ইনসাইড পলিটিক্স

ব্যর্থ মন্ত্রীদের নিয়ে সরব আওয়ামী লীগের নেতারা


প্রকাশ: 24/06/2023


Thumbnail

কিছু কিছু মন্ত্রীর ব্যর্থতা, দায়িত্বহীনতা, অযোগ্যতার কারণে আওয়ামী লীগের অর্জনগুলো ম্লান হয়ে যাচ্ছে—এমনটি মনে করেন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতারা। এ নিয়ে তারা এখন আস্তে আস্তে সরব হয়েছেন, মুখ খুলছেন, কথা বলছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের দুইজন সদস্যও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে। 

জাতীয় সংসদের অর্থমন্ত্রী একটি বিল উত্থাপন করতে গিয়ে এলোমেলো হয়ে গেছেন। বারবার ভুল করচ্ছিলেন, স্পিকার তাকে শুধরে দেন। একজন আওয়ামী লীগের নেতা বলেছেন, তিনি একটি বিল সংসদে উত্থাপন করতে পারেন না তিনি কিভাবে অর্থনৈতিক পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন। অর্থমন্ত্রী অসুস্থ। কাজেই অসুস্থ থাকা অর্থমন্ত্রীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়াটাই এই মূহুর্তে নিরাপদ। এই মুহূর্তে দেশ সঙ্কটে, সামনে নির্বাচন। এখানে পরিবর্তন জরুরি বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতারা। তারা বলছেন, অর্থমন্ত্রীকে যদি মন্ত্রীও রাখা হয় তাহলে তাকে দপ্তরবিহীনমন্ত্রী রেখে যোগ্য কাউকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। 

উল্লেখ্য এর আগেও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়েছিল কিছুদিনের জন্য। অতীতেও আওয়ামী লীগ দলের বর্ষীয়ান নেতা সালাউদ্দিন ইউসুফকেও দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করে রেখেছিলেন। কাজেই এই রীতি আছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরানো উচিত। আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, সামনে নির্বাচন, অর্থনীতির অবস্থা ভেঙে পড়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী পরিবর্তনটা এখন সময়ের দাবি। এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে বিভিন্নভাবে বলেও তিনি দাবি করেছেন। 

দ্রব্যমূল্য নিয়েও মানুষের মধ্যে মানুষের মধ্যে আর্তনাদ এখন আহাজারিতে পরিণত হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যবসায়ীরা চিনির দাম কেজিতে ২৫ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিল। সেই প্রস্তাব বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেনি। তারা ঈদ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছে। কিন্তু এর মধ্যেই বাজারে চিনির কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। সামনে ঈদে চিনি নিয়ে একটা নতুন কারসাজি বা কেলেঙ্কারি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সীমাহীন ব্যর্থতা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ এখন প্রকাশ্য। এমনকি ধানমন্ডি ৩ নম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে এ নিয়ে লোকজনের মধ্যে সমালোচনা শোনা যায়। নির্বাচনের আগে আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তনের বিষয়টি বিভিন্ন নেতা বারবার করে আলোচনা করছেন। 

জ্বালানি খাত নিয়ে আওয়ামী লীগের আত্মসমালোচনার শেষ নেই। কেন্দ্রীয় নেতারা এ নিয়ে চুপচাপ থাকলেও মাঠ পর্যায়ের নেতারা এ নিয়ে সরব হয়েছেন। কিছুদিন আগে জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দাবি করেছিলেন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু এই দাবি সঠিক ছিল না বলে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন। তারা বলছেন, ঢাকায় বিদ্যুৎ দিয়ে সারা দেশকে ভয়ঙ্কর লোডশেডিংয়ের দিকে ঠেলে দেওয়া কোন যুক্তির কাজ নয় এবং বুদ্ধিমানের কাজও নয়। সারাদেশে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ এই সমস্ত শুনে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা মনে করছেন, বিদ্যুৎ খাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ জরুরি এবং এখানে যে নজিরবিহীন অবস্থা চলছে সেই অবস্থার পরিবর্তন দরকার। এই তিন মন্ত্রীকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন তোলপাড় চলছে। 

আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের যত অর্জন সবকিছু ম্লান করে দিচ্ছেন এই এই তিনজন মন্ত্রী। মন্ত্রিসভার শেষ সময়ে এসে সরকারকে এ ব্যাপারে দৃশ্যমান কিছু করা উচিত এমন তাগিদও দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭