এডিটর’স মাইন্ড

৫ কারণে বিএনপি এবার আশাবাদী


প্রকাশ: 26/07/2023


Thumbnail

আগামীকাল বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে। এর আগে গত বছর ১০ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সেই মহাসমাবেশের মাধ্যমে সরকার পতনের চূড়ান্ত ঘোষণা দিয়েছিল দলটি। কিন্তু ওই মহাসমাবেশের মাধ্যমে শুধুমাত্র দলের এমপিদের পদত্যাগ ছাড়া আর তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি বিএনপির আন্দোলনে। তবে এবার বিএনপি অনেক বেশি আশাবাদী। বিএনপি নেতারা বলছেন যে, ২৭ জুলাই এর মহাসমাবেশের পর আন্দোলন একটি চূড়ান্ত মাত্রা পাবে এবং এই আন্দোলনের ধারায় শেষ পর্যন্ত তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করতে পারবেন বলেও বিএনপির নেতারা মনে করছেন। এবার বিএনপি কেন আশাবাদী? 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পাঁচটি কারণে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বিএনপি এবার আশাবাদী।

১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব: বিএনপির আশাবাদী হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর মনোভাব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে প্রকাশ্যে নাক গলাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে যারা বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা প্রদান করবে তাদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেবে না। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন, সুশাসন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সোচ্চার। এটিকে বিএনপিকে আশাবাদী করেছে। বিএনপির অনেকের মনে করছে, আগে সরকার তাদের সমাবেশ এবং মতপ্রকাশে বাধা প্রদান করত। কিন্তু এবার তারা সেটি করতে পারছে না। এর কারণ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব। আর এই মনোভাবের কারণে শেষ পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন সফল হবে বলে বিএনপির নেতারা মনে করছেন।

২. অর্থনৈতিক চাপ: বিএনপির আশাবাদীর দ্বিতীয় কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে যে সরকারের ওপর অর্থনৈতিক। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, দ্রব্যমূল্য সহনীয়। ডলার সংকটের কারণে অর্থনীতি একটা চাপের মুখে রয়েছে। ফলে জনজীবনে নানা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে জনগণের মধ্যে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। এটিকে কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। আর এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিএনপিকে আশাবাদী করছে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। 

৩. বিএনপির সাংগঠনিক শৃঙ্খলা: সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি সাংগঠনিক ভাবে আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা। ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার পরও দলটিতে বড় ধরনের ভাঙ্গন হয়নি। বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা অনুপস্থিত থাকার পরও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এটিও বিএনপির জন্য একটি বড় ধরনের প্রাপ্তি। তাছাড়া নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটি বিএনপির জন্য ইতিবাচক হিসেবে মনে করছেন কেউ কেউ।

৪. সুশীল সমাজের সমর্থন: দীর্ঘদিন পর এই প্রথম সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা প্রকাশ্যে বিএনপিকে সমর্থন দিচ্ছেন। তারা আগে এনিয়ে-বিনিয়ে দিলেও এখন তারা বিএনপির আন্দোলনের প্রতি এক ধরনের সহানুভূতি দেখাচ্ছেন। এটি বিএনপির জন্য একটি ইতিবাচক বলে কেউ কেউ মনে করেন। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতির গতি প্রকৃতি নির্ধারণে সুশীল সমাজ সব সময় একটি ভূমিকা পালন করে থাকে। এবার সুশীল সমাজের অবস্থান বিএনপির পক্ষে বলেই বিএনপির নেতারা মনে করছেন।  

৫. দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা: আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে জনগণের মধ্যে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করছে যে, পরিবর্তন দরকার এবং সে কারণেই তারা বিএনপির আন্দোলনকে সমর্থন দিতে পারে বলে বিএনপির কোন কোন মনে করছেন। 

তবে বিএনপি এবার প্রথম নয়, এর আগেও আশাবাদী হয়েছিল। কিন্তু সেই আশাবাদের ফল ইতিবাচক হয়নি। এবার বিএনপি কি সত্যি সত্যি তাদের দাবি আদায় করতে পারবে? নাকি আরেকবার হতাশায় পড়বে? সেটা বুঝতে গেলে আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭