ইনসাইড বাংলাদেশ

স্কুলের বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েই বাড়ি চালান সহকারি শিক্ষক


প্রকাশ: 27/07/2023


Thumbnail

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের পরমালী সরকারি বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন রওশন আরা বেগম। তিনি অবস্থানও করেন ঠিক বিদ্যালয়ের পাশেই। এলাকাটির স্থানীয় হওয়ায় দাপট অন্যান্য শিক্ষকদের থেকে বেশি এমন কথাও বলতে শোনা গেছে সংশ্লিষ্টদের ।

 

জানা গেছে, রওশন আরা বেগমের স্বামী জলিলুর রহমান বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি এবং জমিদাতা হওয়ায় বিদ্যালয়টিতে তার প্রভাব বেশি। কখনো কখনো প্রধান শিক্ষকও যেন হয়ে যায় অসহায়। সেই ক্ষমতার ব্যবহার করে নিজ বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন এই শিক্ষক। বিদ্যালয়টির বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও প্রতিষ্ঠানটির কারও অনুমোদন নেয়া দূরে থাক বিদ্যুৎ বিলও প্রদান করেন না তিনি(রওশন আরা)। যার কারণে তার ব্যবহৃত বিদ্যুতের বিলও আসে বিদ্যালয়টির নামে। সহকারি শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক এমনকি বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কথাও শোনেন না এই শিক্ষক। এমন অভিযোগ এখন সকলের জানা। সকল কিছু জেনে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে নিষেধ করলেও তা মানছেন না ওই শিক্ষক।

 

গত ১৪ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় রওশন আরা বেগমের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এরপর থেকেই বিদ্যালয় থেকে সংযোগ নিয়ে চলছে তার পুরো বাড়ি। এতে কিছুই করতে পারছে না বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

 

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ মোট ৫ জন শিক্ষক থাকলেও রওশন আরা বেগম ছাড়া বাকি শিক্ষকরা বাস করেন জেলা শহরে। বাসার পাশেই বিদ্যালয় হওয়ায় স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে রওশন আরা বেগম অবৈধভাবে বিদ্যালয় থেকে তার দিয়ে লাইন টেনে বাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। আর এই অভিযোগ তারই প্রতিবেশী স্থানীয়দের।

 

একই বিদ্যালয়ের আরেক সহকারি শিক্ষক ছফুরা পারভিন জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা রওশন আরা বেগম গত মে মাস থেকে আমাদের না জানিয়ে বিদ্যালয়ে সংযোগ দেয়া বিদ্যুতের লাইন ব্যবহার করছে। আমরা নিষেধ করলেও ক্ষমতা বলে সরকারী বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে।

 

পরমালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ লাইন এক সহকারি শিক্ষক বাড়িতে নিয়ে ব্যবহার করছেন। আমি বহুবার লাইন কাটতে বলেছি কিন্তু তারা শুনছেন না।

 

বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: আব্দুর রাকিব জানান, আমি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হলেও আমাকে এবং প্রধান শিক্ষককে না জানিয়ে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা তার নিজ বাড়িতে বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। বিষয়টি জানান পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বললে তারা বাড়িতে অসুস্থ মেয়ের অজুহাত দিয়ে লাইন চালাচ্ছে। সহকারি শিক্ষিকা রওশন আরা বেগমের স্বামী বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি এবং জমিদাতা। এই কারণে তারা প্রভাব খাটিয়ে কাউকে না জানিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। আমরা নিষেধ করলেও তা মানে নি।

 

বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী শিক্ষক রওশন আরা বেগম বলেন, বাড়ির বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন থাকায় সাময়িক ভাবে বিদ্যালয়ের লাইন ব্যবহার করছি। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে মিটারের জন্য আবেদন করেছি। মিটার পেলে লাইন খুলে দেয়া হবে।

 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ বাড়িতে ব্যবহার বিষয়টি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭