এডিটর’স মাইন্ড

কৌশলের খেলায় এগিয়ে গেল আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 29/07/2023


Thumbnail

বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সমালোচিত হচ্ছিল আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন মহল বলছিল পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ আসলে সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে, বিএনপিকে আরও শক্তিশালী করছে। এ নিয়ে ঘরে-বাইরে সমালোচিত আওয়ামী লীগ। শেষ পর্যন্ত কৌশলের খেলায় এগিয়ে গেল। গতকালকেও আওয়ামী লীগ বিএনপির মহাসমাবেশের পাল্টা হিসেবে তারুণ্যের শান্তির সমাবেশ ডেকেছিল বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের। এই সমাবেশ থেকে বিএনপিকে হুঁশিয়ারি করে দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ নেতারা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিলেন যে, জনগণকে নিরাপদ রাখতে এবং বিএনপি যেন নৈরাজ্য সৃষ্টি না করতে পারে সে জন্য সতর্ক অবস্থানের জন্য তারা এই কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। 

বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ উস্কানি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে এবং তারা সহিংসতা সৃষ্টি করার জন্যই পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। গতকালকের মহাসমাবেশ থেকে বিএনপি ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে। আর এই কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ পাল্টা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ নিয়ে যখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দুই দলের কাউকেই কর্মসূচি করার অনুমতি দেয়নি। এই অনুমতি না দেয়ার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়। এটাতেই আওয়ামী লীগ কৌশলে খেলায় এগিয়ে যায়। 

আজকের কর্মসূচি ছিল সহিংস এবং মারমুখী। বিভিন্ন স্থানে বিএনপির সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ ঘটেছে, সহিংসতা ঘটেছে। বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী, গাবতলী সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যে সংঘর্ষে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়েছে যে বিএনপি এখন একটা সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে। 

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন যে, ভাগ্যিস শেষ পর্যন্ত এই কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কর্মসূচি যদি থাকতো তাহলে এটিকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা দেয়া হতো যে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি সংঘর্ষ বা ওই সময় যদি আওয়ামী লীগের সদস্য উপস্থিত থাকতেন তাহলে বিএনপি হয়তো আওয়ামী লীগের ওপরই চড়াও হতেন। এর ফলে এই পুরো সহিংসতার দায় আওয়ামী লীগের ওপর বর্তাত। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হত যে আওয়ামী লীগের কারণেই সন্ত্রাস হয়েছে। আওয়ামী লীগের এই কর্মসূচি থেকে সরে আসাটা ছিল একটি বিচক্ষণ রাজনৈতিক কৌশল এবং এই এই কৌশল আওয়ামী লীগ আজ ভালোভাবেই জয়ী হয়েছে। এর ফলে আওয়ামী লীগের জন্য জনগণের কাছে এবং আন্তর্জাতিক মহলে প্রমাণ করার সহজ হল যে বিএনপি আসলে যতই শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা বলুক না কেন, তারা অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়। 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, আমরা আজকের কর্মসূচিতে ছিলাম না। তাহলে বিএনপি কেন সন্ত্রাস সহিংসতা করল। এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের জন্য আরেকটি ইতিবাচক দিক হল তাহল যে যখন বিএনপির কোনো কর্মসূচি পালিত হয় তখন যদি আওয়ামী লীগের কর্মসূচি দেয় তাহলে সেখানে সহিংসতার আশঙ্কা কম থাকে। বিএনপি তখন ভয় পায় এবং জানে যে জনগণ সচেতন আছে। আওয়ামী লীগ যখনই কর্মসূচি পালন করে না তখনই বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পথ বেছে নেয়। ফলে এতদিন ধরে বিএনপির সমান্তরাল কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ যে সমালোচিত হচ্ছিল সেই সমালোচনা থেকে মুক্তি পেল আওয়ামী লীগ। বরং আওয়ামী লীগ এখন জনগণের কাছে প্রমাণ করতে পারল যে কেন পাল্টা কর্মসূচি তারা দিচ্ছিল এবং এ ধরনের কর্মসূচি দেয়াটা কেন জরুরি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বারবার বলছিলেন যে, বিএনপি যদি একা কর্মসূচি পালন করে তাহলে তারা সন্ত্রাস করবে, জনজীবনকে অস্থির ককরে তুলবে। তার বক্তব্যই যেন প্রমাণিত হল আজকের ঘটনায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭