প্রকাশ: 06/07/2023
মাম্পস
একটি ভাইরাসজনিত প্যারোটিড নামের লালাগ্রন্থির প্রদাহ। অত্যন্ত সংক্রামক এই ভাইরাস হাঁচি-কাশির (ড্রপলেট) মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। মাম্পস সাধারণত শিশুদেরই হয়ে থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে
বয়স্করাও এ রোগে আক্রান্ত
হয়। এর ফলে জ্বর,
মাথা ব্যথার সঙ্গে কানের সামনে ও নিচে বা
চোয়ালের ওপরে দুই পাশে
লালাগ্রন্থি ফুলে যায়, খাবার
গিলতে বা চিবাতে ব্যথা
হতে পারে।
মাম্পসের
প্রকোপ প্রচলিত এমএমআর ভ্যাকসিনের কল্যাণে এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।
তাই প্রতিটি শিশুকে এই টিকা দেওয়া
প্রয়োজন। এক ডোজ ভ্যাকসিন
শতকরা ৮০ ভাগ রোগ
প্রতিরোধে সক্ষম।
মাম্পসের
প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো হলঃ
১। প্রথমে জ্বর, মাথা ব্যথা, গলা
ব্যথা, অবসাদ ও ক্ষুধামান্দ্য দেখা
যায়। মুখ শুকিয়ে যায়।
প্রচণ্ড দুর্বল লাগে।
২। এরপর ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে কানের সামনের ও নিচের অংশে
অবস্থিত লালাগ্রন্থিতে ব্যথা ও ফোলা শুরু
হয়। ফোলা প্রথমে এক
পাশে শুরু হয়।
৩। ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে
অপর পাশে ফুলতে দেখা
যায়। এই ফোলা ১০
দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
৪। কানে ও গলায়
ব্যথা হতে পারে।
৫। ১৫ থেকে ২০
শতাংশ ক্ষেত্রে তেমন লক্ষণ ও
উপসর্গ প্রকাশ পায় না। প্রাপ্তবয়স্কদের
মধ্যে কমবেশি হয়। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের
ক্ষেত্রে লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ
পেলে সেটি শিশুদের চেয়ে
মারাত্মক হয়।
৬। এতে মেয়েদের তলপেটে
ব্যথা, জ্বর ও বমি
হয়। কিছু ক্ষেত্রে স্তনে
প্রদাহ হতে দেখা যায়।
৭। ছেলেদের অণ্ডকোষ ফুলে যায় এবং
প্রচণ্ড ব্যথা হয়। উভয় পাশে
ব্যথা হলে পরবর্তী সময়ে
বন্ধ্যত্বের আশঙ্কা থাকে।
৮। মেনিনজাইটিস, এনকেফালাইটিস, আর্থ্রাইটিস, নেফ্রাইটিস, থাইরয়েডাইটিস এবং হঠাৎ বধিরতা
দেখা দিতে পারে।
মাম্পসের
প্রধান কারণসমূহঃ
প্যারামিক্সো
ভাইরাস ফ্যামিলির ভাইরাসের কারণে মাম্পস হয়। এই ভাইরাসটি
হাঁচি-কাশি বাতাসের মাধ্যমে
আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে। এ ছাড়া
আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ বা ব্যবহৃত জিনিসের
(ফোমাইট) মাধ্যমে এটি ছড়াতে পারে।
তাই এটিকে খুবই ছোঁয়াচে রোগ
বলা যায়।
মাম্পসের
চিকিৎসাঃ
এ রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই।
তাই উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। এই রোগটি ভাইরাস
দ্বারা সৃষ্টি হওয়ায় অ্যান্টিবায়োটিকের তেমন কার্যকারিতা নেই।
শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা ভালো থাকলে নিজে
থেকে সেরে ওঠে।
জ্বর
ও ব্যথার জন্য ওষুধ দিতে
হবে এবং ইনফেকশন হলে
সে জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া
প্রয়োজন।
জ্বর
ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয়
ওষুধ মুখে অথবা সাপোজিটরি বয়স অনুসারে দেওয়া
যেতে পারে।
রোগীকে
আলাদা ঘরে কমপক্ষে দুই
থেকে তিন সপ্তাহ রাখা
উচিত। রোগীর ব্যবহৃত কাপড়, জিনিসপত্র গরম পানিতে সেদ্ধ
করে ধোয়া প্রয়োজন। এছাড়া
রোগীকে প্রচুর তরল খাবার দিতে
হবে।
মাম্পস
প্রতিরোধে
মাম্পস প্রতিরোধের জন্য শিশুদের মিজেলস,
মাম্পস, রুবেলার (এমএমআর) টিকার পরামর্শ দেওয়া হয়। সিডিসির পরামর্শ
অনুসারে সব শিশুকে দুই
ডোজ এমএমআর টিকা দেওয়া উচিত।
প্রথমটি ১২ থেকে ১৫
মাস বয়সে এবং দ্বিতীয়টি
চার থেকে ছয় বছর
বয়সে। সংক্রমিত ব্যক্তির জন্য এটি খুব
গুরুত্বপূর্ণ যে হাঁচি-কাশির
সময় তাদের মুখ ও নাক
ঢেকে রাখা, যাতে অন্য ব্যক্তির
মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে
না পড়ে।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭