ইনসাইড পলিটিক্স

খুলনায় নৌকা, বরিশালে হাতপাখা এগিয়ে?


প্রকাশ: 10/06/2023


Thumbnail

আজ মধ্যরাত থেকে দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের প্রচারাভিযান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সোমবার এই দুই সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্যতম বিরোধী দল বিএনপি দুটি নির্বাচনই বর্জন করেছে। কিন্তু বিএনপির বর্জন সত্ত্বেও খুলনা এবং বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহ ও উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে নানারকম আলাপ-আলোচনা দেখা যাচ্ছে। 

জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন গুলো নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার চেয়ে অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায়। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করতে চায় যে, দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। আর এ কারণেই নির্বাচনের আগে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে, যে কোন মূল্যে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হতে হবে। এই কারণেই এই নির্বাচন গুলো অন্যরকম একটি আবহ সৃষ্টি করেছে। জনগণের মধ্যে আগের চেয়ে বেশি উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে কি ধরনের ফলাফল হবে এ নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলাপ আলোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এই দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেই জয়ী হোক না কেন আসলে জয়ী হবে গণতন্ত্র। 

বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বেশ ভালো ব্যবধানে এগিয়ে আছে। জনমত তার পক্ষে। বিশেষ করে একজন সৎ ত্যাগী রাজনীতিবিদ হিসেবে জনগণের মধ্যে তার একটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। জনগণ তাকে শ্রদ্ধা করেন। পাশাপাশি তিনি নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে পেরেছেন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন, যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান। এ কারণে এবার নির্বাচনে অন্যান্য প্রার্থী তুলনায় তিনি অনেক এগিয়ে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল যে, খুলনায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নেই বললেই চলে। আর এটি আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে ইতিবাচক হিসেবে কাজ করবে। কোন রকম বড় ধরনের ঘটনা না ঘটলে এই সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের বিজয় মোটামুটি নিশ্চিত বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বিএনপি যদিও এই নির্বাচনে ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে। তারা নৌকা বিরোধী কোনো প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার একটি নীরব প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু সেটি খুলনার ক্ষেত্রে খুব একটা লাভজনক হবে বলে মনে করেন না বিশ্লেষকরা। 

অন্যদিকে বিপরীত অবস্থা দেখা যাচ্ছে বরিশালে। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের অনেক নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে। বর্তমান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহকে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। মনোনয়নে আওয়ামী লীগ চমক দেখিয়েছে। সাদিক আব্দুল্লাহর চাচা খোকন সেরনিয়াবাতকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। কিন্তু মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই সেখানে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি খোকন সেরনিয়াবাত। যদিও আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারা বরিশালে পড়ে আছেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাহাউদ্দিন নাছিমের মতো নেতারা বরিশাল নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। কিন্তু তাদের সক্রিয়তা থাকার পরও বরিশালে গাজীপুরের মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেকে সংশয় প্রকাশ করছে। 

ইসলামী আন্দোলনের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি বরিশাল সিটি করপোরেশনে হাতপাখা নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। কাজেই এই নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে অনেকে মনে করছেন। তাছাড়া আওয়ামী লীগের বিভক্তি এবং গাজীপুরের মতো নীরব ভোট বরিশালে অন্যরকম ফলাফল বয়ে আনতে পারে বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। সবকিছু মিলিয়ে বরিশালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এখন পর্যন্ত ব্যাকফুটে রয়েছেন। দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত তিনি কোনো চমক দেখাতে পারেন কিনা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭