ইনসাইড পলিটিক্স

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: দায়িত্বে থাকবেন না যেসব আমলারা


প্রকাশ: 09/07/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের গত ২৪ মে এ নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়। এই নতুন ভিসা নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। এর মধ্যে বর্তমান ও প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা বা কর্মচারী, সরকারপন্থি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নীতির ফলে সরকারি আমলাদের অনেকেই বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছে সূত্র।   

সূত্রটি বলছে, এই ভিসা নীতির ফলে আওয়ামীপন্থি অনেক সরকারি আমলাই এখন নিরব ভূমিকা পালন করছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরব রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। সরকার ও সংশ্লিষ্টদের চাপে রাখতে নানা কৌশল নিচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিকে এবং সরকার বিরোধী এ দেশিয় গোষ্ঠী। তাই যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত ভিসা নীতির ফলে বিপাকে পড়তে পারেন ভেবে- বহু সরকারি কর্মকর্তা নিরব ভূমিকায় রয়েছেন। বিশেষ করে আমেরিকাকে যারা সেকেণ্ড হোম হিসেবে চিন্তা-ভাবনা করছেন এবং আমেরিকাতে ইতিমধ্যেই যারা বাড়ি-ঘর কিনেছেন, যাদের পরিবার বিদেশে থাকেন, যুক্তরাষ্ট্রে যাদের সম্পদ আছে-  তারা বেশ বিপাকেই পড়েছেন। 

যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে নাইজেরিয়া, উগান্ডা ও সোমালিয়াসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে এসব দেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে নির্বাচনের অল্প কিছুদিন আগে অথবা পরে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেওয়া হয়েছে জাতীয় নির্বাচনের অন্তত সাত মাস আগে- এ বিষয়টিও সরকারি কর্মকর্তাদের বিভিন্নভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। এছাড়া সরকারের আমলা এবং পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নামে তালিকা তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছে বিএনপি- এ বিষয়টিও আমলাদের মনে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে।                   

এদিকে এই সরকারি আমলাদের এই শঙ্কা ভাবিয়ে তুলেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকেও। ওইসব কর্মকর্তা নির্বাচনের সময় সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তাই বসে নেই আওয়ামী লীগও, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যেসব সরকারি আমলাদের সম্পর্ক রয়েছে- এমন সরকারি কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করছে আওয়ামী লীগ। মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর এ ধরনের আমলাদের চিহ্নিত করতে তৎপর হয়েছে দলটি। 

জানা গেছে, নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক কর্মকর্তার মধ্যে দেখা দেয় উৎকণ্ঠা। বিশেষ করে যেসব কর্মকর্তার স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা কিংবা ভাইবোন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস কিংবা পড়াশোনা করছেন। দেশটিতে যাদের সম্পদ রয়েছে তারা আরও বেশি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাই আগামী নির্বাচনে তাদের পক্ষে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। এ কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত কর্মকর্তাদের আগামী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রাখতে চায় না দলটি।

তবে তালিকা করার বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে রাজি হননি ক্ষমতাসীন দলের কোনো নেতা। তারা বলছেন, নির্বাচনকালে সরকারি কর্মকর্তাদের কাকে কোথায় দায়িত্ব দেওয়া হবে- তা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়। এখানে দলের কোনো ভূমিকা নেই। তবে কেউ দলীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারেন, এমনটা জানা গেলে অবশ্যই সেই কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে ভাবা হবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর একজন সদস্য বলেছেন, বিএনপি নানারকম তালিকা করে সরকারি কর্মকর্তাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। এভাবে ভয় দেখিয়ে কোনো কাজ হবে বলে মনে হয় না। ভিসা নীতি বা অন্যকিছু দিয়ে এসব কর্মকর্তাকে নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকা রাখতে প্রভাবিত করা যাবে না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭