ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচন: পশ্চিমাদের দাবি মেটাতে শুরু করেছে সরকার


প্রকাশ: 07/08/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন সুষ্ঠুভাবে হয় এবং সংবিধানে বেঁধে দেওয়া সময়ের সীমা এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করে হয় সেজন্য পশ্চিমাদের সাথে কাজ শুরু করেছে সরকার। পশ্চিমা বিশ্বের যে সমস্ত দাবি সে দাবি-দাওয়া গুলো মেটানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আজ মন্ত্রিসভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। এই আইনের যে সমস্ত ধারার ব্যাপারে পশ্চিমা বিশ্ব গুলো আপত্তি জানিয়েছিল সেই ধারা গুলো সংশোধন করে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে বলে আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অজামিনযোগ্য ধারা গুলো বাতিল করা হবে। সাংবাদিকদেরকে গ্রেপ্তার এবং জেলের বদলে তাদের জরিমানার বিধান রাখা হবে এবং একাধিক সংশোধনী এনে আইনটিকে যুগোপযোগী করা হবে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘসহ একাধিক পশ্চিমা দেশ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আপত্তিকর ধারাগুলো সংশোধনের দাবি করে আসছিল। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় অঙ্গীকার করা হয়েছিল যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হবে। এটি নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের ওপর একটি বড় ধরনের চাপ ছিল। আর সে কারণেই সরকার শেষ পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা আইন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিল। এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলোর আস্থা অর্জন সরকারের জন্য সহজ হবে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, নির্বাচনের আগের সরকার দুর্নীতি দমন সহ আরও বিভিন্ন বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর পরামর্শ গ্রহণ করবে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আগামী নির্বাচন ইস্যুর বাইরে পশ্চিমা দেশগুলোর পাঁচটি বিষয় ছিল। তার মধ্যে একটি ছিল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এছাড়াও দুর্নীতি দমন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করার একটি প্রস্তাবনা আছে পশ্চিমা  দেশগুলোর পক্ষ থেকে। সে ব্যাপারেও সরকার কাজ করছে বলে জানা গেছে। মানবাধিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর একটি বড় ইস্যু। তারা গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং বিনা বিচারে আটক ইত্যাদি বিষয়ে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে সরকারের কাছে। 

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সেই সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি হচ্ছে প্রশাসন এবং পুলিশকে নিরপেক্ষ অবস্থানে রাখা। তারা যেন দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কাজ না করে সে ব্যাপারে সরকার কাজ করছে বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি নিশ্চিত করেছে। প্রশাসন যেন নিরপেক্ষ এবং বস্তুনিষ্ঠভাবে কাজ করে সেই জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশকে যেন বাধাগ্রস্থ না করা হয় এমন আহ্বান পশ্চিমা দেশগুলো থেকে নির্বাচনের আগে বারবার করা হচ্ছে। সরকার এখন মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে কোন রকম হস্তক্ষেপ করছে না। শুধুমাত্র দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে যারা অবনতি ঘটাতে চাইছে তাদের ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে গেছে। এটি সরকারের দায়িত্ব। জনগণের জানমাল হেফাজত করার যেকোন গণতান্ত্রিক সরকারের দায়িত্ব। 

সরকার চাইছে আগামী নির্বাচনের আগে যেন পশ্চিমা দেশগুলো সরকারের ওপর কোন ধরনের চাপ সৃষ্টি না করে। বিশেষ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে যেন পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সরে আসে সেজন্যই সরকার এই দাবিগুলো মেটাতে যাচ্ছে। এর ফলে একটি সহনশীল অবস্থা তৈরি হবে, রাজনৈতিক সমঝোতার দরজা খুলে যাবে এবং বাংলাদেশে যে দলই অংশগ্রহণ করুক না কেন একটি গ্রহণযোগ্য অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে পশ্চিমা দেশগুলোর সম্মতি পাওয়া যাবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭