ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

এফবিআইয়ের জালে ১০ বাংলাদেশি: জব্দ হতে পারে সম্পদ


প্রকাশ: 09/08/2023


Thumbnail

বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার এবং দুর্নীতি নিয়ে এখন সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক দুর্নীতি বিভাগীয় সমন্বয়কারী রিচার্ড নেফিউ সফর করে গেছেন। আর এই সফরের পর এই সফরকে ঘিরে এখন বাংলাদেশের অর্থ পাচারের বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে। আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন যে, এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং যে সমস্ত ব্যক্তি অর্থ পাচার করেছে তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার এখতিয়ার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে। এর মাধ্যমে সুস্পষ্ট হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোতে যারা অবৈধ উপায়ে সম্পদ গড়েছেন তাদের সম্পদও বাজেয়াপ্ত করতে পারেন। 

বিভিন্ন সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে যে, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থ পাচার করে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় যারা সম্পদ করেছেন এরকম অন্তত ১০ জনের ব্যাপারে এফবিআই এখন তদন্ত করছে। যেকোনো সময় তাদের সম্পদ জব্দ হতে পারে। এই সম্পদ জব্দ হলে বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় বার্তা হবে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর মনে করছেন। তারা বলছে, দুই দেশ অর্থ পাচার রোধ এবং দুর্নীতি বন্ধের জন্য একসাথে কাজ করছে এবং আরও নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবনের চেষ্টা করছে। আর এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অর্থাৎ অবৈধভাবে অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ জব্দ করলে অর্থ পাচার প্রতিরোধে তা কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে। 

যে ১০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তদন্ত করছে তাদের মধ্যে একজন সাবেক আমলা রয়েছেন। যিনি একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক চাকরি করতেন। কূটনীতিক চাকরির সুবাদে তার স্ত্রীর নামে একাধিক বাড়ি কিনেছেন নিউইয়র্কে। ওই কর্মকর্তা পরবর্তীতে বাংলাদেশে আসেন এবং তিনি সচিব পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার একাধিক বাড়িসহ বিভিন্ন সম্পদ রয়েছে। তার এই সমস্ত অর্জিত সম্পদ নিয়ে এফবিআই তদন্ত করছে। ‍শুধু এই আমলা নয়, অবসরে যাওয়া আরেকজন আমলাও বিপুল পরিমাণ সম্পদ কানাডায় পাচার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সচিব থাকা অবস্থায় তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন এবং একটি বড় প্রকল্পের কাজ তিনি যখন এসেছিলেন তখন শুরু হয়েছিল। বর্তমানে কানাডায় তার বিপুল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে যেটি নিয়ে এফবিআই তদন্ত করছে। 

বর্তমানে চুক্তিতে থাকা একজন পদস্থ কর্মকর্তারাও একাধিক বাড়ির বিষয়টির এফবিআই তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। যদিও এই কর্মকর্তা দাবি করেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার কোনো সম্পদ নেই। যা আছে সেগুলো তার পুত্র এবং স্ত্রীর। সেখানে বড় ধরনের চাকরি করেন এবং তাদের সম্পদ থাকতেই পারে। কিন্তু এফবিআই এ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালাচ্ছে বলেও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা ও এমপির একাধিকবার বাড়ির খবর পাওয়া গেছে এবং তার বিরুদ্ধেও তদন্ত অব্যাহত আছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের এক প্রয়াত সাবেক মন্ত্রীর পুত্র দীর্ঘদিন ধরে নিউইয়র্কে বসবাস করেন। সেখানে তার বিপুল বৃত্তের খবর পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধেও এফবিআই এখন তদন্ত শুরু করেছে। এছাড়াও চারজন আলোচিত ব্যবসায়ী যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় বিপুল পরিমাণ সম্পদ তৈরি করেছেন। এই সমস্ত সম্পদের বিষয়েও এফবিআই অনুসন্ধান করছে। এছাড়াও দুজন বর্তমান এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অনুসন্ধান চলছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, এফবিআই তদন্তের তিনটি ধাপ রয়েছে। প্রথম ধাপে তারা দেখবে যে সমস্ত সম্পদ গুলো তারা যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় কিনেছেন সেই সম্পদগুলো বৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ থেকে কিনা বা কি উপায়ে তারা এই সম্পদের মালিক হয়েছেন। এমনকি তাদের আত্মীয়-স্বজনরাও যখন এই সম্পদের মালিক হয়েছেন তখন তাদের আর্থিক অবস্থা কি ছিল। দ্বিতীয়ত, যদি তারা দেখেন যে এটি বৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ থেকে তারা করেছেন সে ক্ষেত্রে এই তদন্ত সেখানেই শেষ হবে। কিন্তু যদি দেখা যায় যে, অবৈধ পন্থায় বা বিদেশ থেকে অর্থ এনে এটা করা হয়েছে তাহলে সেক্ষেত্রে এই সম্পদ গুলো জব্দ হতে পারে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো সূত্রগুলো বলছে, এর আগেও মেক্সিকো, নাইজেরিয়া এবং মধ্য প্রাচ্যের একাধিক ব্যক্তির অবৈধ সম্পদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জব্দ করেছিল। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭