ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের পর বিএনপি: ভারতেই হচ্ছে আসল রাজনীতি


প্রকাশ: 07/08/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগের পাঁচ শীর্ষ নেতা এখন ভারতে অবস্থান করছে। ড. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে পাঁচ নেতা বিজেপির বিভিন্ন উচ্চপদস্থ নেতৃবৃন্দ এবং থিঙ্কট্যাঙ্কদের সাথে বৈঠক করছেন। আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতার বৈঠক শেষ হওয়ার পরপরই ভারত সফরে যাবেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ এর নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ভারতে যাবার সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। তবে গোপনীয়তার স্বার্থের ঠিক কবে তারা যাবে এটি চূড়ান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, চলতি মাসের যেকোনো এক সময় বিএনপির নেতৃবৃন্দ ভারত সফর করবেন। একইভাবে তারা বিজেপির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করবেন। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে যেমন বিজেপি আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ঠিক তেমনি বিএনপির নেতৃবৃন্দকে বিজেপির পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। 

আগামী সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সফর উপলক্ষে ভারতে যাবেন এবং এই দুই পক্ষের আলাপ-আলোচনার পর চূড়ান্তভাবে প্রধানমন্ত্রীর সফর সময় বাংলাদেশের নির্বাচন এবং রাজনীতির গতিপথ নির্ধারিত হবে। একাধিক সূত্র বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে যতই দৌড়ঝাঁপ করুক বা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একদফা আন্দোলন দিয়ে যতই উত্তপ্ত হোক না কেন রাজনীতির আসল খেলাটা হচ্ছে ভারতে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ হবে নয়া দিল্লিতেই। আর সেজন্যই প্রধান দুই দলের নেতৃবৃন্দের ভারত সফর। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যেমন বিজেপির নেতৃবৃন্দ এখন কথা বলছেন ঠিক তেমনি বিএনপির সঙ্গেও আগামী নির্বাচন এবং ভারতের চাওয়া পাওয়া ইত্যাদি নিয়ে কথা বলা হবে। 

ভারত কোনো ভাবেই বাংলাদেশে তার স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে এটা চায়না। ভারতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন এবং বাংলাদেশের যেন সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থান না ঘটে সেটা নিশ্চিত করা। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশে যদি কোন মৌলবাদী বা সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটে সেটি ভারতের জন্য বিপদজনক। পাশাপাশি গত ১৫ বছর বাংলাদেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জায়গা হয়নি। এই জায়গায় বাংলাদেশ শূন্য সহিষ্ণুতা নীতিতে ছিল। এটা ভারতের জন্য সবচেয়ে স্বস্তির খবর। এই স্বস্তিদায়ক অবস্থা থেকে ভারত সরে যেতে চায় না। তাই ভারত মনে করে এমন কোন দল বা সরকারের ক্ষমতায় আসা ঠিক হবে না যারা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদদ দিবে এবং ভারতের স্থিতিশীলতা নষ্টের ক্ষেত্রে কাজ করবে। এই বিবেচনা থেকেই ভারত রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি সমঝোতার দিকে নিয়ে আসতে চাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেমন প্রকাশ্যে অনেক কথা বলছে এবং তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছে ভারতের বিষয়টা তেমন না। বরং ভারত খুব ঠান্ডা মাথায় রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। তবে কূটনৈতিক মহল মনে করছেন, বাংলাদেশ নিয়ে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথক অবস্থানে নেই। বরং দুজনেই একই অবস্থানে রয়েছে। দুটি দেশই বাংলাদেশে যেন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সে ব্যাপারে কাজ করছে। 

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে বাংলাদেশে হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে কিন্তু বাস্তবতা হলো যে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন এবং রাজনীতি নিয়ে অভিন্ন কৌশল রয়েছে। আর এই অভিনব কৌশলের কারণে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান কেন্দ্র হিসেবে দিল্লিকে বেছে নেয়া হয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭