প্রকাশ: 17/08/2023
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওয়েবসাইট থেকে তথ্য চুরি করে নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মচারীদের কাছ থেকে দুদকের নামে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেয়া চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি লালবাগ বিভাগ। গত ১৪ আগস্ট রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার
ব্যক্তিরা হলেন- মো. সেলিম ওরফে
তানভীর ইসলাম ওরফে শফিকুর রহমান
(৩৯), সোহাগ পাটোয়ারী (৩৮), আব্দুল হাই
সোহাগ (৩৮) ও আজমীর
হোসেন (৩৭)।
গ্রেপ্তারের
সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার
কাজে ব্যবহৃত ৭টি মোবাইল ফোন,
১০টি সিম, বাংলা টিভি
৭১ -এর কর্ডলেস মাউথ
পিস, পত্রিকা, মানবাধিকার কমিশন ও দুর্নীতি দমন
কমিশনের ৭টি ভুয়া আইডি
কার্ড, দুদক থেকে বিভিন্ন
ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের ১২টি প্রতিবেদন এবং
বিভিন্ন ব্যক্তির ফোন নম্বর লেখা
৩টি নোটবুক জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার
(১৭ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে
এ তথ্য জানান ডিএমপির
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার আ্যন্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর)
খোন্দকার নুরুন্নবী।
তিনি
বলেন, দুদকের নামে ঘুষ গ্রহণ
ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক সৈয়দ
নজরুল ইসলাম রমনা থানায় গত
১৩ আগস্ট মামলা করেন। এর পরদিন যাত্রাবাড়ী,
মুগদা ও এয়ারপোর্ট এলাকায়
ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে দুদকের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নামে অভিযোগ নিষ্পত্তির
আশ্বাসে ঘুষ হিসেবে টাকা
হাতিয়ে নেয়া চক্রের চারজনকে
গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, কোন ব্যক্তি হঠাৎ
করে সম্পদশালী হলে তাদের সম্পর্কে
খোঁজ-খবর নিয়ে এবং
মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের বিরুদ্ধে
দুদক বরাবর ভূয়া অভিযোগ তৈরি
করে, অভিযোগ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে তাদের কাছে পাঠিয়ে মোটা
অংকের অর্থ দাবি ও
আদায় করে ভুয়া তদন্ত
রিপোর্ট তৈরি করে তাদেরকে
ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পাঠাতো।
গ্রেপ্তারকৃতদের
মধ্যে আসামি সেলিম একসময়
রড মিস্ত্রির কাজ করতেন। পরে নির্মাণ কাজের
ঠিকাদার ছিলেন। বর্তমানে দুদকের প্রধান কার্যালয়, বিভিন্ন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের
নামে বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের
কর্মকর্তা/কর্মচারী, হিসাব রক্ষক, সার্ভেয়ারদেরকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে
ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়াই
তার কাজ।
আসামি
সোহাগ পাটোয়ারী একসময় ম্যানেজমেন্ট এবং ডিজে পার্টিতে
কাজ করতো। সেই থেকে বিভিন্ন
মেয়েছেলে এবং দালালদের সাথে
তার নানা রকম সখ্যতা
গড়ে ওঠে। দুদকের ওয়েবসাইট
থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিদের নামে গঠন করা
অভিযোগ, অভিযোগ থেকে দায় মুক্তি
সংক্রান্ত চিঠি ডাউনলোড করে
সে পাঠাতো প্রতারক সেলিমের কাছে। তাছাড়া টার্গেট করা প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তিদের
নামে দুর্নীতির অভিযোগের চিঠি বানিয়েও পাঠাতো।
সেলিম
এভাবে প্রাপ্ত ব্যক্তিদের মোবাইল নাম্বার গ্রেপ্তার প্রতারক আব্দুল হাই ও আজমির
হোসেনকে দিয়ে সংগ্রহ করাতো।
তারপর দুদকের কমিশনার, মহাপরিচালক, পরিচালক ও উপপরিচালকদের নাম
ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে
নিতো। প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ করতো বলে
তারা ৮০ হাজার থেকে
তিন লাখ টাকা করে
বিভিন্ন জনের কাছ থেকে
হাতিয়ে নিতো।
এক্ষেত্রে
তারা দুদক কার্যালয়ের সামনে
অথবা সেগুনবাগিচাসহ নাট্য মঞ্চ এলাকার আশপাশে
টার্গেট ব্যক্তিদেরকে আসতে বলে ক্যাশ
অথবা নগদ ফাইন্যান্সিয়াল ব্যাংকিং
এর মাধ্যমে টাকাগুলো হাতিয়ে নিতো।
প্রাথমিক
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা লাখ লাখ টাকা
ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে স্বীকার করেছে।
এভাবে তারা এক বছরে
কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে
নিয়েছে। মাদকাসক্ত এবং অসামাজিক কাজে
অভ্যস্ত আসামিরা মুহূর্তেই টাকা খরচ করে
নতুন প্রতারণায় হাত দিতো। আসামিরা
বর্তমানে রিমান্ডে আছে।
সাংবাদিকদের
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন
পর্যন্ত এই চক্রের সঙ্গে
দুদকের কোন কর্মকর্তা কর্মচারীর
সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭