বর্তমান সরকারকে কাবু করার জন্য একাধিক লবিস্ট নিয়োগ করেছে বেনপি এবং জামায়াত। এই লবিস্টদের পেছনে তারা শত শত কোটি টকা খরচ করেছে গত কয়েক বছরে। আর এই সমস্ত লবিস্টদের কারণেই বিভিন্ন কংগ্রেসম্যান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছেন। আর এ সমস্ট লবিস্টদের তৎপরতার কারণেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশের ওপর নতুন ভিসানীতি আরোপ করেছে, গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি। বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বড় কারণ হল বিএনপি জামায়াতের লবিং। বিএনপি নিজেরাও স্বীকার করেছে যে, তাদের তিনটি লবিস্ট ফার্ম এখানে কাজ করছে। আর এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশ সরকারের এক ধরনের অস্বস্তিকর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এ সমস্ত লবিস্টরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নীতিনির্ধারক এবং প্রভাবশালী মহলের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি জামায়াতের বক্তব্য গুলোই তুলে ধরছে এবং এ ধরনের বক্তব্যের ভিত্তিতেই একতরফাভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। কিন্তু সরকার এবং আওয়ামী লীগও বসে নেই। এসবের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সরকারও এখন বেশ কিছু লবিস্ট ফার্ম নিযুক্ত করেছে, যেসকল লবিস্ট ফার্মগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি-জামায়াতের অপপ্রচারের পাল্টা জবাব দিচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে যে, বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ত্রিমুখী অস্ত্র ব্যবহার করছে।
প্রথমত, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দূতাবাসে যিনি রাষ্ট্রদূত আছেন মোহাম্মদ ইমরান তিনি অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বিভিন্ন মহলের সঙ্গে দেখা করছেন, যারাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছে তাদের সঙ্গেই সাক্ষাৎ প্রার্থনা করা হচ্ছে। তাদেরকে প্রকৃত অবস্থা বুঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে লিখিতভাবেও তাদেরকে অবহিত করা হচ্ছে। শুধু রাষ্ট্রদূত একা নন, দূতাবাসের অন্যান্য কূটনীতিকরাও জনসংযোগ বাড়িয়েছেন এবং তারা মার্কিন পরাষ্ট্র দপ্তর এবং ওয়াশিংটনে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রক্ষা করা শুরু করেছেন। এর ফলে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য যাচাই বাছাই করেই যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করবে না বলেই অনেকে মনে করেন।
দ্বিতীয়ত, স্থানীয় বাঙালি যারা প্রভাবশালী তারাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কাজ শুরু করেছেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে
যাচাই বাছাই না করেই নেতিবাচক তথ্যের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে সেজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা তৎপরতা শুরু করেছেন। একাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন মহলে কথা বলছেন, যোগাযোগ করছেন এবং তাদের কাছে প্রকৃত বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।
তৃতীয়ত, ইতিমধ্যে র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য বাংলাদেশ একটি লবিস্ট ফার্মের জন্য চুক্তি করেছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘটনা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এর সঙ্গে মানবাধিকার সুশাসন, গণতন্ত্র ইস্যু জড়িত রয়েছে। তাই ওই লবিস্ট ফার্ম একাধারে এখন সবগুলো বিষয়ের দিকে নজর রাখছে এবং তারা র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য যেমন প্রক্রিয়াগত কাজ করছে ঠিক তেমনিভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতেও বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যেন ভুল বুঝাবুঝি আর বৃদ্ধি না পায় সেটি মাথায় রেখেও বিভিন্ন তৎপরতা চালাচ্ছে। এখসন দৃশ্যত বাংলাদেশ নিয়ে কূটনীতিক লাড়াই হচ্ছে ওয়াশিংটনে। দেখার বিষয় যে, এই লড়াইয়ে কে জিতে।