ইনসাইড বাংলাদেশ

খাল কেটে কুমির আনছে সরকার?


প্রকাশ: 14/08/2023


Thumbnail

মার্কিন দু’জন কংগ্রেসম্যান চার দিনের সফরে এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। আজ তারা রোহিঙ্গা এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। মার্কিন কংগ্রেসম্যান রিচার্ড ম্যাককরমিক এবং এড কেইস গতকাল বাংলাদেশে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে তারা বৈঠক করেছেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথেও বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। এই বৈঠকগুলো থেকে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের সমঝোতার কোনো পথ আছে কি না, সেটা খুঁজে বের করার জন্য- সে ব্যাপারে তারা বিভিন্ন প্রশ্ন  করেছেন। তবে তাদের সবচেয়ে আগ্রহের বিষয় ছিল চীনের সঙ্গে সম্পর্ক এবং বাংলাদেশ যেন চীনের প্রলোভনে পা না দেয়- এই বক্তব্যটি দুই কংগ্রেসম্যানের কাছ থেকে ওঠে এসেছে। 

বিভিন্ন সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে, এই দুই কংগ্রেসম্যানকে আনা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজেই উদ্যোগী হয়ে একজন ডেমোক্রেট এবং একজন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে নেতিবাচক প্রচারণা হচ্ছে, তার পাল্টা হিসেবেই এই দুই কংগ্রেসম্যানকে আনা হয়েছে। কিন্তু তাদের আনার ফলাফল হিতে বিপরীত হলো কি না, সরকার খাল কেটে কুমির আনলো কি না?- এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। 

প্রথমত, তারা যে রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে চা-চক্রে মিলিত হয়েছিলেন, সেই বৈঠকে বিএনপি থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা আসেননি। বরং তৃতীয় শ্রেণীর নেতা পাঠিয়ে বিএনপি এ ধরনের বৈঠককে তাৎপর্যহীন করে তুলেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও যারা গিয়েছিলেন, তারাও তেমন গুরুত্বপূর্ণ কেউ ছিলেন না। ফলে বৈঠকের মাধ্যমে রাজনীতির সঙ্কট সমাধানে কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি হবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এই দুই কংগ্রেসম্যান সুশীল সমাজের সাথে যে বৈঠক করেছিলেন, সেখানে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন মূলত সরকারের বিপক্ষে অবস্থানকারী সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাই এবং এই বৈঠকের ফলে তারা উল্টো আরও একটি নেতিবাচক ধারণাই পেয়েছেন, বিশেষ করে বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যানকে নেতিবাচক ধারণাই দিয়েছেন।

কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যান নি:সন্দেহে তাদের রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন এবং বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত তাদেরকে কিছু ধারণা দিয়েছেন। আর এই ধারণাগুলোর ফলে দুই কংগ্রেসম্যান যে উদ্দেশ্যে এসেছিলেন, সে উদ্দেশ্য কতটা সফল হবে- তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভূমিকা রাখে, এফবিআই ভূমিকা রাখে, সিআইএ ভূমিকা রাখে, প্যান্টাগন ভূমিকা রাখে, হোয়াইট হাউজ ভূমিকা রাখে। একজন বা দুজন কংগ্রেসম্যান লবিং করতে পারেন বটে, কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টাতে পারেন না। বাংলাদেশের ব্যাপারে যদি কোনো নেতিবাচক অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়েই থাকে, তাহলে এই দুই কংগ্রেসম্যানকে নিয়ে এসে আদৌ কি কোনো লাভ হবে? নাকি এই দুই কংগ্রেসম্যান এসে দেখলেন, সরকার যে কথাগুলো বলছে, বাস্তবের সঙ্গে তার মিল নেই। এর ফলে কি খাল কেটে কুমির আনা হলো না?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭