ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকে নিয়ে তৃণমূলে সন্দেহ-ক্ষোভ


প্রকাশ: 12/08/2023


Thumbnail

বিরোধী দলের আন্দোলন যত বেগবান হচ্ছে তত আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বাড়ছে। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে এমপি এবং প্রভাবশালী মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ এবং অনাস্থা জানানো হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সভাপতি সামনেই ৪৩ জন তৃণমূল নেতা এমপিদের তুলো ধুনো করেন। তারা বলেন, কোন কোন এমপি নিজেদেরকে শেখ হাসিনার চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ মনে করে। তারা ভাবে, তারা বঙ্গবন্ধু কন্যার চেয়েও জনপ্রিয়। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগকে তারা বিভক্ত করেছে। অনেক তৃণমূল নেতা এটাও বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের পরিবর্তে এখন ‘মাই লীগ’ প্রতিষ্ঠা করার কাজে ব্যস্ত অনেক এমপি। তবে শুধু এমপিদের বিরুদ্ধে নয়, রাজপথে এখন পাল্টা কর্মসূচিতে ব্যস্ত আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী এবং নেতারা মনে করছেন যে, কিছু কিছু নেতার নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ এবং তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে আওয়ামী লীগ যথাযথভাবে জনগণের কাছে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারছে না এবং যথাযথভাবে জনগণকে সঠিক বার্তাটাও দিতে পারছে না। 

আওয়ামী লীগের তৃণমূলের একজন নেতা বলেছেন, বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে দেখা যাচ্ছে যে, সব স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকছেন এবং এই সমস্ত কর্মসূচিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও লক্ষণীয়। অথচ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি আরাম আয়েশে বসে আছেন। তাদেরকে কোনো কর্মসূচিতে পাওয়া যায় না। 

দলটির একজন জেলা পর্যায়ের নেতা বলেছেন, আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পদ হল প্রেসিডিয়াম সদস্য। কয়জন প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজ করছেন সেটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি নাম ধরে কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের কথা বলেন যে সমস্ত প্রেসিডিয়াম সদস্যরা ভূমিকাহীন। তাদেরকে না দেখা যাচ্ছে কোনো কর্মসূচিতে, না তারা কোনো বক্তব্য রাখছেন। এ ধরনের প্রেসিডিয়াম সদস্য থাকার চেয়েও না থাকা ভালো। 

শুধু প্রেসিডিয়াম সদস্যদের নিয়ে নয়, আওয়ামী লীগের বর্তমানে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসা অনেককে নিয়েই আওয়ামী লীগের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন স্থানীয় পর্যায়ের নেতা বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখন বিদেশীদের সাথে দেখা করেন তখন কিছু কিছু উদয় হওয়া নেতাকে দেখা যায়। এই সমস্ত নেতাদের ভূমিকা কি? তাদেরকে কখনো রাজপথে দেখা যায় না। তারা সভা-সমাবেশে থাকে না কিন্তু ঠিকই তারা দূতাবাসগুলোতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলে। দূতাবাসে এই সমস্ত নেতাদের কাজ কি—এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 

আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতাই মনে করেন, এখন রাজপথে সরব হতে হবে। বিএনপি প্রমাণ করতে চাইছে যে, রাজপথে তারা শক্তিশালী। কিন্তু এটা কখনোই বাস্তবতা নয়। বরং বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা এবং রাজপথের শক্তি অনেক বেশি। কিন্তু কেন্দ্রীয় কিছু কিছু নেতার নিষ্ক্রিয়তা আর কিছু হাইব্রিড নব্য নেতার অর্বাচীন আচার আচরণের কারণে আওয়ামী লীগ রাজপথে আসল শক্তি দেখাতে পারছেন না। নেতারা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন না, কর্মীদের সঙ্গে নেতাদের এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এরকম একটি বাস্তবতায় তৃণমূলের কর্মীরা মনে করে যে, আওয়ামী লীগের নেতাদের এখনই দায়িত্ববান হতে হবে। তাদের রাস্তায় নামতে হবে এবং কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭