির গোপন সম্পর্ক আছে। এখন সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের আন্দোলন এবং নাশকতা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আর সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই জামায়াত মাঠে নেমেছে বলে কেউ কেউ মনে করে। তবে অন্য একটি মহলের ধারণা যে জামায়াত আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সংঘটিত হচ্ছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী দেওয়া তার একটি বড় প্রমাণ। পর্যবেক্ষক মহল এটাও মনে করছেন যে, জামায়াত আসলে একটি সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দল। তারা যেদিকে সুবিধা মনে করত অস্তিত্বের প্রয়োজনে সে দিকে মোড় নেবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭