ইনসাইড পলিটিক্স

সেপ্টেম্বর টার্গেট বিএনপি’র, অক্টোবর আওয়ামী লীগের


প্রকাশ: 10/08/2023


Thumbnail

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান দুটি দলের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা আস্তে আস্তে বাড়ছে। বিএনপি এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। এক দফা দাবিতে তারা আগস্ট জুড়েই কিছু কিছু কর্মসূচি পালন করবে। সেপ্টেম্বরে তারা সরকারকে বড় ধরনের ধাক্কা দিতে চায়। বিএনপি’র একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরে তারা কিছু নিত্য নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে টালমাটাল করে দিবে। আর সে লক্ষ্যে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেমন জেলা প্রশাসকদের কার্যালয় ঘেরাও, সচিবালয় ঘেরাও, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও’র মতো কর্মসূচিগুলোর কথা বিএনপি নেতারা ভাবছেন এবং অত্যন্ত গোপনীয়তার মাধ্যমে তারা আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করছেন। 

বিএনপি নেতারা নিশ্চিত করেছেন, সেপ্টেম্বরের ১ মাস তারা সরকারকে দম ফেলার সুযোগ দেবে না এবং এই রকম একটি পরিস্থিতি তৈরি করেই তারা সরকারকে পতন করবে। এ সময় টার্গেট কিলিং এবং অগ্নিসংযোগ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে বলে বিভিন্ন মহল আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন, সেপ্টেম্বরে যদি তারা একটি অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করে সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে বাধ্য করতে পারে, তাহলে তারা আন্দোলনে বিজয়ী হবে। অন্যথায় তাদেরকে নির্বাচনের পথেই যেতে হবে। অর্থাৎ এক মাসের একটি টর্নেডো দিয়ে বিএনপি সরকারকে হঠাতে চায়। আর যদি তাতে সফল না হয়, তাহলে অক্টোবরে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। এটিই বিএনপির কৌশল। কাজেই সেপ্টেম্বর মাসে দেশের রাজনীতিতে আবার ২০১৩-১৪’র মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। 

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী রাজনীতিতেই অটল থাকতে চায়, যত বিদেশি চাপ বা হস্তক্ষেপ হোক না কেন- আওয়ামী লীগ সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রেখে নির্বাচনের পথে এগুনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ৬ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতি কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভায় নির্বাচনের ব্যাপারে সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এখান থেকে পিছু হটার কোনো উপায় নেই। তবে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক সমঝোতা এবং নির্বাচনের জন্য অক্টোবরে বেশ কিছু চমক দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে আনার জন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব দেবেন এবং বেশ কিছু নাটকীয় ঘোষণা দিবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, অক্টোবরেই সরকার নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে প্রশাসনে একটা বড় ধরনের রদবদল করা হবে এবং আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদেরকেও সবুজ সংকেত দেয়া শেষ হবে। ফলে অক্টোবর মাসকে আওয়ামী লীগ একটি চমকের মাস হিসেবে চিহ্নিত করছেন। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত যাচ্ছেন। সেখানে তাঁর সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে যোগ দিবেন এবং সেই অধিবেশনেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর আলাপ আলোচনা হতে পারে। বিশেষ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

আন্তর্জাতিক অবস্থান ঠিক করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্টোবরে তাঁর নির্বাচনের কৌশল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন। এর মধ্যে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে চমক থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বেশ কিছু নাটকীয় পদক্ষেপ ঘোষণা করবেন। আর এই সমস্ত ঘোষণার মধ্য দিয়েই দেশকে আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭