ইনসাইড বাংলাদেশ

বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে লুট করে, না থাকলেও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়: প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশ: 02/08/2023


Thumbnail

বিএনপি কত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, এরা মানুষের জাত না- বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় থাকলে লুট করে। আর ক্ষমতায় না থাকলেও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তারা শুধু জ্বালাও-পোড়াও আর ধ্বংসই করতে পারে। খালেদা জিয়া ও তার কুপুত্র তারেক জিয়া লুটপাট করতে জানে। তারা ধ্বংস করে আর আমরা সৃষ্টি করি। নৌকা ক্ষমতায় এলে কাজ হয় আর অন্য কেউ এলে কোনো কাজ হয় না।’

বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে অনেক আন্দোলন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছি। মানুষ এখন শান্তিতে ভোট দিতে পারে। ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার তালিকাও করেছি। আমরা প্রত্যেক এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি। নারীদের জন্য কাজের সুবিধা করে দিয়েছি। আমাদের কাজের লক্ষ্য দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করা, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নতি করা। এ অঞ্চলে জীবনেও দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে না, মঙ্গা দেখা দেবে না। বাংলাদেশে কোনো ভূমিহীন মানুষ থাকবে না। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তায়নও করবো।’

বাংলাদেশে বিদ্যুতের আর কোনো সমস্যা থাকবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ওয়াদা দিয়েছিলাম সব ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব, আজকে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। কয়লার দাম ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ নিয়ে কয়েকদিন কষ্ট হয়েছে। এরপর এখন ঠিক হয়ে গেছে। বিদ্যুতের আর কোনো সমস্যা থাকবে না। আমি খালি হাতে আসিনি। আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। যাতে প্রত্যেকটা উন্নয়ন তরান্বিত হয় তার ব্যবস্থা করেছি।’

তিনি বলেন, গাইবান্ধায় বিশাল সোলার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ২০০ মেগাওয়ার্ড বিদ্যুৎ সেখান থেকে আসবে। সেই ব্যবস্থা করেছি। আমি খালি হাতে আসিনি। আপনাদের জন্য উপহার নিয়ে এসেছি। কিছুক্ষণ আগে আমি কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করেছি।  যাতে প্রত্যেকটা উন্নয়ন তরান্বিত হয় তার ব্যবস্থা করেছি। একই সঙ্গে এতো প্রকল্প কেউ করে দিয়েছে কী না আমি জানি না।  

জাতির পিতাকে অবৈধভাবে হত্যার পর মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছিল। সে সময় বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরেছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘দেখেছি মানুষের হাহাকার। আমাদের প্রতিজ্ঞা ছিল যখন সরকার গঠন করতে পারবো তখন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবো। আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেসব স্বপ্ন দেখে গেছেন- তা পূরণ করছি। দেশের দারিদ্র্যের হার কামাতে পেরেছি। ক্ষুধামুক্ত দেশ করতে পেরেছি।’

আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় রংপুরে কোনোদিন মঙ্গা হয় নাই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ দল সরকারে এলে এবং নৌকায় ভোট দিলে- মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়- আমরা তা প্রমাণ করেছি। খালেদা জিয়া মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর এসবের পরিবর্তন হয়েছে। সাড়ে ১৪ বছর যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান আমরা করতে পেরেছি। ট্রেনিং দিয়েছি, কাজের ব্যবস্থা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘রংপুরকে বিভাগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগ কৃষকের বন্ধু। কুষকদের জন্য কুড়িগ্রামে ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সারের দাম কমিয়ে দিয়েছি। অথচ খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে কৃষক সার চাইলে গুলি করে হত্যা করেছেন।’

এর আগে দুপুর ২টায় তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রংপুর সেনানিবাস হেলিপ্যাডে পৌঁছায়। এরপর সড়কপথে সার্কিট হাউজে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সভায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

দুপুর সোয়া ১২টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে জনসভার কার্যক্রম। রংপুরের ঐতিহাসিক জিলা স্কুল মাঠ নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে যায়। মাঠ ছাড়িয়ে প্রধান সড়কের দুদিকে অবস্থান নেন বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা। নানা রঙের পোশাক আর বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে গান গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এছাড়া সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, নৌ পরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান, সাবেক সাংস্কৃতিক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দীসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭