ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরের স্বপ্ন পূরণ খামারে গরু উৎপাদন: খামারিদের হাতে ৮শ’ গরু


প্রকাশ: 25/06/2023


Thumbnail

লক্ষ্মীপুর জেলাব্যাপী এবার খুব বড় গরু উৎপাদন অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোরবানির সময় ঘনিয়ে আসতেই জেলার বিভিন্ন স্থানে খামারিদের খামারে ১ থেকে ২ হাজার কেজি ওজনের বড় বড় গরুর খোঁজ পাচ্ছে ক্রেতারা।

জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, আসন্ন কোরবানির জন্য লক্ষ্মীপুর জেলাব্যাপি এবার প্রায় ৮শ  গরু রয়েছে যেগুলোর ওজন ৫শ থেকে ১ হাজার কেজি। আবার ১ হাজার থেকে ২২শ কেজি ওজনের কিছু গরুও রয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ খবরটি অস্বাভাবিক হলেও ভালো খবর বলছে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা।

খামারি ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের ধারণা বাণিজ্যিক ভাবে খামার স্থাপন ও কৃত্রিম প্রজণন বৃদ্ধির কারণেই জেলাব্যাপী পশু উৎপাদনে এমন ব্যতিক্রম খবর পাওয়া যাচ্ছে।

জেলার কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোঃ সাইফুল ইসলাম। কয়েক বছর আগে দুগ্ধ উৎপাদনের জন্য একটি গাভী কিনেন। পরে ওই গাভী থেকে একটি বাছুরের জন্ম হয়। খুব সুন্দর দেখে বাছুরটিকে লালন পালন শুরু করেন তিনি। নাম রাখেন বাহাদুর। ৪৫ মাস বয়সী বাহাদুরের ওজন এখন ১১শ  কেজি বা সাড়ে ২৭ মণ। কোরবানির জন্য বাহাদুরকে পশুরহাটে দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা। চাষী সাইফুল ইসলাম জানায়, তিনি কখনো কল্পনাও করেননি তার গরুটি এত বড় হবে।

রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্টিলব্রিজ সংলগ্ন বিসমিল্লাহ ডেইরী খামারে মাত্র ৬ টি গরু পালন করেন, মোহাম্মদ উল্লাহ। তার খামারের একমাত্র গরু বড় গরুটির নাম ''কিং''।  তার কিং এতবড়  যার কোন ক্রেতা লক্ষ্মীপুর জেলায় নেই। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা তার গরুটি মেপে যে সনদ দিয়েছে তাতে কিং এর ওজন ২২ শ কেজি বা ৫৭ মণ। গরুটিকে তিনি ঢাকার গাবতলি পশুর হাটে বিক্রয় করবেন বলে ঠিক করলেন। খামারি মোহাম্মদ উল্লাহ "কিং" এর দাম হাঁকছেন ৪০ লাখ টাকা।

একই ইউনিয়নের মাহবুবুর রহমানের গরু রস্তমের ওজন ১২শ কেজি বা ৩০ মণ। দাম চাচ্ছেন ১৫ লাখ। 

রামগঞ্জ উপজেলার মাহবুব রাব্বানীর চৌধুরী ডেইরীতে ৩ টি গরুর মোট ওজন সাড়ে ৩ হাজার কেজি বা ৭৫ মণ। প্রতিটির দাম চাচ্ছেন ১১-১২ লাখ।

কমলনগর উপজেলার কলেজ ছাত্র আহমেদ খান শাকিবের একমাত্র ষাঁড়টির ওজন ৮শ কেজি বা ২০ মণ। শাকিব এ গরুটি বিক্রয় করে বিদেশ যাবেন। তবে তিনি এখনো ক্রেতা খুঁজে পাননি।

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার গরু বাজারে কথা হয় ক্রেতা কবির হোসেনের সাথে। তিনি জানায়, জেলাব্যাপি যেভাবে বড় বড় গরু উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে  কোরবানি করতে বড় বাজেট করতে হবে। যা অধিকাংশ মানুষের পক্ষে সম্ভব না।

আবদুস সালাম নামের অপর একজন জানায় বড় গরুগুলো কোরবানির হাটে বিক্রি না হলেও মাংসের বাজারে গেলে দেশে মাংসের বাজারের সংকট কাটবে।

সদর উপজেলার বাংগাখা গ্রামের খামারি বেলাল হোসেন জানায়, গত ৩-৪ বছরের মধ্যেই জেলাব্যাপী এমন বড় বড় গরু উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সকল খামারিদের প্রধান লক্ষ্য অন্য খামারীর তুলনায় বড় গরু উৎপাদন।  তিনি জানান, বড় গরুগুলো বিদেশি নানা জাতের।  বেলালের ধারণা আগামী বছর গুলোতে স্থানীয় খামারে বড় গরু উৎপাদন আরো ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ( অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. মোশাররফ হোসেন জানায়, চলতি বছরে জেলায় ৬৩ হাজার পশু কোরবানি দেয়ার জন্য খামারিদের নিকট প্রস্তত রয়েছে।  এগুলোর মধ্যে গরু রয়েছে ৪৫ হাজার। 

বড় গরু উৎপাদন বিষয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ বিগত কয়েক বছর যাবত খামারিরা কৃত্রিম প্রজণনের ওপর এবং বিদেশি বড় জাতের গরু লালন পালনে উৎসাহী হয়েছেন। সে কারণে এ বছর কোরবানি পশুর হাটে খুবই বড় বড় গরু দেখা যাচ্ছে।’ 

তিনি আরো জানান, আগামী বছর গুলোতে এ ধরনের পশু উৎপাদন লক্ষ্মীপুরে ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে।

লক্ষ্মীপুর জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে চলতি বছরে লক্ষ্মীপুরে ১১টি স্থায়ী এবং ৫৫ টি অস্থায়ী পশুর হাটে কোরবানির পশু বিক্রয় হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭