ইনসাইড পলিটিক্স

সিঁথি দেশে এলেই মুখ খুলবেন খালেদা


প্রকাশ: 03/08/2023


Thumbnail

বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্রমশ তীব্র হয়ে ওঠছে। লন্ডন থেকে তারেক জিয়া আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার নিষেধাজ্ঞার কারণে সেই কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারছে না বিএনপি। দলটির মধ্যে মা-ছেলের দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে, যার ফলে বিএনপি এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েও এখন কর্মসূচিহীন। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বেগম খালেদা জিয়া নাটকীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যাচ্ছেন এবং খুব শিগগিরই প্রকাশ্যে তিনি মুখ খুলবেন। তবে প্রকাশ্যে মুখ খোলার আগে বেগম খালেদা জিয়া তার দ্বিতীয় পুত্রবধু শর্মিলা রহমান সিঁথির জন্য অপেক্ষা করছেন। সিঁথি চলতি মাসেই বাংলাদেশে আসার কথা। বাংলাদেশে এলেই বেগম জিয়া মুখ খুলবেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়া গত এক মাসে অন্তত তিনবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ডেকে পাঠিয়েছেন। সর্বশেষ গত ১লা আগস্ট মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। এই দুই নেতার মধ্যে কি কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিএনপির নেতারা কিছুই জানেন না। তবে বেগম খালেদা জিয়া যে আন্দোলনের লাগাম টেনে ধরতে বলেছেন, সেটি নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই। 

বিএনপির পক্ষ থেকে এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এক দফা ঘোষণার পরপরই বিএনপি ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকে। ২৮শে জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচির পরদিনই ২৯ জুলাই ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে অবস্থান গ্রহণ করে বিএনপি। এই কর্মসূচি ঘোষণার পক্ষে ছিলেন না বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। তারেক জিয়ার আগ্রহে এবং রীতিমতো ধমকে এই কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয় বিএনপি। কিন্তু এই কর্মসূচিতে সহিংসতা হয়। বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিপন্ন করার অভিযোগ ওঠে। এটি নিয়ে কূটনৈতিক মহলেও বিএনপি প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। 

গতকাল একটি পাঁচতারকা হোটেলে কূটনীতিকদের মধ্যাহ্নভোজের দাওয়াত দিয়েছিল বিএনপি নেতারা। সেখানেও বিএনপির এই জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির সমালোচনা করেন কূটনীতিকরা। তারা জানতে চান, এসব কেন হচ্ছে? যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, এসব সরকারের কারসাজি, সরকারই এসব করিয়ে বিএনপির উপর নাম দিচ্ছে। কিন্তু কূটনীতিকরা সবকিছুর খোঁজ-খবর রাখেন। বিএনপির কথা তাদের কাছে, কতটুক বোধগম্য হয়েছে- তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। 

এই ২৯শে জুলাইয়ের পরপরই বেগম খালেদা জিয়া তলব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এবং এই ধরনের জ্বালাও-পোড়াও ধ্বংসাত্বক আন্দোলনের পরিণাম যে ভালো হয় না- সে ব্যাপারে তাকে সতর্ক করেন। এরপর থেকেই বিএনপি কর্মসূচির মধ্যে নেই। গতরাতেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথে যুক্ত হন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। ওই দিনই তারেক জিয়া ৯ বছরের কারাদণ্ডে এবং তার স্ত্রীকে ৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। তারেক জিয়া এই কারাদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। ফলে এক দফা আন্দোলন থেকে দৃশ্যত সরে গেল বিএনপি। আর বিএনপির এই হঠকারি সিদ্ধান্ত এবং তারেক জিয়ার খেয়াল-খুশিমতো দল পরিচালনা করা পছন্দ করছেন না বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আর এজন্যই তিনি প্রকাশ্যে মুখ খুলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, সরকারের সঙ্গে বেগম জিয়ার সমঝোতা এখন চূড়ান্ত প্রায়। আর এই সমঝোতার অংশ হিসেবেই বেগম জিয়া এখন মুখ খুলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সবকিছু অপেক্ষা করছে সিঁথির জন্য। বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, সিথির সঙ্গে সরকারের প্রভাবশালী মহলের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭