প্রকাশ: 11/06/2023
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে ১১ জুন একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ সময় শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে, চক্রান্তের জাল ছিন্ন করে মুক্তি পেয়েছিলেন। তাঁর এই মুক্তি পাওয়ার প্রক্রিয়াতেই বাংলাদেশে আবার ফিরে এসেছিল গণতন্ত্র। সেই লড়াইয়ে শেখ হাসিনা একা ছিলেন না। ছিল তাঁর কিছু বিশ্বস্ত সহযাত্রী। যারা স্বার্থহীন ভাবে শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য কাজ করেছিলেন। ২০০৭ সালের ১৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তাঁর মুক্তির পর্যন্ত সময় যে সমস্ত ব্যক্তিরা শেখ হাসিনার জন্য লড়াই করেছিলেন নানাভাবে, নানা ক্ষেত্রে তাদের কেউই এখন শেখ হাসিনার পাশে নাই। তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে শেখ হাসিনার পাশে কারা?
আসুন,
আগে দেখে নিই সে
সময়ে কারা শেখ হাসিনার
মুক্তির জন্য তাকে সহযোগিতা
করেছিল। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল।
প্রয়াত
জিল্লুর রহমান: প্রয়াত জিল্লুর রহমান শেখ হাসিনা গ্রেফতারের
পর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। সেই সভাপতির দায়িত্ব
গ্রহণ করে তিনি একদিকে
যেমন আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছিলেন তেমনি শেখ হাসিনার মুক্তির
লড়াইয়ে এগিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে দলকে সামনের দিকে
এগিয়ে নিয়ে ছিলেন। তার ভূমিকা এক-এগোরোর সময় ছিল অনস্বীকার্য।
রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় তিনি
পরলোকে চলে গেছেন।
প্রয়াত
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম: শেখ হাসিনার অবর্তমানে
দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সেই সময় মৃদুভাষী
এই সাহসী মানুষটি দৃঢ়চিত্তে দাঁড়িয়ে ছিলেন আওয়ামী লীগের সুবিধাবাদী সংস্কারপন্থীদের বিরুদ্ধে। তার দৃঢ়তার কারণেই
সেদিন সংস্কারপন্থীরা আওয়ামী লীগকে ভাঙতে পারেনি। আওয়ামী লীগে বড় কোনো
বিপর্যয় ঘটেনি। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও এখন আর আমাদের
মাঝে নেই।
বেগম
মতিয়া চৌধুরী: আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার
পক্ষে সবচেয়ে সাহসী দৃঢ় অবস্থান যারা
রেখেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বেগম মতিয়া চৌধুরী।
বেগম মতিয়া চৌধুরী সংস্কারপন্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সোচ্চার
ছিলেন। নেতাকর্মীরা তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
এখন তিনি সংসদের উপনেতা
হলেও শেখ হাসিনার চারপাশে
যারা আছেন তাদের মাঝে
তিনি নেই। দু'বার
মন্ত্রী হিসেবে সাফল্যের পর এবার তিনি
মন্ত্রিসভায় অর্ন্তভূক্ত হননি। সংসদ উপনেতা হিসেবে
সম্মানিত হয়েছেন বটে কিন্তু সরকারের
নীতিনির্ধারক তিনি নন এটা
নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
সৈয়দ
মোদাচ্ছের আলী: সেই সময়
সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী ছিলেন শেখ
হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক। তিনি প্রথম শেখ
হাসিনার মুক্তির জন্য, তাঁর উন্নত চিকিৎসার
জন্য বিদেশে নেয়ার দাবি তুলেছিলেন। একাই
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর নেতৃত্বে একটি
মেডিকেল টিমের কারণেই শেষ পর্যন্ত শেখ
হাসিনাকে মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সৈয়দ
মোদাচ্ছের আলী এখন কমিউনিটি
ক্লিনিক সহায়তা ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান এবং
বিএমআরসি'র সভাপতি। তবে
তিনি সরকারের নিউক্লিয়াসের মধ্যে নেই, নন সরকারের
নীতিনির্ধারক। শেখ হাসিনার পাশেও
তার জায়গা নেই।
ডা.
এবিএম আব্দুল্লাহ: শেখ হাসিনার চিকিৎসক
টিমে আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।
ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ এখন শেখ হাসিনার
ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও তিনি
সরকারের নীতিনির্ধারক নন।
এইচ
টি ইমাম: এইচ টি ইমাম
সেই সময় ছিলেন নেপথ্যের
সমঝোতাকারী। বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে
আনার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার কোনো
বিকল্প নেই এই তত্ত্ব
দিয়ে তিনি তৎকালীন সরকারের
সাথে গোপন সমঝোতা করেছিলেন।
আজ তিনিও নেই।
তাহলে
শেখ হাসিনার পাশে আছে কারা?
সে সময় যারা লড়াকু
যোদ্ধা ছিলেন, যারা শেখ হাসিনার
মুক্তির জন্য, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের কেউ চলে গেছেন
অথবা কেউ অপাংক্তেয় হয়ে
আছেন। এখন যারা শেখ
হাসিনার চারপাশে আছেন দুঃসময় কি
তারা শেখ হাসিনার পাশে
দাঁড়াতে পারবেন?
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭