ইনসাইড পলিটিক্স

আন্দোলনের প্রধান বাধা সিনিয়র নেতাদের অসুস্থতা


প্রকাশ: 08/07/2023


Thumbnail

১০ দফা দাবির আন্দোলন থেকে এখন এক দফা আন্দোলনে মাঠে রয়েছে বিএনপি। আর এই এক দফা দাবি হলো বর্তমান সরকারের পদত্যাগ। বিএনপির বলছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। আর সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য আন্দোলনের হুশিয়ার উচ্চারণ করেছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঈদের আগে ঘোষণা করেছিলেন যে, ঈদের পর সরকারের পতন ঘটাতে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবে এবং আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে। কিন্তু ঈদের পর এখন পর্যন্ত কঠোর আন্দোলনের দৃশ্যমান কোনো নমুনা নেই। কবে থেকে শুরু হবে সে ব্যাপারে বিএনপির কোনো কোনো নেতা অন্ধাকারে। এ নিয়ে সরকার দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা প্রতিনিয়ত ট্রলের শিকার হতে হচ্ছে বিএনপি নেতাদের। যদিও মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন যে, আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে তারা কাজ করছে। তবে মির্জা ফখরুল আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও কর্মীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী নেতাদের অসুস্থতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ সিনিয়র নেতাদের শারীরিক অসুস্থতা আন্দোলনকে বারবার বাধাগ্রস্ত করছে বলে মনে করেন দলের কোনো কোনো নেতা।

বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, দলটির আন্দোলন চলছে অনেকটা নেতৃত্বহীন ভাবে। দলের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত। তিনি সরকারের বিশেষ অনুকম্পায় বাসা থেকে চিকিৎসাধীন। তারেক জিয়া লন্ডনে পলাতক। এমন অবস্থায় আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাকে সহযোগিতা করছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। কিন্তু স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতা এখন চিকিৎসাধীন। বেশ কয়েকজন দলীয় কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয়।

বিএনপির একজন নেতা বলেন, মির্জা ফখরুলই এখন বিএনপির শীর্ষ নেতা। তারই নেতৃত্বে বিএনপি আন্দোলন করছে। কিন্তু তিনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। গত ২২ অক্টোবরে তিনি খুলনা বিভাগীয় সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ পড়েন। এরপর আবার ২০ ফেব্রুয়ারিতে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে ইউনাইটেড হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি চিকিৎসার জন্য এ বছরই সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন। অন্যদিকে দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এখন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া তিনিও ধানমন্ডির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আরেক সদস্য মাহবুবুর রহমান স্বেচ্ছায় দল ছেড়েছেন। তাছাড়া স্থায়ী কমিটির তিনজন সদস্য মারা গেছেন। 

এদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামও গুলশানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর বাইরে স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য নিষ্ক্রিয়। বিশেষ কোনো প্রোগ্রাম ছাড়া দলীয় কর্মসূচিগুলোতেও তাদের উপস্থিতি সেভাবে চোখে পড়ে না। এ রকম অবস্থায় বিএনপি বারবার আন্দোলনের চেষ্টা করলেও নেতাদের অসুস্থতা বড় বাধা তৈরি করছে। 

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে দলের সর্বশেষ কাউন্সিলের পর স্থায়ী কমিটির ১৯ সদস্যের মধ্যে ১৭ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। স্থায়ী কমিটির ১৭ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জন হলেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (পদাধিকারবলে), সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান (পদাধিকারবলে), খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (পদাধিকারবলে)। নতুন নিয়োগ পাওয়া সালাউদ্দিন আহমেদ স্থায়ী কমিটির ১৯ নম্বর সদস্য। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। ১৭ ও ১৮ নম্বর সদস্যের নাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭