ইনসাইড বাংলাদেশ

শেখ হাসিনার পাল্টা কূটনীতি


প্রকাশ: 14/08/2023


Thumbnail

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি আছে চার মাস। এর মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে?- এ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের নানা রকম পরামর্শ এবং নসিহত আসছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলোদেশের নির্বাচন নিয়ে একের পর এক বিভিন্ন শর্ত আরোপ করছে। ইতিমধ্যে তারা ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অর্থ পাচার, দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছে। এ সমস্ত বিষয় মোকাবেলার জন্য পাল্টা কূটনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি গত কয়েক মাসে তাঁর বিদেশ সফর বাড়িয়েছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে তিনি যোগ দিচ্ছেন এবং সেখানে সপ্রতীভ অবস্থায় বাংলাদেশকে তুলে ধরছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প তিনি জানান দিচ্ছেন। গত কয়েক মাসে প্রধানমন্ত্রী অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দেশ সফর করেছেন। ক’দিন আগে তিনি ‘এফএও’র সম্মেলনে  যোগ দিতে ইটালি গিয়েছিলেন। তার আগে তিনি বিশ্বব্যাংকের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফর করে এসেছেন। আগামী ২২ আগস্ট তিনি ব্রিকস’র সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাবেন। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি ৮ সেপ্টেম্বর জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত সফরে যাবেন। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিবেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে। 

এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী এতো বেশি বিদেশ কেন সফর করছেন?- এই নিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রশ্নের উত্তরে কূটনীতিকরা বলছেন, অত্যন্ত যৌক্তিক কারণেই বিশ্ব বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রীও এ সফরকে বেশি করে গুরুত্ব দিচ্ছেন। কারণ হলো, বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন দেশে যে নেতিবাচক প্রচারণাগুলো হচ্ছে, বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের লবিস্টরা যে সমস্ত অসত্য, বিভ্রান্তিকর তথ্যগুলো বিভিন্ন মহলে সরবরাহ করেছে, তার বিপরীতে বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্পগুলো বলার জন্যই প্রধানমন্ত্রী বিদেশে যাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী এখন শুধুমাত্র বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি এখন বিশ্ব নেতাও বটে। এ কারণেই যেখানেই প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন, সেখানেই বাংলাদেশের উন্নয়ন গল্পটা শুনতে কূটনীতিকরা এবং বিভিন্ন দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধানরা উৎসাহী হচ্ছেন। এই সমস্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সম্পর্কে যে নেতিবাচক প্রচারণা, তার পাল্টা জবাব দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরগুলোর ফলে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে অস্পষ্টতা, তা দূর হয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর সামনের দুটি সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিকস-এ যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে এখন বেশ বড় একটি অর্থনৈতিক জোট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ব্রাজিল, ভারত, চীন, রাশিয়ার মতো উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তিগুলো একত্রিত হয়েছে এবং এর মাধ্যমে মার্কিন প্রভাব ও মার্কিন আধিপত্য মোকাবেলার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে কূটনৈতিকরা মনে করেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জি-২০ সম্মেলনেও বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন এবং এগুলোকেই কূটনীতিতে পাল্টা চাপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, যেটি দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ বিরোধী যে অপপ্রচারণা- সেটা দূর করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭