ইনসাইড পলিটিক্স

সংবিধান ও তত্বাবধায়ক সরকার বুঝিনা, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই: জিএম কাদের


প্রকাশ: 23/07/2023


Thumbnail

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘সংবিধান ও তত্বাবধায়ক সরকার বুঝিনা, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিতে চাই। যাতে নির্বাচনে সরকার কোন প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা ফর্মুলা দিতে পারি, সকল দল থেকে ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। নির্বাচন ব্যবস্থা অবশ্যই সরকারের প্রভাবমুক্ত করতে হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে ইলেকশন নয় সিলেকশন হতে পারে। বর্তমান সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা তছনছ করে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ধংস করেছে। বর্তমান সরকার একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েম করতে চাচ্ছে। পেশাদার ও ব্যবসায়ী সংগঠন গুলোতে এখন আর নির্বাচন হয় না, সিলেকশন করে দেয়া হচ্ছে। গণতান্ত্রিক ধারা ধংস করে কর্তৃত্ববাদী এক নায়কতন্ত্র চালু করেছে। আগামী নির্বাচনেও যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে আর রাজনীতি বা রাজনৈতিক দল থাকবে না। দেশ এক নেতার অধিনে চলে যাবে, এদলীয় শাসন ব্যবস্থা চিরস্থায়ী করা হবে। দেশের মানুষ তাদের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে, এভাবে চলতে থাকলে দেশের মানুষের অধিকার বলতে কিছুই থাকবে না।’

রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তে ইঞ্জিনিয়ার লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। তাদের স্বাগত জানিয়ে দেয়া বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। 

জিএম কাদের বলেন, ‘সরকার বলেছে সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সরকার বলছে তাদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। কিন্তু সরকার ছাড়া সকল রাজনৈতিক শক্তি ও সাধারণ মানুষ বলছে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে বিশ্ববাসী দেখেছে দলীয় সরকারের অধীনে কেমন নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে জনগণের কোন সম্পৃক্ততা ছিলো না।  সরকার বলছে ১১ শতাংশ ভোট পড়েছে, সাধারণ মানুষের ধারণা শতকারা ৫ ভাগ ভোটও সাধারণ মানুষ দেয়নি। ভোট যা পড়েছে তার প্রায় সবই তারা নিজেরাই দিয়েছে। জনগণ এই ভোটের ওপর আস্থা রাখেনি তাই তারা ভোটেও অংশ নেয়নি। নির্লজ্জভাবে এক প্রার্থীকে মেরে, এজেন্টদের বের করে দিয়ে নির্বাচনকে কলুষিত করেছে। সারাবিশ্বের কাছে প্রমাণ হয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কেমন হবে। ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের পর নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলার মুখ সরকারের নেই। তিনি বলেন, আন্দোলনে রাস্তায় নামলে নির্যাতন করা হচ্ছে। সরকার বিরোধীদের দমন করতে সব কিছুই করছে। মানুষকে মানুষ মনে করে না, বিরোধীদের ওপর পাখির মত গুলি করা হয়। বর্তমান সরকারের দমন নীতিতে স্বাভাবিক রাজনৈতিক শক্তির টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই অর্থ ও জনবল না থাকলে মাঠে টিকে থাকা দূরুহ হয়ে পড়েছে। জাতীয় পার্টিকে সব চেয়ে বেশি দুর্বল করেছে আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাতে সমর্থন দিয়েছিলো জাতীয় পার্টি। তারপর থেকে আওয়ামী লীগ সব সময় জাতীয় পার্টিতে বিভক্তি সৃষ্টি করে রেখেছে। ২০১৪ সালের পর থেকে জাতীয় পার্টির মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। জাতীয় পার্টির স্বাভাবিক কর্মকান্ড বিঘ্নিত করেছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে, জাতীয় পার্টি অনেকটা দুর্বল হয়েছে। আমরা এই অবস্থা থেকে বের হতে চাই।’ 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক চুন্নু এমপি। টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আব্দুস সালাম চাকলাদারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল জেলা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক, যোগদানকারীদের মধ্যে সৈয়দ শামসুদ্দোহা জুবায়ের, আব্দুল আজিজ। 

এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল হক, গোলাম রাব্বানী, মো. খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আহমেদ, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, সম্পাদকমন্ডলীর হেলাল উদ্দিন, এমএ রাজ্জাক খান, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদকমন্ডলীর মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য শেখ আজহার, আব্দুল কাদের কদর, রাশেদ নিজাম, আবু মুসা সরকার, শফিকুল ইসলাম তপন, সোহেল রহমান। রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে কালীহাতি উপজেলার শরীফ সিদ্দিকী, আব্দুর রহিম বাদশাহ, ইকবাল হোসেন রিপন, মো. রমজান আলী, স্বপন সিদ্দিকী সহ শতাধিক নেতাকর্মী জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭