ইনসাইড পলিটিক্স

কার হাতে বন্দী বেগম খালেদা জিয়া?


প্রকাশ: 12/08/2023


Thumbnail

যখনই বিএনপির আন্দোলন তীব্র হয় এবং বেগম খালেদা জিয়ার তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়, তখনই বেগম জিয়াকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন, এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তাহলে কি বিএনপিরই কেউ কেউ বিশেষ করে তারেক রহমান তার মাকে হাসপাতালে নিয়ে বন্দি করে রাখেন? তিনি যেন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখতে না পারেন, এই কারণে?- এই প্রশ্নটিই এখন বিএনপির মধ্যে বেশ জোরালোভাবে উত্থাপিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি এক দফা আন্দোলন ঘোষণা করেছে। এক দফা আদায়ের লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। আর এই কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রায়ই বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া তাকে আন্দোলনের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছিলেন। 

বেগম জিয়ার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ এবং কথা বলার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উত্তরার বাসা ছেড়ে ফিরোজার পাশে একটি বাসা নিয়েছেন এবং সেখানেই তিনি এখন অবস্থান করছেন। এর প্রধান লক্ষ্য হলো, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আন্দোলনের ব্যাপারে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ এবং পরামর্শ গ্রহণ করা। কিন্তু লন্ডনে পলাতক বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এটা পছন্দ করেননি বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আর এই পছন্দ না করার জন্যই বেগম জিয়াকে তিনি হাসপাতালে এক ধরনের বন্দিদশায় রেখেছেন- এমনটি মনে করেন বিএনপির কোনো কোনো নেতা। তারা বলছেন, এর আগেও যখন বেগম জিয়া রাজনীতিতে কিছুটা সক্রিয় হয়েছিলেন, তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে বেশ কিছুদিন রাখা হয়েছিল। হাসপাতালে থাকলে তারেক জিয়ার দুই ধরনের লাভ হয়। 

এক. বেগম জিয়ার সঙ্গে সরকারের কোনো লোকজন যোগাযোগ করতে পারেন না। কারণ হাসপাতালে সরকারি কোনো লোকজন গেলে সেটি দৃশ্যমান হবে এবং সংবাদ শিরোনাম হবে। ফিরোজায় যেটা খুব সহজেই সম্ভব। তারেক জিয়াপন্থিরা মনে করেন, সরকার ট্রাম কার্ড হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে ব্যবহার করছেন। কারণ বেগম খালেদা জিয়া তার বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পাবেন এই প্রত্যাশায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে নির্বাচন অভিমুখী করতে পারেন। এ নিয়ে বেগম জিয়ার সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন মহলের একাধিক আলাপ-আলোচনা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ কারণেই আন্দোলনকে তীব্র করতে তারেক জিয়া বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে স্থানান্তর করেছেন বলে অনেকে মনে করেন। 

দুই. আন্দোলনের গতি তীব্র হলে সরকার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে প্রেরণ করতে পারেন। তাকে যেন কারাগারে প্রেরণ না করা হয়, এজন্যই খালেদা জিয়া অসুস্থ- এটি দেখানোর জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফলে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে স্থানান্তর করা হলে, সেটি একটি অমানবিক সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে এবং জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হবে। এটি তারেক জিয়ার একটি রাজনৈতিক কৌশল। আবার কেউ কেউ মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়া সক্রিয় হলেই তারেক জিয়া বিএনপিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ে, তার প্রভাব নষ্ট হয়ে যায়, তিনি যা খুশি তাই- বিএনপিতে করতে পারেন না। এ কারণেই বেগম জিয়াকে হাসপাতালে বন্দি করে তারেক জিয়া বিএনপিতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ভোগ করতে চান। 

যেটিই হোক না কেন, বেগম খালেদা জিয়ার বারবার হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হওয়া রহস্যময়। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরাও এখন পর্যন্ত বলতে পারছেন না যে, কেন তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন? কি বিশেষ উপসর্গের কারণে তাকে হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে? বিএনপি’র একাধিক নেতা বলছেন, খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা এভারকেয়ারে গত দুই দিন  হচ্ছে, সেই চিকিৎসাই তার বাসায় হচ্ছিল। তাহলে কার হাতে বন্দী বেগম খালেদা জিয়া?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭