প্রকাশ: 08/07/2023
আফ্রিকার
দেশ কেনিয়ার সুন্দর সরল এক গ্রাম
উমোজা। বিশ্বব্যাপী নারীদের গ্রাম হিসেবেই পরিচিত উমোজা। নর্থ-সেন্ট্রাল কেনিয়ার
নারী-সর্বস্ব এই গ্রামের কথা
জানে না এমন মানুষ
কেনিয়াতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। অবশ্য
ঠিক নাম মনে থাকার
মতো দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন উমোজা’র নারী গোষ্ঠী।
উমোজা গ্রামের সব বাসিন্দাই নারী।
ওই গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হয় না কোনো
প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষকে।
গত শতাব্দির শেষের দিকে ব্রিটিশ সৈনিকরা
এই গ্রামে উপনিবেশ করে। তারা এই
গ্রামের অনেক নারীকে ধরে
নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে।
ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর
এই নারীরা ফিরে আসেন তাদের
পরিবারের কাছে। কিন্তু অসম্মান বয়ে আনার অভিযোগে
তাদেরকে পরিবারের লোকেরা ঘর থেকে বের
করে দেয়। ১৯৯০ সালে
রেবেকা লোলোসলি নামের এক নারী ধর্ষণ,
শারীরিক নির্যাতন ও বিভিন্নভাবে অবহেলিত
ও নির্যাতিত ১৫ নারীকে সঙ্গে
নিয়ে গোড়াপত্তন করেন এ গ্রামের।
সমাজ থেকে, পরিবার থেকে বিতাড়িত হয়ে
গড়ে তোলেন নিজেদের অভয়াশ্রম। ধীরে ধীরে দেশের
বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিপীড়িত নারীরা
যোগ দেন তাদের সঙ্গে।
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শুরু
হয় বেঁচে থাকার লড়াই। শুরুতে নারীদের আধিপত্য মানতে পারছিল না পুরুষতান্ত্রিক সমাজ।
কয়েক দফা চালানো হয়
উচ্ছেদ প্রচেষ্টা। তবে কখনই ভেঙে
পড়েননি নারীরা। ক্রমেই তাদের এই সাহসিকতার কথা
ছড়িয়ে পড়ে সবখানে।
উমোজার
ভিন্ন জীবন ব্যবস্থা, নারীর
সংগ্রামের গল্প আর অসাধারণ
বৈচিত্র্যে ভরা জীবনধারা সম্পর্কে
জানতে, নতুন এক পৃথিবী
গড়ার অনুপ্রেরণায় অনেক পর্যটক ভিড়
জমান উমোজায়। কেনিয়ার ঐতিহ্যবাহী নাচ ও গানে
অতিথিদের বরণ করে নেয়
উমোজা’র সংগ্রামী নারীরা।
তাদের রঙিন ও ঝলমলে
পোশাক আর গয়নায় মুগ্ধ
হতে হয় প্রথম দেখাতেই।
সেই মুগ্ধতাকে পুঁজি করেই চলছে উমোজা’র নারীদের বেঁচে
থাকা। উমোজার জীবনধারা, সেখানে নারীদের হাতেই তাদের সন্তানদের
জন্য প্রতিষ্ঠিত স্কুল, ইউএসএইডের সাহায্যে নির্মিত উমোজা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আর জাদুঘর সবকিছুতেই
নিখুঁত বর্ণনা পাওয়া যাবে উমোজা’র
আজকের অবস্থানে উঠে আসার।
২০১৭
সালে গ্রামটি সম্পর্কে জানতে পারেন ঘানার ফটোগ্রাফার পল নিনসন। তখন
সিদ্ধান্ত নেন, গ্রামের নারীদের
দেখতে যাবেন এবং তাদের গল্প
তুলে আনবেন। কারণ তার মতে,
‘আফ্রিকান দিক থেকে এ
ধরনের গল্প সবার মাঝে
বলা উচিত।’ ফটোগ্রাফার পল নিনসন শুধুমাত্র
গ্রামটির অবস্থান সম্পর্কে জেনে ঘানা থেকে
কেনিয়ায় যান।
অর্থ
দিয়ে সাহায্যের পাশাপাশি উপার্জনের বিভিন্ন উপায় জানাতে মহিলাদের
প্রশিক্ষণও দেওয়া হয় এখানে। পর্যটনের
পাশাপাশি কুটির শিল্প এবং চাষবাস করেও
তারা উপার্জন করেন এখন। নিজেদের
জমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছেন
তারা। তার ভিতরে মাটি,
গোবর আর ঘাস দিয়ে
ছোট ছোট ঘর বানিয়ে
থাকেন। মহিলাদের অধিকার রক্ষার পাশাপাশি আরও বহু সামাজিক
কাজে নিযুক্ত তারা।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭