ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশের নির্বাচন: জাতিসংঘ মডেল নিয়ে তোলপাড়


প্রকাশ: 01/08/2023


Thumbnail

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার জন্য বিবৃতি দিয়েছেন ১৪ জন কংগ্রেসম্যান। এই ১৪ জন কংগ্রেসম্যান প্রথম নয়, এই ১৪ জনের আগেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকজন পার্লামেন্টেরিয়ান  এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন সিনেটরও একই রকম বিবৃতি দিয়েছিলেন। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন কি এবং কিভাবে সে নির্বাচন সম্ভব এ নিয়ে বিভিন্ন কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে বাংলা ইনসাইডারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। তারা যদিও বলেছেন যে, এখন পর্যন্ত তারা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের দাবিকে সমর্থন করেননি। যে সমস্ত কংগ্রেসম্যানরা এ ধরনের বিবৃতি দিয়েছেন এটি তাদের নিজস্ব বিষয়। তবে এ সমস্ত কংগ্রেসম্যানরা বাংলাদেশে নির্বাচনের একটি মডেল চিন্তা করেছেন বলে জানা গেছে এবং এই মডেলটি বাংলাদেশে অবস্থানরত একাধিক দূতাবাসের কাছে দেয়া হয়েছে। যদিও কেউই এটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। এই মডেলে বর্তমান সরকারকে বহাল রেখেই নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সার্বিক বিষয় তদারকি করবে। জাতিসংঘের বাংলাদেশস্থ মিশনের মাধ্যমে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে আসবে। তারা নির্বাচন কমিশনের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করবে এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে এই নির্বাচনে কোন রকম সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন বা সরকার গ্রহণ করবে না। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। তারা বলছে যে, তত্ত্বাবদায়ক সরকার ছাড়া কোন নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বর্তমান সংবিধানে নেই। আর সংবিধানে না থাকার কারণে এই দাবি পূরণ করা সম্ভব নয়।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যা কিছু করতে হবে তা সংবিধানের আওতায় করতে হবে। সংবিধানে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোন বিধান নেই। আর এ কারণেই এটি বাস্তবায়ন সম্ভব না। এ রকম বাস্তবতায় বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের অনমনীয় অবস্থান দূর করার জন্য তারা কাজ করছে। তারা মনে করছে যে, নির্বাচনকালীন যদি একটি সরকার গঠন গঠিত হয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে। সেই সরকারে যদি আওয়ামী লীগ, বিএনপি সহ সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদেরকে মন্ত্রিসভায় অর্ন্তভূক্ত করা হয় এবং সামগ্রিক নির্বাচন তদারকি জাতিসংঘের মাধ্যমে  হয় তাহলে একটি সমাধান হতে পারে। তবে কূটনৈতিক মহল মনে করছে যে, এই ধরনের ব্যবস্থাটি সাধারণত করা হয় যে সমস্ত দেশ গৃহ যুদ্ধে আক্রান্ত বা যুদ্ধ পরবর্তী অবস্থা। বাংলাদেশ কোনভাবেই এখন পর্যন্ত এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়েনি। কাজেই বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত এই রকম প্রক্রিয়ায় করা হবে কি হবে না সেটি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ স্থানীয় নেতা বলেছেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের দাবি অযোক্তিক, হাস্যকর এবং অপ্রাসঙ্গিক। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তো গতবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুরো দেশ বিভক্ত ছিল। সেখানে কি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন যে, ব্রিটেনে বা ভারতে যেভাবে হয় বাংলাদেশেও একই পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে।

দেখা গেছে যে, বিভিন্ন দেশগুলো যেখানে গৃহ যুদ্ধের অবসান হওয়ার পর নির্বাচন হয়েছে বা যে দেশ যুদ্ধ করে সদ্য স্বাধীন হয়েছে এরকম দেশগুলোতে বিবেদ্যমান পক্ষকে সমঝোতায় আনার জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন হয়। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন মানে হল সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন যায় গোলযোগ এড়ানোর জন্য। এছাড়াও পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা আয়োজন করে জাতিসংঘ। সে রকম পরিস্থিতি বাংলাদেশে কোন অবস্থাতেই নাই। তাছাড়া একটি গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনের ধারাবাহিকতার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের মডেল অনুসরণ করার কোন ম্যান্ডেট বিশ্ব সংস্থাটির নেই বলেও বিভিন্ন মহল বলছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭