ইনসাইড বাংলাদেশ

কূটনীতিকদের চোখ এখন বঙ্গভবনে


প্রকাশ: 25/07/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। মার্কিন দূতাবাস ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে। ওয়াশিংটন থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর করছেন নিয়মিতভাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশ সফর করে গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার বিষয়ক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এখন ঢাকা সফর করছেন। এই সমস্ত সফর এবং আলাপ আলোচনার প্রধান উদ্দেশ্য হলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক করা। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, বাংলাদেশের সুশাসন, গণতন্ত্র এবং অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন এ দেশের অগ্রগতি এবং উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের গ্রহণযোগ্যতা এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ বিবেচনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা। আর এ কারণেই তারা গত এক বছরের বেশি সময় ধরে নিয়মিত ভাবে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। এমনকি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে যে সংলাপ বা সমঝোতা সে ব্যাপারেও তারা সরাসরি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করবেনা। বরং তারা মনে করে যে রাজনৈতিক দলগুলো এ ব্যাপারে স্বপ্রণোদি হয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এরকম বক্তব্য প্রকাশ্যে করলেও তারা একটি রাজনৈতিক সংলাপের জন্য আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির সঙ্গে প্রায় নিয়মিতই যোগাযোগ করছে। তবে নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই কূটনীতিকরা রাজনৈতিক মধ্যস্থতার জন্য একজন অভিভাবক খোঁজছেন। কূটনীতিকদের চোখ এখন বঙ্গভবনে। 

নতুন রাষ্ট্রপতি মোঃ শাহাবুদ্দিন উদ্দিনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিসহ বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর একটি সংলাপ করা যায় কিনা সেটি নিয়ে কূটনীতিক মহলে আলোচনা চলছে। রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক ভাবে একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি এবং তিনি রাষ্ট্রের প্রধান। আর রাজনৈতিক সংকট নিরসনে রাষ্ট্রপতির মধ্যস্থতায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা আলাপ আলোচনা হতে পারে কিনা তার সম্ভাব্যতা যাচাই করছে কূটনীতিকরা। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা মনে করেন রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে একটি মধ্যস্থতা প্রয়োজন এবং সেই মধ্যস্থতা রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে সংলাপের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিএনপির  কোন পক্ষ থেকেই বলা হয়নি। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করা হচ্ছে। তারা বর্তমান সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের সংলাপে যাবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি তারা বলেছে যে আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানতে হবে, তারপর রাজনৈতিক সংলাপ হবে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিলেই কেবল বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ হতে পারে। এ রকম পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি দুই দলকে নিয়ে একসাথে বা আলাদা আলাদাভাবে বৈঠক করতে পারেন কিনা তার সম্ভাব্যতা যাচাই করছেন কূটনৈতিকরা। বিএনপি এখন পর্যন্ত নতুন রাষ্ট্রপতির সমালোচনা করেননি, তার বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক বক্তব্য বলেননি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতি একজন নিরপেক্ষ অবস্থান। এই অবস্থান থেকে তিনি রাজনৈতিক সংকট সমাধানে স্বপ্রণোদিত উদ্যোগ নেবেন কিনা নাকি কূটনীতিকরা তাকে এ ব্যাপারে অনুরোধ করবে অথবা ক্ষমতাসীন সরকার এ ব্যাপারে তাকে তাকে উদ্যোগ নেয়ার জন্য আহ্বান জানাবে সেটি দেখার বিষয়। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, কূটনৈতিকদের আগ্রহ এখন বঙ্গভবনের দিকে। তারা রাষ্ট্রপতিকে একটি উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রস্তাব দিতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে কূটনীতিকপাড়ায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭