ইনসাইড থট

রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ভাতা বৃদ্ধির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি


প্রকাশ: 12/06/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের তরুণ ডাক্তারদের মত দুর্দশা পৃথিবীর খুব কম দেশেই দেখেছি। বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী করার সময় হাসপাতালে প্রশিক্ষণরত ডাক্তারদের মানসম্মত বেতন দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে তারা কঠোর পরিশ্রম করে। এই সময়ে তারা বাস্তবতার নিরিখে স্বচ্ছলভাবে চলবার মত মাসিক বেতন পান। ডিগ্রী অর্জনের সময় বউ-বাচ্চা নিয়ে তারা কিভাবে সংসার চালাবেন, এই চিন্তায় অস্থির থাকেন না। এমনকি প্রতিবেশ দেশ ভারত কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতাপূর্ণ পাকিস্তানেই এইসব প্রশিক্ষনার্থী ডাক্তাররা একটা সম্মানজনক ভাতা পান। ব্যতিক্রম কেবল বাংলাদেশে। সরকারী ডাক্তাররা প্রশিক্ষণকালীন তাদের প্রাপ্য বেতন পান। বেসরকারী চিকিৎসকরা আমাদের সময়ে কোনরকমের পারিশ্রমিক বা ভাতা পেতেন না। তবে গত কয়েকবছর ধরে এইসব রেসিডেন্টদের বিশ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। তবে মাসিক বিশ হাজার টাকার এই ভাতা প্রদান প্রায়শই অনিয়মিত হয়ে পড়ছে। এই মাসে ভাতা পেলেন তো পরের মাসে নাই। অনিয়মের কারণ জানতে গেলে শুনতে হয়, সরকারের কাছ থেকে সময়মত নাকি বরাদ্দ আসে নি। আবার সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে গেলে তারা প্রমাণসহ দেখিয়ে দেন, কত তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বরাদ্দকৃত অর্থ পাঠানো হয়েছে। মাঝখান থেকে মাইনকার চিপায় পড়েন আমাদের তরুণ রেসিডেন্ট ডাক্তাররা। চিরকুট ব্যান্ডের কানামাছি গানের মত তখন মনে হয়, রেসিডেন্ট ভাতা সত্য, রেসিডেন্ট ভাতা মিথ্যা! উল্লেখ্য, প্রশিক্ষণকালীন এই সময়ে ডাক্তাররা কোন রকমের চেম্বার প্রাক্টিস বা বাইরে কোন ক্লিনিকে কাজ করতে পারেন না। সুতরাং, সংসার চালানো এবং ন্যূনতম বেঁচে থাকার ভাতার এই সামান্য কটি টাকা নিয়মিত পাওয়াটা জরুরি। কিন্তু কে শোনে কার কথা? 

সম্প্রতি দেশের তরুণ রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা তাদের ভাতার পরিমান বৃদ্ধি এবং নিয়মিত প্রাপ্তি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। বাংলাদেশের এই প্রচণ্ড গরমকে উপেক্ষা করে জীবনের প্রয়োজনে তারা আজ রাজপথে নেমেছে। কিন্তু তাদের এই ন্যায্য দাবিটি বোধ হয় আমাদের প্রিয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা চিকিৎসক নেতৃবৃন্দের কাছে গুরুত্ব সহকারে পৌছাতে পারছে না। তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন কোর্সে চান্স পাওয়া এইসব মেধাবী চিকিৎসকদের প্রতি কেন সরকার এবং রাষ্ট্রের এই উপেক্ষা? নেতারা না হয় সর্দি-কাশি হলেই সিঙ্গাপুর না হয় ব্যাংকক উড়ে যেতে পারেন। কিন্তু দেশের আপামর জনসাধারণের চিকিৎসার জন্য তো এইসব চিকিৎসকরাই আমাদের আজ ও আগামীর ভরসা। অথচ তাদের প্রতি রীতিমত অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, যা কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। 

বাংলাদেশে যখন একের পরে এক দরজা বন্ধ হয়ে যায়, তখনো আশার বাতিঘর হয়ে জ্বলজ্বল করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্যক্তিগতভাবে আমি যে কোন প্রতিকূলতায় শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখতেই অভ্যস্থ। আমি বিশ্বাস করি, তাঁর কাছে যে কোন ন্যায়সঙ্গত দাবি উপস্থাপন করলে তিনি অবশ্যই সেটার একটা যৌক্তিক বিহিত করেন। এবারো তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে রেসিডেন্ট ডাক্তারদের মাসিক ভাতা পঞ্চাশ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হোক এবং তা নিয়মিত প্রদান করা হোক। তিনি চাইলে তরুণ রেসিডেন্ট ডাক্তারদের ন্যায়সঙ্গত এই দাবি দ্রুতই বাস্তবায়িত হবে। 

লেখক: চেয়ারম্যান, ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস এ্যান্ড রেসপন্সিবিলিটিজ (এফডিএসআর)



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭