ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচনকালীন সরকারে থাকতে চায় সুশীলরা


প্রকাশ: 03/08/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন প্রকিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে- তা এখনও নিশ্চিত নয়। কিন্তু এই নির্বাচন পরিচালনার জন্য যে সরকার গঠিত হবে, সেই সরকারে সুশীলরা তাদের হিস্যা চায়। যে প্রক্রিয়ায়ই নির্বাচন হোক না কেন, সে নির্বাচনে যেন সুশীল প্রতিনিধিরা থাকে, তা নিয়ে সুশীলরা এখন কূটনীতিক মহলে দেন-দরবার করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রভাবশালী প্রতিনিধিরা নির্বাচনকালীন সরকারে তাদের রাখার প্রস্তাব করছেন। উল্লেখ্য যে, বিএনপি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। বিএনপি বলছে, দলীয় সরকারের অধীনে তারা কোনো নির্বাচন করবে না। অন্যদিকে সরকার বলছে, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক। এই দাবি গ্রহণযোগ্য নয় এবং এই দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। 

আর এ কারণেই কূটনৈতিক মহল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির অনঢ় অবস্থানের মাঝামাঝি একটি সমাধানের পথ খুঁজছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে রেখে একটি নির্বাচনকালীন সরকার কিভাবে গঠন করা যায়, তা নিয়ে কূটনৈতিক পাড়ায় দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। আর এ বৈঠকে সুযোগ সন্ধানী সুশীলরা তাদের অভিমত ব্যক্ত করছেন। সুশীলদের পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকারে তাদের থাকা নিয়ে তিনটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে প্রথমটি হলো- 

১. তত্ত্বাবধায়ক সরকার: সুশীলদের প্রথম পছন্দ হলো একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন এবং তারা বিএনপির দাবিকে সমর্থন করছেন। সুশীলদের অন্যতম নেতা সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেই দিয়েছেন যে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। তাই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়- বলে সুশীলদের এই শিরোমণি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। শুধু বদিউল আলম মজুমদার একা নয়, বদিউল আলম অন্য সুশীল প্রতিনিধিদের কন্ঠস্বর মাত্র। কাজেই বদিউল আলম মজুমদারের মতো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, আসিফ নজরুলরাও মনে করেন- আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়া উচিৎ। 

এটি যদি যদি হয়, তবে নির্বাচনকালীন সরকারটি হবে, সুশীল অধ্যুষিত একটি সরকার, যে সরকারে সুশীলরাই রাজত্ব করবেন। তবে আওয়ামী লীগ এ রকম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়েও নির্বাচন অসম্ভব। সে কারণেই একটি সমঝোতার পথ খোঁজা হচ্ছে। আর তাই শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অর্জিত হবে- এমনটা মনে করেন না সুশীলরা। 

এই অবস্থায় তারা যেন সর্বস্ব না হারান- এজন্য আরও দুটি বিকল্প প্রস্তাব রয়েছে তাদের কাছে। দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাবটি হলো- 

২. প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দশ সদস্যের নিরপেক্ষ উপদেষ্টামণ্ডলী: দ্বিতীয় বিকল্প প্রস্তাবে তারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সময়ে একটি দশ সদস্যের নিরপেক্ষ উপদেষ্টামণ্ডলী রাখার প্রস্তাব করেছেন। এই দশ সদস্যের নিরপেক্ষ উপদেষ্টামণ্ডলী নির্বাচনকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিবেন এবং প্রধানমন্ত্রী তাদের পরামর্শের আলোকে রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। মূলত, তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ছাড়া বাকি উপদেষ্টারা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন- এই প্রস্তাবটি নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।

৩. রাষ্ট্রপতির অধীনে উপদেষ্টামণ্ডলী: তৃতীয়ত নির্বাচনকালীন সরকারে রাষ্ট্রপতির অধীনে একটি উপদেষ্টামণ্ডলী গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যে উপদেষ্টামণ্ডলী রাষ্ট্রপতিকে নিয়মিত পরামর্শ দিবেন এবং প্রধানমন্ত্রী দপ্তরবিহীন থাকবেন। রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হবে। তবে এটি সাংবিধানিকভাবে কতটুকু বিধিসম্মত- তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠেছে। 

তবে যে প্রক্রিয়াতেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক না কেন, সেখানে সুশীলরা যেন থাকতে পারেন- তা নিশ্চিত করার জন্যই তারা চেষ্টা তদবির করে যাচ্ছেন। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭