সারাদেশে তৃতীয় পর্যায়ে মাঠে জরিপ করেছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আর একটি মাত্র জরিপ অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি সরাসরিভাবে এই জরিপ পর্যবেক্ষণ করছেন। জরিপের প্রতিবেদনও সরাসরিভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ইতিমধ্যে দলের নেতাকর্মীদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সারাদেশে যে জরিপ হচ্ছে এই জরিপের ভিত্তিতে আগামী মনোনয়ন দেয়া হবে। এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তিনটি সম্পন্ন করেছে এবং তিনটি জরিপের রিপোর্ট মোটামুটি একই রকম।
এই জরিপে মূল দাগে তিনটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে অনেকগুলো প্রশ্ন পত্রের মাধ্যমে। যে তিনটি বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে;
১. বর্তমান এমপি তার অবস্থান কেমন এবং তিনি গত নির্বাচনে যে অঙ্গীকার করেছিলেন সে অঙ্গীকার কতটুকু পূরণ করেছেন।
২. আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপির বাইরে কোন জনপ্রিয় প্রার্থী রয়েছে কিনা এবং তার অবস্থান কি রকম।
৩. আওয়ামী লীগের এলাকায় সাংগঠনিক অবস্থা কি রকম।
এই তিনটি জরিপে দেখা গেছে যে ২০০ আসনেই এবার আওয়ামী লীগের যিনি বর্তমান প্রার্থী আছেন তার বিকল্প হিসেবে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন ইচ্ছুক এবং তারা এলাকায় প্রচারণা করছে। জরিপের মধ্যে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে যে, ২০০ আসনের বেশি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে এবং এই কোন্দল কারণে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের অবস্থা আগের মতো ভালো নেই। নির্বাচনের এই জরিপে এটিও উঠে এসেছে যে, অন্তত দেড়শ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নিয়ে প্রশ্ন আছে এবং তাদের ভূমিকা বিতর্কিত। এই সমস্ত প্রার্থীরা যদি আবার নির্বাচনে মনোনয়ন পান তাহলে তাদের জিতে আসা কঠিন হবে বলেই শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ গত তিনটি নির্বাচনে টানা বিজয়ী হয়েছে। প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কিছু কিছু প্রার্থী পরিবর্তন করেছে। তবে এবার আওয়ামী লীগের ব্যাপক প্রার্থী পরিবর্তন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে দলের নেতাকর্মীদের কাছে বার্তা দিয়েছেন। কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ এবার বেশি প্রার্থী পরিবর্তনে আগ্রহী বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে এমপিদের সম্পর্কে এমনিতেই মানুষের মধ্যে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। তাছাড়া দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে এদের মধ্যে এমপিদের মধ্যে কর্তৃত্ববাদী মনোভাব এবং এক ধরনের অহংকার তৈরি হয় যেটি জনবিচ্ছিন্নতা তৈরি করে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ আসে।
মানুষ সবসময় পরিবর্তন চায়। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগ এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতির আলোকে প্রার্থী পরিবর্তনের ব্যাপারে বেশি মনোযোগী হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত কতজন প্রার্থী পরিবর্তন হবে বা বড় আকারের পরিবর্তন হবে কিনা তা নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতির উপর। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজেই বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে কঠিন নির্বাচন। সেই কঠিন নির্বাচনে প্রার্থী পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে আওয়ামী লীগের জন্য।