ইনসাইড পলিটিক্স

আন্দোলন মোকাবেলা নাকি দেশকে নির্বাচনমুখি করবে আওয়ামী লীগ?


প্রকাশ: 28/06/2023


Thumbnail

ঈদের পর রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এমন শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। কেউ কেউ মনে করছেন যে, সরকারবিরোধী আন্দোলন বেগবান হবে ঈদের পর। কিন্তু ঈদের পর আওয়ামী লীগও বসে থাকবে না। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে যে, বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলা করতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। এর জন্য সংগঠনের সকল পর্যায়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সহযোগী অঙ্গ সংগঠনগুলোকে ঈদের পরে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকতে বলা হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে যে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি থেকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে কিনা। 

অনেকেই মনে করছেন যে, বিএনপির বিপরীতে আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচি সহিংস এবং উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। যেটা বিএনপির জন্য লাভজনক হতে পারে এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিংসতা, উত্তেজনা ইত্যাদি অজুহাত তুলে নানারকম হস্তক্ষেপের সুযোগ পাবে। আর এ কারণে আওয়ামী লীগ ঈদের পর পাল্টা  কর্মসূচি এবং অন্যান্য ব্যাপারে সর্তকতা অবলম্বন করছে। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির বিরুদ্ধে পাল্টা কর্মসূচি নয় বরং দেশকে নির্বাচনমুখি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে আওয়ামী লীগ। ঈদের পর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশলের তিনটি দিক রয়েছে; 

প্রথমত, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে একতরফাভাবে রাজপথ দখল করতে দিবেনা। মাঠ দখলের কৌশলে যেন বিএনপি কোনোভাবেই সফল না হয় সে জন্য সতর্ক থাকবে। এজন্য আওয়ামী লীগ তার মতো করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন শুরু করবে। জুলাই মাস গেলে শোকের মাস আগস্ট শুরু হবে। আগস্ট মাস আওয়ামী লীগের জন্য এমনিতেই সুবিধাজনক। এই মাসজুড়ে আওয়ামী লীগ সব সময় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। কাজেই এই সমস্ত কর্মসূচি গুলো কখনোই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি হিসেবে বিবেচিত হবে না।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলছেন, জুলাই মাসেও তাদের কিছু কর্মসূচি রয়েছে। সারা দেশে তাদের সাংগঠনিক শক্তি জোরদার করা, নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত করা ইত্যাদি সাংগঠনিক কর্মসূচির মধ্যে তারা ব্যস্ত থাকবে এবং পহেলা আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শোকের মাস উদযাপনে প্রতিদিনই সারাদেশে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। কাজেই এর মধ্য দিয়ে রাস্তার দল বিএনপি এককভাবে কখনোই পাবে না। 

দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ পুরো দেশকে নির্বাচনমুখি করতে চায়। আর এ লক্ষ্যেই নির্বাচনী তৎপরতাকে আওয়ামী লীগ জোরদার করবে। ইতিমধ্যে দলের সংসদ সদস্য এবং নেতাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় কাজ শুরু করার। এবার ঈদে একটা নির্বাচনী আবহ তৈরি করবে আওয়ামী লীগ। সব নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা তাদের এলাকায় কোরবানি দিবেন, ব্যাপক গণসংযোগ করবেন এবং এর মাধ্যমে নির্বাচনের একটি উত্তাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন। ঈদের পরে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, প্রতিটি এলাকায় যেন জনসংযোগ সহ জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার কর্মসূচিগুলোকে বৃদ্ধি করা হয়। 

তৃতীয়ত, আওয়ামী লীগ অন্যান্য রাজনৈতিক দল যারা নির্বাচনে আসতে চায় বা নির্বাচন নিয়ে দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদেরকে নির্বাচনে আনবে। আওয়ামী লীগ মনে করে, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যদি জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন সহ আরও কিছু রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে তাহলে পরিস্থিতি একটা ইতিবাচক দিকে মোড় নেবে। এর ফলে এ বিএনপি আর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কয়েকটি রাজনৈতিক দল এক ঘরে হয়ে পড়বে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশলের প্রধান লক্ষ্য হলো দেশকে নির্বাচনমুখী করা। একটা উৎসব এবং আমেজের পরিবেশ তৈরি করার যেন বিএনপির নির্বাচন বিরোধী আন্দোলন হালে পানি না পায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭