ইনসাইড পলিটিক্স

বিতর্কিত মন্ত্রী-আমলাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা


প্রকাশ: 21/06/2023


Thumbnail

আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং আন্তর্জাতিক চাপ- সবকিছু মিলিয়ে এবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ এবং নীতিনির্ধারণী বলছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলছেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের দিকনির্দেশনা দেবেন, যে দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক চাপ এবং অর্থনৈতিক সংকট যেমন আলোচিত হবে, তেমনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা এবং শক্তিও আলোচিত হবে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এবারের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই মুখ খুলবেন। তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মূলত পাঁচটি বিষয় আওয়ামী লীগ সভাপতিকে অবহিত করতে চান। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলের বেশ কয়েকজন বিতর্কিত মন্ত্রীর কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হবেই। একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, তারা মুখ খুলবেন। তাদের কারণে জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব হচ্ছে, জনগণ আওয়ামী লীগকে ভুল বুঝছে। কাজেই এই সমস্ত বিতর্কিত মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হবে। 

বিতর্কিত মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অন্তত পাঁচ জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা কথা বলবেন। এদের মধ্যে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী।

১. অর্থনৈতিক অবস্থা: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার কতটুকু নেতৃত্ব আছে এবং দেশের অর্থনীতি পরিচালনায় তিনি আদৌ নেতৃত্ব দিচ্ছেন কিনা- এই প্রসঙ্গটি বৈঠকে উত্থাপিত হবে। 

২. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি,মুদ্রাস্ফীতি: আওয়ামী লীগ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ব্যাপক সমালোচিত হতে পারেন। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলবেন অনেক নেতা। 

৩. বিদ্যুৎ পরিস্থিতি: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহীর বিরুদ্ধেও কথা বলবেন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। ঢাকায় বিদ্যুৎ সঙ্কট সমাধান হলেও ঢাকার বাইরের অবস্থা এখনও বেশ নাজুক। বিদ্যুৎ নিয়ে যে সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটছে, তাতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন। 

৪. দলীয় সাংগঠনিক অবস্থা: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়েও আলোচনা হবে। সারাদেশে বিভক্তি; বিশেষ করে গাজীপুর নির্বাচনের বিভক্তি নিয়ে কথাবার্তা হবে। আর এই সমস্ত কোন্দল-বিভক্তি দূর করার উপায় কি?- তা নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

৫. আন্তর্জাতিক চাপ: আন্তর্জাতিক চাপ নিয়েও এই বৈঠকে আলোচনা হবে এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন নেতারা যে বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিচ্ছেন- সে প্রসঙ্গটি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত হবে। আওয়ামী লীগের এ বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন বাছাই এবং মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি একটি রূপরেখা উপস্থাপন করতে পারেন। সারাদেশে সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদনও দিবেন বিভিন্ন সাংগঠনিক সম্পাদকগণ। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আগামীকালের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭