ইনসাইড পলিটিক্স

কি ঘোষণা আসছে কাল বিএনপির সমাবেশ থেকে?


প্রকাশ: 27/07/2023


Thumbnail

২৭ জুলাই সমাবেশ ২৮ জুলাই পিছিয়ে নিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক পরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছে, এমনটি মনে করেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখান থেকে বিএনপি একাধিক বার্তা দিয়েছে। প্রথমত, তারা তাদের কর্মসূচির সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে চাইছে এবং জনগণের আস্থা অর্জন করতে চাইছে। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তারা দেখাতে চাইছে যে তারা সহিংস রাজনীতি করতে চায় না বরং তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চায়। তৃতীয়ত, বিএনপি তার কর্মীদেরকে একটা বার্তা দিচ্ছে যে কর্মীরা যেকোনো পরিস্থিতিতেই রাজপথে নামতে প্রস্তুত। চতুর্থত, বিএনপি আওয়ামী লীগের জন্য একটি বার্তা দিয়েছে। তা হলো বিএনপি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চায় না। তবে বিএনপির এই ধরনের আপাত শান্তশিষ্ট এবং সহনীয় অবস্থার আড়ালে রয়েছে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করার একটা প্রচেষ্টা।

বিএনপি ইতোমধ্যে একদফা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে এবং আগামীকালের জনসভা থেকে বিএনপি এক দফা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রাজনীতির নতুন কর্মসূচি দেবে বলেও ঘোষণা করেছে। বিএনপি আগামীকাল কি ধরনের কর্মসূচি দেবে এ নিয়ে নানারকম আলাপ-আলোচনা চলছে।

গতকাল বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে লন্ডন থেকে যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। লন্ডনে পলাতক এই বিএনপির নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আন্দোলনের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আগামীকালের জনসভা থেকে বিএনপি সরকারকে একটি স্বল্প সময়ে আল্টিমেটাম দেবে। এই আল্টিমেটামের মধ্যে যদি সরকার তাদের দাবির অর্থাৎ নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না মানে, তাহলে তারা চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবে। তবে বিএনপির জন্য এ ধরনের আল্টিমেটাম এটাই শেষ না। ১০ ডিসেম্বরও বিএনপি একই ধরনের আল্টিমেটাম দিয়েছিল। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, অন্যান্যবারের আন্দোলনের ধরন আর এবারের বিএনপির আন্দোলনের ধরন আলাদা। আর এবারের আন্দোলন যে বিএনপি সরাসরি কারো পরামর্শে করছে, সেটি অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। কারণ যে ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে এবং যে ধরনের কৌশলি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, তাতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে যে, এই কর্মসূচিগুলো বিএনপি’র ব্রেইনচাইল্ড নয়। বরং এটি তৃতীয় কোন শক্তির মস্তিষ্ক প্রসূত। তারাই বিএনপিকে বিভিন্নভাবে পরিচালিত করছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির প্রধান লক্ষ্য হল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করা। সাম্প্রতিক সময়ে দুটি ঘটনা বিএনপিকে উজ্জীবিত করেছে। প্রথমত কম্বোডিয়ার নির্বাচন এবং নির্বাচনের তিনদিন পরেই নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা। দ্বিতীয়ত, নাইজেরিয়ার সামরিক অভ্যুত্থান। বিএনপির একাধিক নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি কোনভাবেই ক্ষমতা গ্রহণে আগ্রহী নয়। বরং তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল এবং সুশীলদের কাছে এই বার্তাটি সুস্পষ্টভাবে দিয়েছে যে, তারা আপাতত ক্ষমতায় আসতে চায় না, শুধু আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। এ কারণেই বিএনপির এখন প্রধান লক্ষ্য হল একটি তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় আনা। আর এই ক্ষমতায় আনার লক্ষ্যেই তারা রাজপথের আন্দোলনের পাশাপাশি দূতাবাসপাড়ায় যোগাযোগও বাড়িয়েছে। তার ফল হিসেবেই সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

তবে আগামীকালের কর্মসূচির পর বিএনপি কিভাবে এক দফা বাস্তবায়ন করবে সেটি সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে উঠেছে। বিভিন্ন মহল মনে করছে বিএনপি আসলে নিজেরা একদফা বাস্তবায়ন করবে না বরং এক দফা বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের পটভূমি তৈরি করবে। সেটিই আগামীকালের সমাবেশে বিএনপির প্রধান লক্ষ্য।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭