ইনসাইড পলিটিক্স

‘বিএনপি এখন তাদের চোখের মণি’


প্রকাশ: 16/08/2023


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশি প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজ এখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে খুব উতলা হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা পছন্দ করে না বলেই তারা নির্বাচন নিয়ে খুব বেশি উতলা।

বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাৎবার্ষিকীতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশি প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের কাছে আমার প্রশ্ন ২০০১ সালের নির্বাচন সেই নির্বাচনে যখন এদেশের মানুষকে বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে অত্যাচর চলল, কত মানুষকে অত্যাচার করেছে, হাত কেটেছে, চোখ তুলে নিয়েছে, ঘর-বাড়ি জ্বালিয়েছে, তখন সে নির্বাচন নিয়ে কথা হয়নি কেন। সে নির্বাচনে তো আওয়ামী লীগের হারবার কথা ছিল না। আওয়ামী লীগকে জোর কেন হারিয়ে দেয়া হয়েছে। 

সরকার প্রধান আরও বলেন, যখন খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটার বিহীন ইলেকশন করেছিল তখন তাদের নির্বাচনী চেতনা কোথায় ছিল বা জিয়াউর রহামনের যে নির্বাচন কই তার বিরুদ্ধে তো কথা হয়নি বা জেনারেল এরশাদ ৪৮ ঘণ্টা ভোটের রেজাল্ট বন্ধ করে রেখে ফলাফল ঘোষণা করেছিল। ১৯৮৮ সালে এরশাদ যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করলো তখন তো তাদের এই উদ্বেগ দেখিনি। হঠাৎ এবার ইলেকশনের সময় তারা খুব বেশি উতলা হয়ে পড়লো। নির্বাচনের একেবারে দাঁড়ি, কমা সেমিকোলন কোথায় কি, কিভাবে হবে তাই নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ এবং একের পর এক তাদের লোকজন আসা শুরু করলো। কেন? কারণ কি? কারণ হল সেই বিএনপি এখন তাদের চোখের মণি।

তিনি বলেন, মীর জাফর বেইমানি করে তিন মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, দুই মাসের মাথায় তাকে চলে যেতে হয়েছিল। একই ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছে। মোশতাককে বিদায় আর জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় বসে। সেনাপ্রধান আবার রাষ্ট্রপতি, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালির জাতীয় জীবনে সবচেয়ে একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছিল এই ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একই সঙ্গে আমার মা, আমার তিন ভাই, কামাল-জামালের বউদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। 

তিনি আরও বলেন, ইতিহাসের এ জঘন্য ঘটনা বাংলার মাটিতে ঘটে যায়। সেই কারবালার ঘটনাকেও যেন হার মানায়। কারবালার ঘটনা শিশু-নারীদের হত্যা করা হয়নি, কিন্তু ১৫ আগস্ট শিশু-নারীদেরও তারা ছাড়েনি। 

‘আমি আর আমার ছোট বোন রেহানা মাত্র ১৫ দিন আগে ৩০ জুলাই জার্মানির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে ৩১ জুলাই আমরা সেখানে পৌঁছাই। আমরা ভাবতেও পারিনি আমাদের জীবনে এমন একটা আঘাত অপেক্ষা করছে। ১৩ তারিখে আব্বার সঙ্গে, মায়ের সঙ্গে,  সবার সঙ্গে কথা হয়। ১৫ তারিখে এ ঘটনা ঘটার পর যখন আমরা জানতে পারি, তখন সব তথ্য আমরা জানতে পারিনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, আমার আপনজন হারিয়েছি, স্বজন হারিয়েছি, বিদেশে রিফিউজি হিসেবে থাকতে হয়েছে। আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি, আমারও তো হারিয়েছি, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন বাংলাদেশে কী হারিয়েছিল? বাংলাদেশের মানুষ কী হারিয়েছিল?  

‘আমার বাবা সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এদেশে মানুষের জন্য। মানুষের কথাই বেশি ভাবতেন। তিনিতো ভালোবেসেছিলেন মানুষকে। এদেশে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবেন। তাদের সুখী জীবন দেবেন। অন্য, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাদের উন্নত জীবন দেবে। সেটাইতো তার জীবনের একমাত্র সাধন, সংগ্রাম। কাজে তিনি নিজের জীবনকে সেভাবে উৎসর্গ করে গেছেন। বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলেছেন।’

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য তারানা হালিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক  সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭