ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও: কূটনীতিকরা হতবাক


প্রকাশ: 29/07/2023


Thumbnail

বিএনপিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বারবার বলেছিল কর্মসূচি পালন করতে হবে শান্তিপূর্ণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গত ২৪ মে যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়েছিল সেখানে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যদি কোনো রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ বা মতপ্রকাশের অধিকারের বাধা দেওয়া হয় তাহলে ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হবে। বিভিন্ন সময় শিক্ষকের মত কূটনীতিকরা বিএনপি নেতাদেরকে আদর আপ্যায়ন করে তাদের দূতাবাসে বা কূটনীতিকপাড়ায় ডেকে শিখিয়ে পড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলন কিভাবে করতে হবে। 

বিভিন্ন মহল বলছিল যে, বিএনপি এখন অনেক দায়িত্বশীল রাজনীতি করছে। তার একটি বড় কারণ হল পশ্চিমা কূটনীতিকদের বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কূটনীতিকদের পরামর্শ। আর এ কারণেই বিএনপির প্রতি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো অনেকটাই সহানুভূতিশীল হয়ে উঠেছিল। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বারবার বলছিলেন যে, তার দল শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে এবং কোনভাবেই অশান্তি করবে না। আর যদি অশান্তির সৃষ্টি হয় সেটি সরকার বা আওয়ামী লীগ করবে। কিন্তু আজ সকাল থেকে ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রবেশমুখে যে ঘটনা ঘটল তাতে বিএনপির এতদিনের অর্জন সব ধুলিস্মাৎ হয়ে গেল। বরং বিএনপিকে বিশ্বাস করা যায় না, বিএনপিকে যে আস্থায় নেয়া যায় না এটি প্রমাণিত হল। আজকের এই অবস্থান কর্মসূচির পর কূটনীতিক মহল বিএনপির আচরণে হতবাক হয়ে গেছে। 

২৭ জুলাই বিএনপি প্রথম মহাসমাবেশ ডেকেছিল। এর আগের দিন ২৬ জুলাই মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদকে আমেরিকান ক্লাবে ডেকে নেন এবং তাদেরকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করতে বলেন। বিভিন্ন মহলের কৌশল ছিল যে, বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে জনমত সৃষ্টি করবে। আর অন্যদিকে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করবে। কিন্তু আজ যখন অসহিষ্ণু আচরণ শুরু করল, রাজনীতিতে সহিংস তৈরি করল তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সুযোগ পেল বিএনপিকে বাধা দেওয়ার। এর ফলে বিএনপি একটি সুদূরপ্রসারি সংকটে পড়ল বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কোন দেশই এরকমটি চায়নি। তারা এ ধরনের আক্রমণাত্মক এবং জনদুর্ভোগকারী কর্মসূচিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনোভাবেই সমর্থন দিতে পারে না। এটি তাদের প্রকাশ্য বক্তব্য। পাশাপাশি এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি না থাকায় এর জন্য আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করা যাবে না। অন্যদিকে যে পুলিশ অবস্থান গ্রহণ করেছে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সেটা অত্যন্ত যৌক্তিক। 

সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সের বিক্ষোভে পুলিশ এর চেয়েও নিষ্ঠুর ভাবে পরিস্থিতি দমন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের বিক্ষোভ মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর চেয়েও কঠোর অবস্থানে যায়। কাজেই বিএনপি রাজধানীকে অবরুদ্ধ করবে এবং পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করবে এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা  দিবেনা এটা তো হয়না। 

বিএনপির আজকের কর্মসূচি কোনো ভাবেই শান্তিপূর্ণ ছিল না। এটা কূটনীতিকরাও মানেন। হঠাৎ করে বিএনপি কেন বদলে গেল এবং তাদের একান্ত অনুগত থেকে কেন উশৃঙ্খল হয়ে গেল এ নিয়ে কূটনীতিকরা হতবাক হয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছেন। 

উল্লেখ্য, ২০০১ এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতিবাজ সংগঠন হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে তারেক জিয়াকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত সহ বিভিন্ন দেশে নানা প্রশ্ন ছিল। দীর্ঘদিন চেষ্টা তদবির করে বিএনপি নেতারা যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি করেছিলেন। কিন্তু আজকের ঘটনার পর পশ্চিমারা আবার বিএনপি সম্পর্কে নতুন করে ভাববে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭