ইনসাইড বাংলাদেশ

বদলে গেছে বাংলাদেশ: জিডিপি বেড়েছে ১২ গুণ, রিজার্ভ ৩৩ গুণ


প্রকাশ: 15/06/2023


Thumbnail

দেশের বৃহত্তম ও সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদের পঞ্চম বছর পদার্পন করেছে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। দীর্ঘ ও টানা ক্ষমতায় থাকা এই ঐতিহ্যবাহী দলটি বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। 

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৪ বছরে দলটি বাংলাদেশকে একটি দূর্বল অর্থনৈতিক দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পদার্পন করিয়েছে। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টানা ৩ মেয়াদের সরকার ও জনগণের জন্য তার দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ ও কঠোর পরিশ্রম বাংলাদেশের জন্য এ ধরনের সাফল্য এনে দিয়েছে। 

২০০৬ সালের বিএনপি-জামায়াত আমলের সঙ্গে ২০২৩ এর বাংলাদেশে তুলনামূলক পার্থক্য তথ্য তুলে ধরা হলো:- 

কৃষি প্রধান বাংলাদেশের জিডিপির আকার ২০০৬ সালেও ৪৭.৭ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তির দেশে উন্নীত হয়েছে। অর্থনীতির গতিময়তায় দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডি ছাড়িয়ে এখন সারাবিশ্বে তার পরিচিতি। ২০২৩ সালে এসে বাংলাদেশের জিডিপি’র আকার প্রায় ১২ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৫৭৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। একটি দরিদ্র সাহায্যপ্রার্থী দেশ থেকে বাংলাদেশ এখন আঞ্চলিক প্রভাবশালী দেশে পরিণত হয়েছে। 

শুধু জিডিপি নয়, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও গত ১৪ বছরে ৩৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৬ সালে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১ বিলিয়ন ডলারেরও নিচে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ ৩০.৮৩ বিলয়ন ডলার। যদিও বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিহাসে রিজার্ভের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে। সে সময় রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৫ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে অর্থনৈতিক মন্দা এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পুরো বিশ্ব একটি অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়লেও আমদানি ব্যয় না কমায় বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের পরিমাণ বাড়ছে। যে কারণে রিজার্ভ অনেকটা নিচে নেমে এসেছে। কিন্তু সেই অবস্থা থেকেও এখন আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ। 

অর্থনীতির অন্যান্য সূচকেও বাংলাদেশ অসামান্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বিএনপির শাসনামল ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.৪০ শতাংশ। ২০২৩ সালে আওয়ামীলীগ সরকারের প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৭.২৫ শতাংশ। ২০০৬ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার, বিগত সময়ে ৫ গুণ বেড়ে ২০২৩ সালে মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ২৮২৪ মার্কিন ডলার। ২০০৬ সালে দেশের সার্বিক বাজেট ছিল ৭.০১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে তা ১২ গুণ বেড়ে হয় ৮৭.৫৬ বিলয়ন ডলার। ২০০৬ সালে রপ্তানি আয় ছিল ১০.০৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালে ৫ গুণ বেড়ে তা ৫২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। রেমিট্যান্স ছিল ৪.৮ বিলিয়ন ডলার, ৫ গুণ বেড়ে তা ২৪.০৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। 

এছাড়া, ২০০৬ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা কমে হয়েছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। দেশের মানুষের গড় আয়ু ২০০৬ সালে ছিল ৫৯ বছর। ২০২৩ সালে গড় আয়ু বেড়ে ৭২ দশমিক ৮ বছর হয়েছে। শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ছিল ৮৪ জন, ২০২৩ সালে তা ৪ গুণ কমে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। স্বাক্ষরতার হার ছিল ৪৫ শতাংশ। ২০২৩ সালে বেড়ে ৭৫.৬ শতাংশ হয়েছে স্বাক্ষরতার হার। প্রাথমিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ ওই সময়ে ছিল ৫৪ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে ৯৮.২৫ শতাংশ হয়েছে। ২০০৬ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৬৫ হাজার ৬শে’ ৭২ টি। ২০২৩ সালে এসে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮শ’ ৯১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। 

কৃষিতেও গত ১৪ বছরে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে সামগ্রিক কৃষি উৎপাদন হয়েছিল ২ কোটি ৬১ লাখ টন। ২০২৩ সালে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৯ কোটি ৭ লক্ষ ৯০ হাজার টন। দানাদার শস্যের উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন, বর্তমানে তা ৪ কোটি ৯ লক্ষ ২০ হাজার টন। ২০০৬ সালে গবাদী পশুর সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ২৩ লাখ ০১ হাজার, ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭ কোটি ৯ লক্ষ ৮০ হাজার। 

২০০৬ সালে মোট জনগোষ্ঠীর ০.২৩ শতাংশ ছিল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ২০২৩ সালে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে ৭৩.৫৫ শতাংশ মানুষ। মোবাইল ব্যবহারকারী ছিল ১৯ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৯০ লাখ। ২০২৩ সালে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়ে হয়েছে ১৮৩.৫৩ মিলিয়ন বা ১৮ কোটি ৩৫ লক্ষ ৩০ হাজার।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭