ইনসাইড বাংলাদেশ

বাড়ছে আন্তর্জাতিক চাপ: বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলো কি করছে?


প্রকাশ: 13/06/2023


Thumbnail

নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততই বাংলাদেশকে ঘিরে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন লবিস্ট গ্রুপ তৎপর হয়েছে। বিএনপি জামায়াত এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির সন্তানেরা বিশ্বে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারের জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করছে। এই বিপুল অর্থ ব্যয় করে কেবল তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে না, বিভিন্ন দেশে প্রভাবশালীদের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অসত্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের ব্যাপারে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করছে। যার প্রভাব এবং বাস্তব প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির পর এখন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চাপ আরও আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে। গত ১২ জুন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ৬ জন এমপি বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রবর্তন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি লিখেছেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধানের কাছে লেখা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বেড়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে এই চিঠিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ না হলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আরোপ, জিপিএস সুবিধা বাতিলসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। ঠিক একই সময় বিতর্কিত মার্কিন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশে প্রবেশাধিকারের আগে সেই সমস্ত কর্মকর্তারা কতটুকু মানবাধিকার প্রতিপালন করেছেন বা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন কিনা তা যাচাই বাছাই করে দেখার জন্য অনুরোধ করছেন। এরকম এক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বলেই কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এ আন্তর্জাতিক চাপ সামাল দিয়ে সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে করা হবে সেটি সরকারের সামনে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এই আন্তর্জাতিক চাপ গুলো যখন হচ্ছে তখন বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ মিশনগুলোর দায়িত্ব পালন এবং সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

এর আগে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল সেই সময়ে একজন বিতর্কিত ব্যক্তি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত এর দায়িত্ব পালন করছিলেন। এইসব ঘটনার পর তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নতুন একজনকে ওয়াশিংটনে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি যাওয়ার পরও মার্কিন কমেনি। বরং নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে একটি আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কদিন আগেও বলেছিল যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো করে ভিসা নীতি গ্রহণ করবে না। কিন্তু সেখানকার ছয়জন এমপির বিবৃতি এখন নতুন মেরুকরণ তৈরি করল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি যে লবিং করে করা হয়েছে তা নিয়ে কূটনীতিকদের কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু প্রশ্ন হল যখন এই প্রক্রিয়া গুলো করা হল তখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কূটনীতিকরা কি করেছেন? তারা এর বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন দেশে দূতাবাসগুলোকে এখন সজাগ থাকার জন্য এবং বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার জন্য বারবার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তথাকথিত পেশাদারিত্বের নামে তারা বাঁচিয়ে চলার নীতি গ্রহণ করেছে। ফলে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ একটি আন্তর্জাতিক প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭