ইনসাইড বাংলাদেশ

দপ্তরহীন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে যাবে বিএনপি?


প্রকাশ: 31/07/2023


Thumbnail

বিএনপি এক দফা আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন করছে। তারা বলছে যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না। অন্যদিকে দলটি আবার কূটনীতিক মহলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কতটুকু ছাড় দিতে পারবে এবং কি অবস্থার প্রেক্ষিতে তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তা নিয়ে দর কষাকষি করছে।

কূটনীতিক মহল এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে একটি অবস্থানে রয়েছে। তারা বলছে যে, যা কিছু সমাধান তা সব কিছু সংবিধানের আওতায় হতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেহেতু সংবিধানে নেই কাজেই এটি নিয়ে কূটনীতিক মহল সরকারের ওপর কোনো রকম চাপ সৃষ্টি করতে পারবে না। পশ্চিমা দেশের কেউ কেউ মনে করেন যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিটি অবাস্তব এবং অগ্রহণযোগ্য। আর তাই সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন কিভাবে সম্ভব সেটি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কথা বলছে। বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বলে দেয়া হয়েছে যে, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই তারা কিভাবে নির্বাচনে যেতে পারে তার একটি সমাধান কূটনীতিকদের সামনে উপস্থাপন করার জন্য।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা ছাড়াও নির্বাচনকালীন সরকার একটি বড় বিষয় হিসেবে সামনে এসেছে। বিভিন্ন কূটনীতিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, বিএনপি মনে করছে যে, নির্বাচনকালীন সরকার যদি সঠিক হয় তাহলে পরে অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। নির্বাচনকালীন সরকার কি রকম হতে পারে তা নিয়ে বিএনপি কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে আলোচনা করছে। এ ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে একাধিক প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

বিএনপির প্রথম পছন্দ ছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে এমন কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী করা যিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। তিনি আওয়ামী লীগের হলেও বিএনপির কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এ রকম একটি অবস্থানের ব্যাপারে কূটনীতিকরাই বিএনপিকে নিরুৎসাহিত করেছে। কারণ সংবিধান অনুযায়ী সংসদে সংখ্যাগরিষ্ট দলের নেতাই হবেন প্রধানমন্ত্রী। কাজেই সংখ্যাগরিষ্ট দলের নেতার বাইরে অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী করার সুযোগ সংবিধানে নেই। আর তাছাড়া যদি প্রধানমন্ত্রী অন্য কেউ হন তাহলে সেই দাবি আওয়ামী লীগ কোনো অবস্থাতেই মানবে না। এ রকম বাস্তবতায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে দায়িত্বে রেখেই একটি নির্বাচনকালীন সরকারের রূপ রেখা খুঁজে বের করার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে। এক্ষেত্রে বিএনপির কোন কোন নেতা মনে করছেন যে, যদি প্রধানমন্ত্রীর কোনো দপ্তর না থাকে, তিনি যদি দপ্তরবিহীন প্রধানমন্ত্রী হন এবং একটি নিরপেক্ষ উপদেষ্টামন্ডলী প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে পরামর্শ এবং সহযোগিতা করেন তাহলে পরে বিএনপি নির্বাচনের ব্যাপারে ভাবতে পারে। তবে বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, এ ধরনের প্রস্তাব সঠিক নয়, এটি একটি গুজব। বিএনপি এখন পর্যন্ত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবির বাইরে কোনো কিছু ভাবছে না এবং তারা মনে যে, আন্দোলনের মাধ্যমে এই দাবি আদায় করা সম্ভব।

বিএনপির পক্ষ থেকে এটাও বলা হচ্ছে যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা যেমন কোন নির্বাচনে যাবে না সে রকম কোন নির্বাচন হতেও দেবে না। এ রকম পরিস্থিতিতে কূটনীতিক মহল আশাবাদী। তারা মনে করছে বিএনপি বাইরে যে কথাই বলুক না কেন ভেতরে তারা অনেক নমনীয় এবং তারা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো রকম অবস্থার প্রেক্ষিতে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তা আরও আলোপ আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে। তবে যে সমাধানেই হোক না কেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে রেখেই হতে হবে বলে কূটনীতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। অর্থাৎ নির্বাচনকালীন সরকার যেভাবেই গঠিত হোক না কেন তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বা নিবার্হী হিসেবে থাকছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭