ইনসাইড পলিটিক্স

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে মনে করছে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 28/07/2023


Thumbnail

আজ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির পাল্টাপাল্টি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হল। বিএনপির সমাবেশ থেকে এক দফা কর্মসূচির দাবিতে অনড় থেকেছে এবং এই দাবিতে আগামীকাল ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বিএনপির নেতারা বলছে যে, লাগাতার কর্মসূচির মাধ্যমে তারা সরকার পতনে বদ্ধপরিকর। তবে এ ধরনের কর্মসূচিকে এখন পর্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। বরং আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, পাল্টা কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের মধ্যে দলটির অবস্থান অব্যাহত রাখতে রাখতে পারবে এবং এই অবস্থান অব্যাহত রেখে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথে দেশকে নিয়ে যেতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। 

আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতার সাথে বিএনপির কর্মসূচির পর আলাপ করে দেখা গেছে তারা বিএনপির কর্মসূচির ফলে কোনো চাপ অনুভব করছেন না। বরং তারা এটি একটি রুটিন পুরনো কর্মসূচি মনে করছেন। আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম বলেছেন যে, এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে কখনোই সরকার হটানো যাবেনা। রাজপথের আন্দোলনের জন্য যে জনসম্পৃক্ততা দরকার সেই জনসম্পৃক্ততা তাদের নেই। বরং আওয়ামী লীগ আগামী ৬ আগস্ট কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভার মাধ্যমে দেশকে নির্বাচনমুখী অবস্থানে নিয়ে যেতে চায়। বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলা এবং আগামী নির্বাচনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ পাঁচটি কৌশল অবলম্বন করেছে। 

১. সাংগঠনিক শক্তি জোরদার করা এবং নিয়মিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাজপথে সক্রিয় থাকা: আওয়ামী লীগের একজন যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বলেছেন, সামনে শোকের মাস আগস্ট শুরু হচ্ছে। আগস্ট মাসে সারা দেশে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি পালিত হবে। কাজেই এই সময় বিএনপি রাজপথ দখল করতে পারবে বা আন্দোলন-সংগ্রাম কোন পরিণতি পাবে এমনটি তারা মনে করেন না। 

২. আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবেলা করতে চায়: আওয়ামী লীগ এখন বিএনপির চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর মনে করছে আন্তর্জাতিক চাপকে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে যে হস্তক্ষেপ করছে তা সুষ্পষ্টতই আগামী নির্বাচন বানচালের চেষ্টা। এরকম অবস্থায় আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবেলার কৌশল নির্ধারণ করছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে যেন পশ্চিমা দেশগুলোর হস্তক্ষেপ না করতে পারে সে ব্যাপারে যেমন দলটি কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বলয়ে বিএনপির লবিংয়ের বিপরীতে পাল্টা লবিংয়ের কর্মকান্ড শুরু করেছে। 

৩. জনগণকে সম্পৃক্ত করা: আওয়ামী লীগের অন্যতম লক্ষ্য হল জনগণকে তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সময় দেশে যে উন্নয়ন যজ্ঞ হয়েছে তার সুফল যে জনগণ পাচ্ছে সে বিষয়ে জনগণকে নতুন করে অবহিত করা। দলের নেতাকর্মীদের ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিটি এলাকায়, পাড়ায়-মহল্লায় আওয়ামী লীগের প্রচারণা নতুন করে শুরু করার জন্য এবং এই ধরনের প্রচারণার মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে একটি শক্ত অবস্থান গ্রহণ করার জন্য। 

৪. বিএনপির সন্ত্রাস নৈরাজ্য সম্পর্কে মানুষকে আবার মনে করিয়ে দেওয়া: ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি বাংলাদেশের যে সন্ত্রাস নৈরাজ্যের রাজত্ব কায়েম করেছিল সেই সম্পর্কে দেশের মানুষকে অবহিত করতে চায় আওয়ামী লীগ। আর একারণেই ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত হত্যা-সন্ত্রাস, হাওয়া ভবনের লুণ্ঠন ইত্যাদি বিষয়ে জনগণকে আবার নতুন করে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে স্মরণ করিয়ে দিতে চায়। এই কৌশল হলে বিএনপি থেকে জনগণ মুখ ফিরিয়ে নেবে বলে মনে করছেন মনে করছে সরকার।

৫. কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনে করছে লাগাতার কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি প্রধান লক্ষ্য হল দেশকে অস্থিতিশীল এবং সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়া। সেই পরিস্থিতি যেন কিছুতেই সৃষ্টি না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে। কোনো ভাবে জনজীবন যেন বিপন্ন না হয় সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আওয়ামী লীগ মনে করছেন যে, বিরোধী দলের আন্দোলন নয় বরং আন্তর্জাতিক চক্রান্ত আওয়ামী লীগকে ফেলতে পারে। তাই একদিকে জনগণকে নিয়ে মাঠ দখলে রাখা অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত মোকাবেলা করা এটি আওয়ামী লীগের এখন রাজনৈতিক কৌশল। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭