ইনসাইড বাংলাদেশ

কাদের ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ যুক্তরাষ্ট্র: সরকার খুঁজছে


প্রকাশ: 01/06/2023


Thumbnail

মার্কিন নতুন ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কাজে যারা বাধা দিবে- অবাধ, সুষ্ঠু,নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে যারা অন্তরায় সৃষ্টি করবে, ভোট কারচুপি করবে কিংবা ভোট জালিয়াতি করবে- তাদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দিবে না। শুধু তাদেরকেই নয়, তাদের সন্তান এবং পরিবারের সদস্যরাও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। এই ভিসা নীতি গত ২৪ মে ঘোষণার পর- বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ভিসা নীতির ফলে প্রশাসনের এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যারা উচ্চ পদে আছেন- তারা শঙ্কিত হবেন এবং তারা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলকেই জয়ী করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। তাদের ব্যক্তিগত সুবিধা এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার স্বার্থে তারা একটি নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করবেন। আর এ কারণেই নতুন ভিসা নীতির ফলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ তৈরি হবে বলে অনেকে মনে করছেন। 

তবে আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রকাশ্যে, উভয় দলই এই ভিসা নীতিকে সমর্থন জানিয়েছে এবং উভয় দলই এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য রাখছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভিসা নীতির পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের ঘুম হারাম হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এই ভিসা নীতিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা দিলে তার ভিসা রহিত করা হবে। কাজেই এর ফলে বিএনপির আন্দোলনের আর কোনো সুযোগ নেই, তাদেরকে নির্বাচনে আসতেই হবে। অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই ভিসা নীতি সরকারে জন্য লজ্জাস্কর। এই ভিসা নীতির ফলে সরকারের সামনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।

এরকম পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। সরকার এই ভিসা নীতির ব্যাপারে প্রকাশ্যে যাই বলুক না কেন, বাস্তবে এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করছে এবং এর প্রতিক্রিয়া কি ধরনের হতে পারে - সেটিও বোঝার চেষ্টা করছে। এর আগেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তিনটি দেশে একই রকম ভিসা নীতি জারি করেছিল। নাইজেরিয়া, সোমালিয়া এবং উগান্ডায় এই ভিসা নীতি জারি করেছিল। যদিও সেই ভিসা নীতি খুব একটা কার্যকর হয়নি। এখন বাংলাদেশে সেটি হবে কি না, সেটি যেমন দেখার বিষয়, তেমনি সরকারে পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এই ভিসা নীতিতে কারা প্রভাবিত হতে পারে। কাদের ঘর-বাড়ি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাদের সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করে।

এই ধরনের ব্যক্তিদেরকে নির্বাচন কার্যক্রম এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হবে বলে জানা গেছে। যেমন বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ সচিব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। নির্বাচনে তিনি প্রশাসনকে নেতৃত্ব দিবেন। মন্ত্রী পরিষদ সচিবের দুই সন্তানের কেউই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকে না বা এই মন্ত্রী পরিষদ সচিবের যুক্তরাষ্ট্রে কোনো ঘর-বাড়িও নেই। একইভাবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব তোফাজ্জাল হোসেন মিয়ারও কেউ যুক্তরাষ্ট্রে থাকে না এবং তারও এ ধরনের কোনো বিষয়-সম্পত্তি যুক্তরাষ্ট্রে নেই বলে জানা গেছে। বর্তমানে যিনি পুলিশ প্রধান আছেন, ইতিমধ্যে তিনি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন। কাজেই নতুন ভিসানীতি তার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। একইভাবে বর্তমানে র‌্যাবের যিনি প্রধান, তিনিও এই মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় আছেন। এই ভিসা নীতির ফলে তিনিও আক্রান্ত হবেন না।

যাদের সন্তান-সন্ততিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করে বা যাদের সেখানে ঘর-বাড়ি রয়েছে- এমন প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের তালিকা সরকার তৈরি করছে এবং তাদেরকে তাদের স্বার্থের জন্যই নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরকার দূরে রাখতে চায়। এরকম একটি তালিকা শীঘ্রই সম্পন্ন হবে বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭