প্রকাশ: 17/06/2023
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে সাংবিধানিক উপায়ে। অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবেই নির্বাচন হবে- এ ধরনের অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগ আর এক চুলও সরবে না এবং নির্বাচন নিয়ে আর কোনো দূতাবাস বা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ কোনো বৈঠক করবে না। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। মার্কিন দূতাবাস নির্বাচন নিয়ে ঘটা করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে- এই ধরনের বৈঠকে আওয়ামী লীগ আর যাবে না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছেন, মার্কিন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত কিংবা অন্য কোনো কর্মকর্তারা যদি দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে বা সরকারি বা কূটনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাদের সাথে কথা বলবেন। তবে তারাও মার্কিন দূতাবাসের নির্বাচন নিয়ে কোনো পরামর্শ বা উপদেশ ইত্যাদি শুনবেন না। পাশাপাশি মন্ত্রী নন, এমন কোনো আওয়ামীলীগের নেতারা মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে রাজনৈতিক শলাপরামর্শ বা আলাপ আলোচনায় অংশ নেবে না- এই বার্তা আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে আলোচনার কিছু নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়। বাংলাদেশের নির্বাচন বাংলাদেশের মতো করেই হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এই নিয়ে বিভিন্ন দেশের পরামর্শ, সমঝোতা এবং আলাপ-আলোচনা ইত্যাদিকে গুরুত্ব দেয়ার কোনো কারণ নেই বলেই আওয়ামী লীগ এখন মনে করছে। গত তিন মাসে মার্কিন দূতাবাসে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা গিয়েছিলেন এবং তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছিলেন। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, এই ধরনের অবস্থান দলের জন্য সঠিক ছিল না। বরং এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর সুযোগ পেয়েছে। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কূটনৈতিক শিষ্টাচার এবং নিয়ম-নীতির মধ্যে যে কাজগুলো করবে সেই টুকুই করতে দেওয়া হবে। রাজনৈতিক বিষয়ে মার্কিন দূতাবাসের কোনো হস্তক্ষেপ আওয়ামী লীগ পছন্দ করবে না- এ রকম একটি মনোভাব দূতাবাসকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।
পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলে দেওয়া হয়েছে, তারা যেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কোথায়, কখন, কিভাবে, কোন রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন- তা যেন আগাম অবহিত করেন। ভিয়েনা কনভেনশনের ধারা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া একজন রাষ্ট্রদূত যে কোনো রাজনৈতিক নেতার সাথে প্রকাশ্য বা গোপন বৈঠক করে না। এটি একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের সামিল। আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি বা আরও যে সমস্ত বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে- সেটি সরকারের আগামী নির্বাচনের উপর প্রভাব ফেলবে না। বরং আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এরপর যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেয় সেটি তাদের নিজস্ব বিষয়। এই সিদ্ধান্তকে পক্ষে-বিপক্ষে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগ কোনো ভূমিকা নেবে না বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ভূমিকা নিয়ে জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নেতারা ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। এরকম পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সংলাপ করা কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন- কোনো রকম আলাপ-আলোচনা করবে না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭