ইনসাইড থট

ইন্দো-প্যাসিফিকে নতুন আধিপত্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/03/2018


Thumbnail

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। অঞ্চলটি শুধু পৃথিবীর দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিরই নয়, দ্রুত বর্ধনশীল সামরিক ব্যয় ও নৌ সক্ষমতা বৃদ্ধির অঞ্চলও বটে। এছাড়া এই অঞ্চলে চলছে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের তীব্র প্রতিযোগিতা। অনেকে মতে, এই অঞ্চলেই নিহিত আছে বৈশ্বিক নিরাপত্তার চাবিকাঠি।

ইন্দো-প্যাসিফিক কথাটি এশিয়া-প্যাসিফিক থেকে ভিন্ন কারণ এর মাধ্যমে মাধ্যমে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে লাগোয়া দেশগুলোকে বুঝানো হয়েছে। আর এই সমুদ্রিক অঞ্চলই বর্তমান বিশ্বের উত্তেজনার অন্যতম কারণ। এশিয়ার সাগরগুলোতে সম্পদ আহরণ ও প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি তীব্র ভাবেই বেড়েছে। এটি পরিস্কার ভাবেই বোঝা যাচ্ছে ভবিষ্যতের আঞ্চলিক সংকট হবে সাগরকে কেন্দ্র করেই।

পরিবর্তনের পথে প্রধানতম চালকের স্থানে আছে চীন, যারা গত পাঁচ বছরে নিজেদের সমুদ্রসীমা আন্তর্জাতিক জলসীমার বাইরে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অবিরত। আর এমনটি করার ক্ষেত্রে তাঁদের প্রচেষ্টার ফসল হলো কৃত্রিম দ্বীপ। এটি সামরিকীকরণের মধ্যে দিয়েই বাকি পৃথিবীর কাছে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে চীন। আর এরই মধ্যে দেশটি ভারত সাগরের দিকেও নজর দিয়েছে।

এরই মধ্যে জিবুতিতে দেশের বাইরের প্রথম সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে চীন। আর জিবুতি সরকার দুবাইভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তাদের প্রধান সমুদ্র বন্দরটির নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে নিচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব চীনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এছাড়া চীন নিয়ন্ত্রিত পাকিস্তানের গদর বন্দরেও নিজেদের একটি নৌ-ঘাঁটির পরিকল্পনা করছে তারা। এর বাইরে মালদ্বীপের কয়েকটি সংঘাতপূর্ণ দ্বীপের লিজ নিয়েছে চীন। দ্বীপগুলোতে সমুদ্র পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপনের কথা ভাবছে তারা। এর মাধ্যমে ভারত মহাসাগরে থাকা পারমাণবিক শক্তিতে চলা সাবমেরিন এবং পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী সাবমেরিন উভয় ধরনের ডুবোযান সম্পর্কেই তথ্য পাবে চীন।

সংক্ষেপে বলতে গেলে, গত পাঁচ বছরে সমুদ্রে প্রভাবিস্তারের দৃশ্যপট পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে চীন। আঞ্চলিক ও সামুদ্রিক আধিপত্যে অন্য কোনো দেশ এগিয়ে না এলে চীন আগামী পাঁচ বছরে কৌশলগত সুবিধাদি আরও বাড়াতে পারবে। যার ফলে একটি সময় বৈশ্বিক বাজার ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায় ব্যাপক ঝুঁকি দেখা দেবে। এই আশঙ্কা কমাতে হলে ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোকে এগিয়ে এসেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের দুই মিত্র দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মধ্যেকার সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে অতীত ইতিহাস। সমুদ্রে প্রভাব বিস্তার ও সামরিকীকরণের ক্ষেত্রে চীন নিজের স্বার্থেই ইতিহাসকে ব্যবহার করছে। চীন অনুসরণ করছে প্রতিদ্বন্দ্বী জাপানের ১৯৪৫ সালের পূর্বের কলোনিয়াল ব্যবস্থার। প্রতিবেশী ১১ দেশের সঙ্গে চীনের সীমানা নিয়ে বিরোধ অধিংকাংশই ঐতিহাসিক দাবির কারণে, আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে নয়।

[সংক্ষেপিত]

সূত্র: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট, লেখক: ব্রহ্ম চেলানি, নয়া দিল্লি ভিত্তিক সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের শিক্ষক এবং বার্লিনের বরার্ট বোস অ্যাকাডেমির সম্মানিত ফেলো। আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একাধিক বই লিখেছেন।


বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭