ইনসাইড পলিটিক্স

২৭ জুলাই: কে জিতবে?


প্রকাশ: 26/07/2023


Thumbnail

আগামীকালের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ নিয়ে রাজনীতিতে উত্তেজনা চরমে। আগামীকাল শেষ কর্মদিবস। শেষ কর্মদিবসে মানুষের ব্যস্ততা থাকে। কিন্তু এই ব্যস্ততার দিনে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডেকেছে। বিএনপি এক দফা দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। সেই এক দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারা আগামীকাল ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে। এখন পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়নি যে এই মহা সমাবেশের মাধ্যমে তারা কী অর্জন করতে চায়। তবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, তারা তাদের আন্দোলনকে চূড়ান্ত ধাপে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই সমাবেশ ডেকেছেন। 

বিভিন্ন সূত্র বলছে, এই মহাসমাবেশে থেকে বিএনপি একটি আল্টিমেটাম দিবে তাদের দাবি মানার জন্য। বিএনপি বলছে, তাদের দাবি এখন একটিই। তাহল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়া। এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথেই ফয়সালা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, আগামীকালের সমাবেশের মাধ্যমে তারা সরকারকে ৪৮ বা ৭২ ঘণ্টার একটি আলটিমেটাম দেবে। এরপর ঢাকায় অবস্থান সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। 

বিএনপি নেতারা নেতারা দাবি করছেন যে, এবার আন্দোলনে তাদের জয়ের কোন বিকল্প নেই এবং তারা যেকোনো মূল্যে জয়ী হবেন বলে আশাবাদী। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বিএনপি যেন ঢাকা দখল করতে না পারে সেজন্য রাজপথে থাকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আগামীকাল আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের প্রধান লক্ষ্য হল সংঘাত ও নৈরাজ্য বন্ধ এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করার আয়োজনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই পাল্টাপাল্টি সমাবেশ দেশকে সহিংসতায় নিয়ে যাবে কিনা এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিভিন্ন প্রশ্ন রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হল এই রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আসলে কে জিতবে সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। 

বিএনপি শুধু একা নয়, আগামীকাল বিএনপির সঙ্গে আরও কিছু রাজনৈতিক দল ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান থেকে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করবে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ একাই কর্মসূচি পালন করবে। এই দুই কর্মসূচিতে তারাই জিতবে যারা কৌশলের খেলায় জয়ী হবে। বিএনপির প্রধান কৌশল হল আগামী নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং সরকার যেন বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে নির্বাচন করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ চাইছে, যেকোনো মূল্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে করতে। এখন দেখার বিষয় যে ২৭ জুলাই এর সমাবেশ কার পাল্লা ভারী করে। 

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন ২৭ জুলাই জয়-পরাজয়ের নিষ্পত্তি হবে না। বরং ২৭ জুলাই একটি নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি হবে। ২৭ জুলাই এর জনসভায় কার শক্তি বেশি সেটি যেমন রাজনীতিতে একটি গুরুত্ব বহন করবে পাশাপাশি এই সমাবেশের পর আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া কি হবে সেটিও বড় বিবেচ্য বিষয়। সবকিছু মিলিয়ে ২৭ জুলাই এর পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন মেরুকরণ ঘটতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। তবে অনেকের ধারণা বিএনপির আন্দোলনে এখনও জনসম্পৃক্ততা হয়নি। জনগণ এই আন্দোলনের সঙ্গে এখনও যুক্ত হয়নি। আর এটিই তাদের আন্দোলনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। জনসম্পৃক্ততা ছাড়া এ ধরনের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে হটানো অলীক কল্পনা বলেও কিছু কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন। তবে সবকিছু মিলিয়ে রাজনীতিতে যে অস্থিরতার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে তা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭