ইনসাইড পলিটিক্স

চাঁদে সাঈদী, মৃত্যুর সময় ভূমিকম্প: জামাতি তাণ্ডব ও প্রতারণা


প্রকাশ: 16/08/2023


Thumbnail

জামায়াত ইসলামের নেতা যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন ১৪ আগস্ট। রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তার মৃত্যুর পর জামাতিরা স্বভাবসুলভ তাণ্ডব চালায়। পুরো শাহবাগ এলাকায় এক নারকীয়তা শুরু করে, ইচ্ছেমতো গাড়ি ভাঙচুর করে। জামায়াত যে একটি ফ্যাসিস্ট এবং সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল সেটি তারা আবার প্রমাণ করে। আর এটি প্রমাণ করেই জামায়াত ক্ষান্ত হয়নি। জামায়াতের আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো যে তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রতারণা করে এবং অবাস্তব কিছু অলৌকিক কথা বার্তা ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। 

পাঠকদের নিশ্চিয় মনে আছে ২০১৩ সালের কথা। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধের দায়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বা দেলু রাজাকারকে দণ্ডিত করে এবং তার মৃত্যুদণ্ড সাজার ঘোষণা দেয়। এরপর জামায়াত যথারীতি তাণ্ডব শুরু করে। আর এই তাণ্ডব যখন তেমন হালে পানি পাচ্ছিল না তখন দেলু রাজাকারের পক্ষ থেকে নতুন তথ্য উপস্থাপন করা হয়। ২ মার্চ রাতে জামায়াত মধ্যযুগীয় প্রতারণা এবং অলৌকিকতার আশ্রয় নেয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয় চাঁদে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে দেখা গেছে। এই বার্তা দিয়ে একেবারে প্রান্তিক অসচেতন অজ্ঞ জনগণকে তারা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে কিছুটা সফল হয়। চাঁদে সাঈদীর দর্শনের ভুয়া খবর দিয়ে তারা জনগণকে রাস্তায় নামায়, উন্মুক্ত জনগণ ভাঙচুর করে। সেই ঘটনায় সারাদেশে ২১ জন লোক মারা গিয়েছিল। জামায়াত কি ২১ জনের মৃত্যুর দায় নেবে? জামায়াত যে ফ্যাসিস্ট এবং এই ফ্যাসিজম করতে গিয়েই জামায়াত যে প্রতারণার আশ্রয় নেয় তার বড় প্রমাণ এটি। এই প্রতারণা সাঈদীর মৃত্যুর সময়ও অব্যাহত ছিল। সাঈদী মারা যায় ৮: ৪০ মিনিটে। বিএসএমএমইউ হাসপাতাল থেকে এই রেকর্ড তথ্য পাওয়া যায়। আর ওই দিনই কাকতালীয়ভাবে সিলেট অঞ্চলে ৫:২ মাত্রায় একটি ভূকম্পন অনুভূত হয়। সারাদেশে এই ভূমিকম্পটি হয় ৮: ৪৯ মিনিটে। অর্থাৎ সাঈদীর মৃত্যুর নয় মিনিট পর। তাহলে সাঈদীর মৃত্যুর সাথে কি এই ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কোন সম্পর্ক আছে? অবশ্যই নেই। কিন্তু ধর্মান্ধ, উগ্র মৌলবাদী, প্রতারক জামায়াত এই ভূমিকম্পকেও সাঈদীর সাথে মেলানোর চেষ্টা করেছে।  

সাঈদীর মৃত্যুর সময় দেশে ভূমিকম্প হয়েছে এমন একটি বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশের ধর্মভীরু মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে সাঈদী। এ যেন ঠিক একাত্তরের কায়দায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং প্রতারণার প্রয়াস। ১৯৭১ সালেও জামায়াত এ ধরনের ভিন্ন মধ্যযুগীয় কুসংস্কার ছড়িয়ে ধর্মভীরু মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের যারা আশ্রয় দেবে তারা কেউ আর মুসলমান থাকবে না, তারা হিন্দু হয়ে যাবে এই ফতোয়া দিয়েছিল ধর্মান্ধ জামায়াতের নেতারা। যেকোনো রাজাকার, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যদি কোনো নারীকে ধর্ষণ করে সেটিও জায়েজ এমন কুৎসিত নিশংশ ফতোয়া দিয়েছিল জামায়াত। এরকম বহু ফতোয়া দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছিল, মানুষের সাথে প্রতারণা করেছিল। এই বিভ্রান্ত এবং প্রতারণা করে সারাদেশে তারা নারকীয় তাণ্ডব করেছিল, করেছিল মানবতাবিরোধী অপরাধ।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে যখন আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল দন্ড দিয়েছিল তখনও এই ‍দেলু রাজাকারের দল জামায়াত ইসলাম একই প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ধর্মভীরু মানুষকে বিভ্রান্ত করে। আর শেষে দেলু রাজাকারের মৃত্যু হল প্রতারণার মধ্য দিয়ে। যখন সে মারা গেল তখন ভূমিকম্পের গল্প সাজিয়ে দেলু রাজাকারকে মহান বানানোর চেষ্টা করা হল। যেটি জামায়াতের চিরায়িত প্রতারণারই একটি অংশ। এভাবেই জামায়াত প্রচার-প্রচারণা করে, জনগণকে বিভ্রান্ত করে ধর্মের নামে বিষবাষ্প ছড়ায় এবং তাণ্ডব করে মানুষকে নিপীড়ণ করে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭