ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইমরান খানের বর্তমান বেহাল দশার পেছনে মূল ষড়যন্ত্রকারী যুক্তরাষ্ট্র


প্রকাশ: 10/08/2023


Thumbnail

ইমরান খানকে অপসারণের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র-ই চাপ প্রয়োগ করেছিল বলে জানা গেছে। নথি অনুযায়ী গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনের সংঘাতের বিষয়ে পাকিস্তানের নিরপেক্ষতার কারণেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ চাপ প্রয়োগ করে।

একটি পাকিস্তানি সামরিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ‘দ্য ইন্টারসেপ্ট’ গত বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে। এতে বলা হয় গত ৭ মার্চ, ২০২২ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এবং মার্কিন বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে এক বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হয়।

এ বৈঠকে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘ডোনাল্ড লু’ তার পাকিস্তানি প্রতিপক্ষকে সতর্ক করে বলেন, পাকিস্তান কেন ইউক্রেনের বিষয়ে এমন আক্রমণাত্মক নিরপেক্ষ অবস্থান নিচ্ছে তা নিয়ে এখানে এবং ইউরোপের লোকেরা বেশ উদ্বিগ্ন”। এই আপত্তিকর নীতির জন্য তিনি একা পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে দোষারোপ করেন।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত ‘আসাদ মাজিদ খান’ এই বক্তব্যকে সংশোধন করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি দাবী করেন, ইউক্রেনের বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট রয়েছে।

এ সময় পাল্টা দাবিতে ‘লু’ এটিকে প্রধানমন্ত্রীর আচরণগত সমস্যা বলে উল্লেখ করে বলেন, "যদি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হয় সফল হয়, তবে ওয়াশিংটনে সবাইকে ক্ষমা করা হবে। অন্যথায়, আমি মনে করি সামনে এগিয়ে যাওয়া কঠিন হবে," তিনি হুমকি দিয়ে বলেন যে "প্রধানমন্ত্রীর অপসারণে" ইউরোপ মার্কিন নেতৃত্বকে অনুসরণ করবে।

রাষ্ট্রদূত খানের নোটে হুমকিটি যে সরাসরি হোয়াইট হাউস থেকেই এসেছিল এবং একটি শক্তিশালী কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ারই প্রতিফলন ছিল এটি বোঝা যায়।

এ কারণে গত এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অপসারিত হওয়ার পর ‘আসাদ মাজিদ খান’ এ অপসারণের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকেই ইঙ্গিত করেছিলেন, কারণ ‘লু’ যেমনটা বলেছিলেন সেটাই হয়েছে।

পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ‘শেহবাজ শরীফ’ এর কিছুটা স্বীকার করলেও খানের দাবির বিষয়টি নিশ্চিত করা থেকে বিরত ছিলেন।

তবে ওয়াশিংটন, ইমরান খানকে অপসারণের জন্য ইসলামাবাদকে চাপ দেওয়ার এ বিষয়টি স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে।

যদিও ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরপরই, পাকিস্তান ইউক্রেনের প্রতি তার নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে নেয়। তারা কিয়েভে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র সরবরাহ করে এবং ওয়াশিংটনের প্রতি তার আনুগত্যও প্রদর্শন করে।  সামরিক বাহিনীকে "যৌথ অনুশীলন, অপারেশন, প্রশিক্ষণ, ঘাঁটি এবং সরঞ্জাম" কভার করে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল।

যদিও বিভিন্ন জরিপ বলে যে ইমরান খান সহজেই একটি নির্বাচনে জয়ী হবেন যদি তাকে আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে তাকে দুর্নীতির অভিযোগে গত সপ্তাহে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়, যা তাকে এই বছর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেয়।

তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের অপমান করা থেকে শুরু করে সন্ত্রাস পর্যন্ত অসংখ্য অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া গত মাসে ঘোষণা করা হয়েছিল যে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের নথিপত্রের বিষয়বস্তু প্রকাশ করার জন্য তাকে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে বিচার করা হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭