ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী করাতেও আপত্তি নেই বিএনপির!


প্রকাশ: 11/08/2023


Thumbnail

বিএনপি এখন এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। আজ এক দফা দাবিতে বিএনপি নেতারা ঢাকায় পদযাত্রা করেছেন। দুটি পদযাত্রার মধ্যে একটিতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যটিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আর এই পদযাত্রার শুরুতে ভাষণে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দাবি একটাই তা হলো শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। এই পদযাত্রার আগে বিএনপি নেতারা কূটনীতিকদের সাথে অন্তত তিন দফা বৈঠক করেছিলেন। এর মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের বাসভবনে। তার বাসভবনে অনুষ্ঠিত নৈশভোজের বৈঠকে বিএনপির থিঙ্কট্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত ড. আসিফ নজরুল সহ কয়েকজন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী উপস্থিত ছিলেন। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে ওই বৈঠকে সাংবিধানিক কাঠামোর আগে কিভাবে একটি নির্বাচনের পথ তৈরি করা যায় এ নিয়ে কূটনীতিকদের সাথে বিএনপির বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছে। বিএনপি নেতারা ওই বৈঠকে বলেছেন, তাদের আপত্তি একমাত্র শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে থেকে যদি কাউকে প্রধানমন্ত্রী করা হয় তাহলেও তাতে কোনো আপত্তি থাকবে না বিএনপির এমন কথাটি বলেছেন ওই বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। এই সময় বিদেশি কূটনীতিকরা বিএনপির থিঙ্কট্যাঙ্ক এবং আইনের শিক্ষক ড. আসিফ নজরুলের কাছে জানতে চান এরকম পদ্ধতি করলে তা সংবিধানের আওতায় হবে কিনা। আসিফ নজরুল এই প্রশ্নের ইতিবাচক উত্তর দেন। তিনি বলেন, সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মধ্য থেকে যে কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। 

সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির একমাত্র আপত্তি শেখ হাসিনা। আর বিএনপির নেতারা বলছেন এটি একটি কৌশলগত অবস্থান। যদি তারা শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে থেকে অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেন সেটির আওয়ামী লীগের মধ্যে একদিকে যেমন অবিশ্বাস তৈরি করবে, আওয়ামী লীগের মধ্যে সন্দেহ বাড়িয়ে দিবে পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেই আওয়ামী লীগের নৈতিক অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে তাদের মনোবল ভেঙে যাবে। এই জন্যই তারা কৌশলগতভাবে শুধুমাত্র শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি করছেন। 

উল্লেখ্য, কূটনীতিকদের এই সাথে নৈশভোজে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা জানতে চেয়েছিলেন যে, শেখ হাসিনার বাইরে তারা কাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। এর উত্তরে বিএনপি নেতারা বলেছেন একাধিক ব্যক্তি আওয়ামী লীগে আছে যারা প্রধানমন্ত্রী হলে তাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। এক্ষেত্রে তারা আওয়ামী লীগের নেতা তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু এমনকি স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর নাম উল্লেখ করেছেন। তবে বিএনপি নেতারা বলেছেন, এটি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হতে হবে। তবে কূটনীতিকরা এখন পর্যন্ত এ বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের কারো সাথে কোনো কথা বলেননি। এমনকি বিএনপির পক্ষ থেকেও কেবল রাজপথের বক্তৃতায় শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয় এমনটি বলা হচ্ছে। তারা এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনার অধীনে আওয়ামী লীগ দলীয় কাউকে প্রধানমন্ত্রী করা যাবে এমন কোনো কথাই বলেনি। তারা কৌশলগত কারণে এটা করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কূটনৈতিক মহল এই প্রস্তাবটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। 

কূটনীতিকরা মনে করছেন যে, যেহেতু আওয়ামী লীগের বক্তব্য বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচন করা। কাজই বর্তমান সংবিধানের অধীনে যেকোনো সম্মানজনক সমাধানের যে কোন পথ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে আওয়ামী লীগের একজন নেতা এই ধরনের প্রস্তাবকে উদ্ভট দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, সংবিধানে সুস্পষ্ট বলা আছে যে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের আস্থা ভজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হবেন। কাজেই এক্ষেত্রে অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী করার কোন সুযোগই নেই। তাছাড়া এই সমস্ত উদ্ভট প্রস্তাবগুলো বিএনপির ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭