ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের বিতর্কিতরা তোপের মুখে পড়বেন বৃহস্পতিবার


প্রকাশ: 19/06/2023


Thumbnail

আগামী ২২ জুন বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। গণভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনের আগেই বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জন্মদিনের আগের দিন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক নানা কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এই বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কর্মকৌশল, সাম্প্রতিক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং বিরোধী দলের আন্দোলন ইত্যাদি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হবে। আর সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে তার রূপ পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে বলেও জানা গেছে। এরকম পরিস্থিতিতে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো জানাচ্ছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা তার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে কিছু কিছু বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করবেন। আর এর ফলে আওয়ামী লীগের কিছু বিতর্কিত এমপি-মন্ত্রী এবং নেতারা তোপের মুখে পড়তে পারেন। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা কয়েকটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে উত্থাপন করবেন। যেমন- 

আইনমন্ত্রী কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে, এটা কিভাবে স্লিপ অব টাং হয় এটি নিয়ে আওয়ামী লীগের অন্তত দুইজন কেন্দ্রীয় নেতা বৃহস্পতিবার এর বৈঠকের কথা বলতে চান এবং তারা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। মন্ত্রীদের এরকম লাগামহীন কথাবার্তা দলের যে ক্ষতি করছে সেই বক্তব্যটিও তারা উপস্থাপন করবেন। আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা সাম্প্রতিক সময়ে প্রথম আলোতে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারত আওয়ামী লীগ সরকারের পাশে থাকবে এটা তিনি প্রত্যাশা করেন। 

আওয়ামী লীগ সরকার কারও দয়ায় বা বিদেশিদের অনুকম্পায় ক্ষমতায় থাকে না এমনটি মনে করেন আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি বলেন, যিনি এই বক্তব্যটি দিয়েছেন তিনি আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক মুখপাত্র নন, এমনকি কোনো নীতিনির্ধারকও না। তাহলে কোন কর্তৃত্ব বলে তিনি প্রথম আলো পত্রিকায় এ ধরনের সাক্ষাৎকার দিলেন। এই নেতার বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল বলে আওয়ামী লীগের ওই প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন। 

লক্ষীপুরের বিতর্কিত এমপি কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলকে মনোনয়নের ক্ষেত্রে যে চিঠি দেয়া হয়েছিল সেই চিঠির দেয়ার ক্ষেত্রে এই নেতার নাম আলোচনায় এসেছিল। এখন তিনি বিভিন্ন দূতাবাসে যাচ্ছেন, বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী বিষয় কথা বলছেন কিভাবে? সে প্রশ্নটি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে উৎপাদিত হবে। 

বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা কথা বলবেন এবং নির্বাচনের আগে বিদ্যুৎ সংকট সহনীয় করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবেন। এ সময় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও কোন কোন কেন্দ্রীয় নেতার সমালোচনা করার ব্যাপারে মনস্থির করেছেন। 

দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বেশ কিছু কথা বলতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, দ্রব্যমূল্য আওয়ামী লীগের সব উন্নয়নকে ম্লান করে দিচ্ছে। এ কারণেই দ্রব্যমূল্য নিয়ে যে জনজীবন অতিষ্ঠ এই বার্তাটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা দেবেন। 

বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের উপ দলীয় কোন্দল এবং কোন্দলের ফলে মারামারি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সাংগঠনিক সম্পাদকরা এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করবেন। 

জামালপুরে সাংবাদিক নাজিম হত্যাকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কথা বলবেন। এ ধরনের ইস্যুগুলো তৈরি হচ্ছে তৃণমূলের কিছু নেতার বাড়াবাড়ির কারণে এবং তাদের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগের অন্তত দু'জন কেন্দ্রীয় নেতা। 

তাছাড়া বিভিন্ন জেলায় এমপিদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, বিতর্কিত বক্তব্য বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন অনেকে। মোদ্দা কথা হলো আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ এই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বিতর্কিতরা তোকে মুখে পড়বেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭